বিশ্বে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে প্রাণীর শরীরে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ডিয়েগো চিড়িয়াখানায় চারটি ওরাংওটাং ও পাঁচটি বোনোবোসকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স।

৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গরিলা প্রজাতির মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।

রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, যে চারটি ওরাংওটাংকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে কারেন নামে সুমাত্রা থেকে আসা ২৮ বছরের একটি নারী ওরাংওটাং রয়েছে। ১৯৯৪ সালে কারেনের হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। কারেনই ছিল প্রথম ওরাংওটাং, যার এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়। সে সময় কারেন সংবাদমাধ্যমের শিরোনামও হয়।

চিড়িয়াখানার মুখপাত্র ডার্লা ডেভিস ই-মেইলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, নয়টি প্রাণীকে পরীক্ষামূলকভাবে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই ভ্যাকসিন কুকুর ও বিড়ালদের জন্য প্রস্তুত করা হয়। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ওরাংওটাং ও বোনোবোসগুলো ভালো আছে। তাদের শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

এর আগে, সান ডিয়েগো চিড়িয়াখানার সাফারি পার্কে এ বছরের জানুয়ারি মাসে আটটি গরিলার মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে ৪৮ বছর বয়সী উইন্সটন নামের একটি পুরুষ গরিলা নিউমোনিয়া ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিল। চিড়িয়াখানার মুখপাত্র ডেভিস জানান, গরিলাটি এখন সুস্থ হয়ে উঠছে। উইন্সটনকে সে সময় বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। তার শরীরে প্রাণীর শরীরের উপযোগী করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডিও প্রয়োগ করা হয়।

পশুচিকিৎসকদের ধারণা, গরিলাগুলোর শরীরে এর মধ্যেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এ কারণে তাদের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি।

পশু ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জোয়েটিস এই টিকার উন্নয়নকাজ করেছে। সান ডিয়াগো ওয়াইল্ডলাইফ অ্যালায়েন্সের বন্য প্রাণীবিষয়ক কর্মকর্তা নাদিন লামবারস্কি জানান, এর আগেও এ ধরনের প্রাণীকে ফ্লু ও হামের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিশ্বে এই প্রথম মানুষের বাইরে অন্য কোনো প্রাণীকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হলো।