বাংলাদেশ অনলাইন : | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাকে। বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলের অবরোধে নিষ্পেষিত গাজাবাসীরা এবার পুড়ছে তীব্র তাপদাহে। তীব্র তাপদাহের সাথে গাজায় চলছে ভয়াবহ লোডশেডিং। প্রতিদিন অন্তত ১৬ ঘণ্টা থাকছে না বিদ্যুৎ। এতে নাভিশ্বাস উঠছে অসহায় গাজাবাসীর। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘প্রচণ্ড গরম, একটু বাতাসও নেই, বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। কার কাছে অভিযোগ করব? মাঝে মাঝে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।’
স্থানীয় আরও এক বাসিন্দা জানান, ‘তীব্র গরমের কারণে ঘরে থাকতে পারছিলাম না। হাসফাঁস লাগছিল, তাই সমুদ্রের পাড়ে এসেছি। কারণ, এখানে সাগর থেকে উঠে আসা কিছুটা শীতল বাতাস আছে। ভয়াবহ গরমে এটাই আমাদের বেঁচে থাকার লাইফ লাইন।’
তীব্র গরম নিয়ে স্থানীয়রা নিজেদের অসনীয় কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আগে এতটা গরম ছিল না। কিন্তু এবার আমরা আর পেরে উঠছি না। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। বাচ্চারা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে।’
এ বিষয়ে গাজা উপত্যকার জ্বালানি বিষয়ক প্রধান জালাল ইসমাইল বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতি। যতটা দ্রুত সম্ভব সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। ঘাটতি মেটাতে এরই মধ্যে ৫-৭ ইউনিট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি করা গেলে সংকট কিছুটা কমবে।’
গাজা কর্তৃপক্ষ বলছে- গ্রীষ্মকালে উপত্যকাটিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু নিজেদের উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ৬০ মেগাওয়াট এবং ইসরায়েল থেকে আমদানি করে ১২০ মেগাওয়াট। বাকি ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে সমন্বয় করতে বাধ্য হচ্ছে গাজার শাসকগোষ্ঠী।
২০০৭ সাল থেকে গাজার শাসনভার তুলে নেয় ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এরপর থেকে ভূখণ্ডটির ওপর অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে ইসরায়েল। এর প্রভাবেই উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয় উপত্যকাটি। নিষেধাজ্ঞার কারণে বেঁচে থাকার মৌলিক চাহিদাগুলোও পূরণ করতে পারছেন না এখানকার বাসিন্দারা।
মাত্র সাড়ে ৩শ বর্গকিলোমিটারের উপত্যকায় গাদাগাদি করে বাস করছেন ২৩ লাখ মানুষ। বছরের পর বছর ধরে যারা ইসরায়েলের অবরোধের মধ্যে আছেন। এর ভেতর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এবার তীব্র দাবদাহে পুড়ছে গাজাবাসী।
Posted ১২:২১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh