বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২
ডিপোর্টেশনের আদেশপ্রাপ্ত যেসব ইমিগ্রান্ট যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন যাবত আটক রয়েছে এবং মুক্তি লাভের জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছে, সুপ্রীম কোর্ট গত সোমবার তাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। গত সোমবার এ ধরনের দুটি মামলার রায় প্রদানকালে সুপ্রীম কোর্ট বলেছে যে, ইমিগ্রান্টরা, যারা তাদের নিজ দেশে ডিপোর্ট করা হলে নিপীড়িত হবে বলে আশঙ্কা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনের অধীনে তাদের মুক্তি দেওয়ার আবেদনের ওপর শুনানির কোনো সুযোগ নেই, যে সুযোগের আওতায় তারা যত দীর্ঘ সময় ধরেই আটক থাকুক না কেন, তারা তাদের মুক্তির ব্যাপারে যুক্তি প্রদর্শনের অধিকার রাখেন না।
সুপ্রীম কোর্ট ৬-৩ রায়ে একথাও বলেছে যে, ডিপোর্টিদের মুক্তির আবেদন করার অধিকার একেবারেই সীমিত। তবে বিচারপতি সোনিয়া সোটোয়ামার বলেছেন, এ রায়ের ফলে বহু বিপন্ন অনাগরিক তাদের অধিকার সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হবেন। এসোসিয়েটের প্রেস এর এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ১৯০০ এর দশক ও ২০০০ এর দশকে প্রণীত ইমিগ্রেশন আইনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উচ্চ আদালত ফেডারেল আদালতে ইমিগ্রান্টদের আবেদন বিবেচনার সুযোগ ক্রমবর্ধমানভাবে সীমিত হয়ে গেছে। ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো ল’ স্কুলের ডাইরেক্টর অফ দ্য ইমিগ্রান্টস রাইটস ক্লিনিক নিকোল হ্যালেট বলেছেন, “সুপ্রীম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে মনে হয়েছে যে, কোর্ট কিছুটা পেছনের দিকে চলে গেছে। চরম ক্ষেত্রে কোর্ট জুডিশিয়াল রিভিউয়ের জন্য কোনো বিধির ব্যাখ্যা দানের মাধ্যমে ইমিগ্রান্টদের মুক্তি দেওয়ার আবেদনের শুনানির সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু এখন এটা স্পষ্ট যে সুপ্রীম কোর্ট তা করতে ইচ্ছুক নয়।”
ডিপোর্টেশনের আদেশপ্রাপ্ত যেসব ইমিগ্রান্ট তাদের বহু মাস বা বহু বছর যাবত আটক রয়েছেন, তারা ইমিগ্রেশন আদালত কর্তৃক তাদের ডিপোর্টেশন মামলা নিস্পত্তির আগে আটকাবস্থা থেকে মুক্তি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। ডিপোর্টেশন প্রাপ্ত যারা মুক্তির আবেদন করেছিলেন তারা মেক্সিকো ও এল সালভেদর থেকে আগত ইমিগ্রান্ট, যারা হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন যে তারা নিজ নিজ দেশে তাদের ওপর সমূহ বিপদ ও ভীতির আশঙ্কা সম্পর্কে যা বলেছেন তা বিশ্বাসযোগ্য এবং সেজন্য তাদের বিষয় আরও পর্যালোচনার দাবী রাখে। তাদের আইনজীবীরা যুক্তি প্রদর্শন করেছেন যে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া উচিত কিনা সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ইমিগ্রেশন বিচারকের সামনে শুনানি হওয়া উচিত। এখানে মূল বিষয় হচ্ছে যে এসব ইমিগ্রান্ট যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিপজ্জনক কিনা অথবা তাদেরকে মুক্তি দিলে তারা পালিয়ে যেতে পারে কিনা।
বিচারপতি সোনিয়া সোটোমায়ার অ্যান্টোনিও অ্যারটিয়েগা-মার্টিনেজ এর মামলার ওপর তাঁর অভিমত লিখেছেন। মার্টিনেজকে ইতিপূর্বে মেক্সিকোতে ডিপোর্ট করা হয়েছিল। চার বছর আগে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ফেডারেল কোর্টে বিবেচনার পর তাকে মুক্তির আদেশ দেওয়া হয়। সুপ্রীম কোর্টে তার শুনানির বিষয় ছিল যে তিনি ২০২৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে পারেন কিনা। বিচারপতি সোটোমায়ারের বক্তব্য হচ্ছে, ইমিগ্রেশন আইনের যে বিধি মার্টিনেজ এর মতো লোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তার মুক্তির ব্যাপারে সরকারের শুনানি অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন পড়ে না। তবে কোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্তে একথাও বলেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান শুনানি ছাড়া কাউকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা অনুমোদন করেনি।
Posted ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh