বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২
নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকার হিলসাইড এলাকায় সংঘবদ্ধ একটি জালিয়াতচক্র অত্যন্ত সক্রিয়। আর্থিক ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে তারা সর্বসান্ত করেছে স্থানীয় অনেক বাংলাদেশীকে । প্রায় দুই ডজন প্রবাসীর ব্যাংক একাউন্ট ও অন্যান্য অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান থেকে হাতিয়ে নিয়েছে মিলিয়ন ডলার। ভুক্তভোগীদের তথ্যানুযায়ী জালিয়াত চক্রের প্রায় সকলেই বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত। যারা জ্যামাইকা এলাকায় ফোন ব্যবসায়ের আড়ালে দীর্ঘদিন যাবত এ ধরনের অপরাধ কর্ম চালিয়ে আসছে। নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কস, ওজোন পার্ক এলাকায়ও তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত এমন তথ্য উদঘাটন করেছেন ভুক্তভোগীরা। টেলিফোনের বিল প্রদানকালে ও টেলিফোন হ্যাক করে তারা তাৎক্ষণিকভাবে এটিএম মেশিন থেকে অর্থ উত্তোলন করছে।
রাতারাতি চুরিকৃত তথ্যের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড বানিয়ে কেনাকাটা করছে ইচ্ছেমতো । একজন ভুক্তভোগীর তথ্য চুরি করে ১৮টি ক্রেডিট কার্ড বানানোর ঘটনাও ঘটেছে। আর এই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ব্র্যান্ড নিউ টয়োটা গাড়ি অর্ডার করা হয়েছে। এক ভুক্তভোগী তার আমাজন একাউন্টের তথ্য উদঘাটন করতে গিয়ে আরাফাত নামের এক জালিয়াতের সন্ধান পেয়েছেন, যিনি ওজোন পার্ক এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। এসব জালিয়াত চক্রের ক্রয়কৃত সামগ্রী বাংলাদেশের ঢাকা শহরে পৌছেছে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে অনুসন্ধানে। প্রাথমিকভাবে ভুক্তভোগীরা জ্যামাইকা এলাকার তিনটি সেলফোন স্টোরের দিকে সন্দেহের তীর নিক্ষেপ করেছেন। ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় ক্রেডিট কার্ড প্রতারণা ও ফোন হ্যাকিং এর শিকার বাংলাদেশীদের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য প্রতারকচক্রের হাতে পড়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের স্টক মার্কেট একাউন্ট, ইমেইল অ্যাড্রেস, ফোন পর্যন্ত হ্যাক করা হয়েছে। তারা কোনোভাবেই তাদের অর্থ, ব্যবসা এবং ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে নিরাপদ বোধ করছেন না।
ব্যাংক একাউন্ট হ্যাক করে প্রতারকরা বিশিষ্ট রিয়েলটর ও কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের ৯০ হাজার ডলার সরিয়ে ফেলেছে হ্যাকাররা। এছাড়া জ্যামাইকার সিরাজুল ইসলাম লিপন ও আফসানা বেবির ফোন হ্যাক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও জাহাঙ্গীর আলম, নূর আলম মনীর, মুনিরুজ্জামান, আবু নাসের, মানিক মিয়া এবং ব্রঙ্কসের মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর হ্যাকারদের কবলে পড়েছেন এবং আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীণ হয়েছেন। এর বাইরেও সংঘবদ্ধ হ্যাকারদের শিকার আরও বহু বাংলাদেশী রয়েছেন বলে জানা গেছে। জালিয়াতি ও প্রতারণার এসব ঘটনা জানাজানি হওয়ায় চাঞ্চল্যের পাশাপাশি আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে কমিউনিটিতে। বিষয়টি ফেডারেল অ্যাটর্নি জেনারেল পর্যন্ত পৌছেছে বলে জানান ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর শরণাপন্ন হয়ে এর প্রতিকার চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বের এক তৃতীয়াংশের বেশি, ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রে। ইন্টারনেটের বিস্তৃতির সাথে বিশ্বজুড়ে বেড়ে গেছে সাইবার ক্রাইম এবং অনলাইনে আর্থিক লেনদেন অবাধ হওয়ায় হ্যাকাররা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্ট থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়। সদা তৎপর হ্যাকারা ওঁৎ পেতে থাকে কখন কার একাউন্ট থেকে অর্থ সরিয়ে নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ, যেটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সরকার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের একাউন্ট দেখভাল করে, সেখান থেকে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গচ্ছিত অর্থের মধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নিয়েছিল হ্যাকাররা, যা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। এ পরিস্থিতিতে ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টের অবস্থা যে কত নাজুক তা সহজে বোঝা যায়। করোনা মহামারীর সময় থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার ক্রাইম সীমাহীনভাবে বেড়েছে। ভুক্তভোগীরা যোগাযোগ করতে পারেন-মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম-৯১৭-৬০৭-৫২৮৮
Posted ৪:০৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh