বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
অনেক সময় পুলিশ সন্দেজনকভাবে কাউকে আটক করে এবং তাদের নজরদারি ব্যবস্থার ডাটাবেজ ব্যবহার করে আটককৃতের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত বের করার চেষ্টা করে। গত শুক্রবার ম্যানহাটানের একটি ফেডারেল কোর্ট এ সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে যে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কাউকে আটক করার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক করার কারণ অনুসন্ধান করতে পারবে না।
নিউইয়র্ক পুলিশ প্রায়ই লোকজনকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করে যে তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র থাকতে পারে অথবা তারা কোনো অপরাধ ঘটাতে পারে। কিন্তু আদালত আদেশ দিয়েছে যে পুলিশ যদি এভাবে কাউকে এমনকি থামায়, তাহলে সেক্ষেত্রে তারা তাদেরকে শুধু তাকে থামানোর কারণ সম্পর্কিত প্রশ্ন করতে পারবে। তাকে থামানোর কারণ যদি প্রশ্নোত্তরের মধ্য দিয়ে নিস্পত্তি হয়ে যায় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যক্তিকে পুলিশ আর আটক করতে পারবে না।
ফেডারেল কোর্টের গত শুক্রবারের সিদ্ধান্তে আগে পুলিশ অফিসারা কারো বিরুদ্ধে অপরাধ ঘটানোর কোনো প্রমাণ না থাকলেও তাকে আটক করতে পারতো এবং এরপর তাদের ডিজিটাল ডাটাবেজ ঘেঁটে তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের রেকর্ড আছে কিনা তা যাচাই করতো। কোনো প্রমাণ না পেলে তাকে পুলিশ মুক্তি দিত। উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক পুলিশ যে পদ্ধতিতে সন্দেহভাজন হিসেবে নিরীহ মানুষকে আটক করতো, সেই পদ্ধতিকে হয়রানিমূলক বিবেচনা করে সাত জন ভুক্তভোগীর পক্ষে লিগ্যাল এইড সোসাইটি, হ্যান্ডলে ফারাহ এন্ড এন্ডারসন এবং ষ্ট্রুক এন্ড লাবান ম্যানহাটান ফেডারেল কোর্টে একটি মামলা দায়ের করে।
মামলায় দুই দশক আগে নিউইয়র্ক পুলিশ অভিযুক্ত আটক করার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি প্রয়োগ করতে সিটির বর্তমান পুলিশ প্রশাসন পুনরায় তা বলবৎ করায় উল্লিখিত আইনি সংগঠনগুলো এটিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করে। কারণ ‘স্টপ এন্ড ফ্রিস্ক’ নামে বহুল পরিচিত এ কৌশলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অশ্বেতাঙ্গ লোকজনকে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বা মাদক ব্যবসায়ে জড়িত সন্দেহে আটক করা হতো। কিন্তু এটিকে চ্যালেঞ্জ করা হলে আদালত নিউইয়র্ক পুলিশের ‘স্টপ এন্ড ফ্রিস্ক’ কৌশলককে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে। সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস একজন সাবেক পুলিশ অফিসার, যিনি তার অপরাধ বিরোধী ক্রুসেডে ‘স্টপ এন্ড ফ্রিস্ক’ কৌশল প্রয়োগের পক্ষে, যদি তিনি স্বীকার করেন যে অতীতে এ কৌশলের অপপ্রয়োগ হয়েছে, তা সত্বেও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাছে এটা এখনো প্রয়োজনীয় পদ্ধতি বলে তার বিশ্বাস।
গত শুক্রবারের নিস্পত্তির ব্যাপারে সিটি প্রশাসন তাদের কোনো দায় স্বীকার না করলেও আইনি ব্যয় ও ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪৫৪,০০০ ডলার পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া সকল পুলিশ অফিসারকে আগামী জানুয়ারি মাসে যে নতুন নীতি গ্রহণ করা হবে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। সিটির আইন বিভাগ বলেছে যে এনওয়াইপিডি ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। তারা বিদ্যমান নীতির সাথে সঙ্গতি রেখে কাউকে গ্রেফতার করতে হলে আগে থেকেই তার সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত যাচাই করবে। শুক্রবারের নিস্পত্তি সম্পর্কে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ কোনো মন্তব্য করেনি। লিগ্যাল এইড সোসাইটির কপ একাউন্টিবিলিটি প্রজেক্টের স্টাফ এটর্নি মলি গ্রিফার্ড বলেছেন যে কাউকে আটক করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্ধান করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তাতে সুস্পষ্ট যে তারা আটক করার ক্ষেত্রে ব্যক্তির অধিকারকে আমলে নেয়নি এবং আইন ভঙ্গ করেছে।
যাদের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে আইনি সংস্থাগুলো পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছিল, তাদের একজন টেরন বেল (২৯), যাকে চারজন সাদা পোশাকের পুলিশ ২০১৭ সালে ম্যানহাটানের সাবওয়ে থেকে আটক করে ও তল্লাশি চালায়। পুলিশ বলে যে তার কাছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র আছে বলে তাদের ধারণা। টেরন বেল বলেন, যদিও পুলিশ তাকে তল্লাশি করে কিছুই পায়নি, তবুও তারা তার পরিচয় পত্র দাবী করে। এরপর তারা তাকে আটক করে তাদের ডাটাবেজ পরীক্ষা করে তাকে গ্রেফতার করার কার অনুসন্ধানের জন্য।আমার সাথে একজন অপরাধীর মত আচরণ করা হয়, যাতে আমার বিরুদ্ধে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা তৈরি করতে পারে, সেজন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালায়। অথচ আমি কোনো ভুল করিনি।
Posted ১:০২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh