বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
সরকারি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস মহামারীতে মৃতের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে, যা একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জানা মৃতের ঘটনা। কিন্তু নিউইয়র্ক টাইমস ডাটাবেজ অনুসারে সংশ্লিষ্ট সরকারি এজেন্সিগুলোতে বহু মৃতের খবর পৌছেনি, বিশেষত যারা হাসপাতালের বাইরে নিজ বাড়িতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে, সেই হারও উল্লেখযোগ্য, যা সরকারি হিসেবে যোগ হয়নি।
বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এবং যেসব মৃতের হিসাব সরকারি হিসেবে যুক্ত হয়নি, তা কীভাবে যোগ করা সম্ভব তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বোস্টনের একটি পাবলিক রেডিও স্টেশনের সঙ্গে আলোচনাকালে বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান মেডিকেল উপদেষ্টা ডা: অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, গত দুই বছর যাবত আমরা যে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছি, আশা করি সেই শোচনীয় পরিস্থিতি আমাদেরকে আর মোকাবেলা করতে হবে না, কিন্তু আমাদের সবসময় সতর্ক থাকার শিক্ষা দিয়ে গেছে কোভিড ১৯। তিনি বলেন, এখনও আমরা কোভিড ১৯ পরিস্থিতি পুরো কাটিয়ে ঊঠতে পারিনি, একাধিক সাব-ভেরিয়েন্ট এখনও সক্রিয়ভাবে সংক্রমণের কারণ হয়ে আছে। তবে ভ্যাকসিন গ্রহণ ভাইরাসের কার্যকারিতাকে বহুলাংশে কমিয়ে দিয়েছে এটিই সবচেয়ে বড় আশার কথা।
২০২০ সালের মার্চে যখন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে তখন প্রাথমকিভাবে ধারা করা হয়েছিল যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এক ১০০,০০০ থেকে সর্বোর্চ্চ ২৪০,০০০ লোক মারা যেতে পাওে যদিও সরকারিভাবে সতর্ক করা হয়েছিল যে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু মে মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা ১০০,০০০ এ পৌছৈ এবং কয়েক মাস পর সেপ্টেম্বরের মধ্যে মৃতের সংখ্যা ২০০,০০০ এ উন্নীত হয়।
বিশ্বের বিত্তশালী দেশগুলোর মধ্যে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ হার ছিল সবচেয়ে বেশি এবং এ ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে অর্থনৈতিক অসমতায় নিচের দিকে থাকা মানুষ এবং রাজনৈতিক বিভাজনের দিক থেকে ভাইরাস প্রতিরোধী বিধিব্যবস্থা অনুসরণে অনিচ্ছুক ব্যক্তিগণ। এছাড়া করোনা বিস্তারের জন্য অনেকে দায়ী করেছেন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার নাজুক অবস্থা ও স্বাস্থ্য নীতির মধ্যে অসামঞ্জস্য ও অসঙ্গতিকে। যদিও কোভিড সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রাণহানির অন্যতম কারণ হিসেবে ছিল, তা সত্বেও সমাজে দীর্ঘকাল ধরে বিরাজমান অসমতা আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেনির ওপর বড় আঘাত হিসেবে এসেছে, কারণ অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক দুরবস্থায় থাকা মানুষের মধ্যে ভাইরাস হোক বা অন্য যেকোনো রোগ প্রতিরোধী সক্ষমতা কম থাকে। কারল তারা কোনো না কোনোভাবে অপুষ্টিতে ভোগে, স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা কম লাভ করে, অস্বাস্থ্যকর আবাসনে থাকতে বাধ্য হয়।
করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মৃতের সংখ্যা তুঙ্গে উঠে এবং যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক গড় মৃত্যু হার ৩,৩০০ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ২০২১ এর সামারে নতুন করে আসে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এবং এরপর গত শীতে আসে ওমিক্রন। এই দুটি ভাইরাসে দ্রুত সংক্রমনশীলতায় চলতি মাসের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে সংক্রমন হার যেমন বৃদ্ধি পায়, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃতের হারও আবার বেড়ে যায়। তখন যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক ২,৫০০ জন করে করোনা আক্রান্ত রোগী মারা যাচ্ছিল।
সংক্রমন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। গত বহস্পতিবারের হিসেবে এখনো মৃতের দৈনিক গড় ৩০০’র বেশি। পাঁচ বছরের শিশু থেকে সকলের জন্য ভ্যাকসিন সহজে লভ্য। তা সত্বেও বহু লোক এখ নপর্যন্ত ভ্যাকসিন নেয়নি এবং সেন্টারস ফর ডিজিজ এন্ড প্রিভেনশনের মতে যুক্তরাষ্ট্রে এখনও ৭০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনের প্রথম বুষ্টার ডোজ নেয়নি। ওমিক্রন সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে নিশ্চিত করোনা আক্রান্তের দৈনিক গড় এক লাখ অতিক্রম করেছে, হাসপাতালে সেদিন ভর্তি ছিল ২৩,৮০০ করোনা রোগী, যা দুই সপ্তাহ আগের পরিসংখ্যানের চেয়ে ৩১ শতাংশ বেশি।
Posted ৬:২২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh