| বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩
নিউইয়র্ক সিটিতে আবাসন নিয়ে সিটি প্রশাসনের বাগাড়ম্বরের শেষ নেই। মেয়ররা প্রতি চার বছর পর পর নির্বাচিত হয়ে আসেন, সকল ধরনের আয়সীমার মানুষের জন্য আবাসন গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দান করেন। তারা তাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেন, তা বলা যাবে না। কিন্তু আবাসনের যে চাহিদা তা পূরণ করা সম্ভব হয় না।
সিটি থেকে বহু মানুষ প্রতিনিয়ত অন্য স্থানে চলে যাচ্ছেন, যেহেতু তারা এ সিটিতে তাদের আয় অনুযায়ী ভাড়া কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। অবিরাম আবাসনের ঘাটতির মূলে রয়েছে আবাসন পরিকল্পনার ত্রুটি। ঘাটতির কারণে সিটিবাসীর অনেকের জীবন ক্রমশ কঠিন করে তুলছে। বর্তমান সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বলে আসছেন যে, তিনি আবাসনে যে পরিকল্পনা করছেন তাতে আগামী পনেরো বছরে পাঁচ লাখ ইউনিট অ্যাপার্টমেন্ট তৈরি হবে।
কিন্তু আগামী পনেরো বছরে নিউইয়র্ক সিটির জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে। অতএব আবাসনের ঘাটতি স্থায়ীভাবেই রয়ে যাবে এবং চাহিদা অনুযায়ী বাড়ি না থাকায় বাড়ির মূল্য যেমন বাড়বে, বাড়ির ভাড়াও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। চলতি মাস থেকে সিটির রেন্ট স্যাবিলাইজড বাড়িভাড়া ৩ শতাংশ বেড়েছে, এতে পনেরো লাখ সিটিবাসীর ওপর সামান্য চাপ পড়বে। কিন্তু যারা এই ক্যাটাগরির বাড়ির বাইরে বাস করেন তাদের বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাড়ি মালিকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং তারা বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি করেন ভাড়াটিয়াদের সাধ্যের বাইরে।
বর্তমান মেয়র সাড়ে চয় দশক আগের আবাসন জোনিং এর পরিবর্তন এনেছেন, যার মধ্য দিয়ে একদিকে সিটিতে বসবাসযোগ্য আবাসন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভুলগুলো সংশোধন করা হবে, অন্যদিকে নিউইয়র্ক সিটিতে যে ধরনের আবাসন প্রয়োজন তা গড়ে তোলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। পুরোনো জোনিং ব্যবস্থায় ছয় দশকের বেশি সময় সিটিতে অনেক এলাকায় আবাসন গড়ে তোলায় বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল, যা পরিবর্তিত জোনিং ব্যবস্থায় সংশোধন করে নানা বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে বিচ্ছিন্নতা রাখার প্রবণতাকে দূর করা হয়েছে। সংশোধিত জোনিং এ নতুন আবাসন এমন স্থানে গড়ে তোলা হবে, যেখানে গণপরিবহনের সুবিধা রয়েছে।
সৃষ্টির পরিবর্তে বরং হাইওয়ে ও প্রাইভেট কারের মালিকদের সুবিধা সৃষ্টির দিকে অধিক খেয়াল রাখা হয়েছে। এখন থেকে সিটির পাঁচ বরোর প্রতিটিতে সকল নেইবারহুডে আবাসন গড়ে তোলার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে এবং জোনিং ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার ফলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জমি, এমনকি প্রার্থনাস্থল- অর্থ্যাৎ চার্চ, মসজিদ, মন্দির, গুরুদুয়ারা, সিনগগে যদি অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির সুযোগ থাকে, তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠানকেও অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
নতুন নতুন আধুনিক আবাসিক ভবন নির্মাণ করার ফলে অসংখ্য নিউইয়র্কবাসীর প্রধান চাহিদা পূরণে যথেষ্ট অবদান রাখা সম্ভব হবে বলে ধারণা করছে সিটি প্রশাসন। মেয়র এরিক অ্যাডামস আবাসন সৃষ্টির এই প্রকল্পকে ‘সিটি অফ ইয়েস ফর হাউজিং অপরচুনিটি’ বলে বর্ণনা করেছেন। ইতোমধ্যে সিটির বিভিন্ন বরোতে অনেক পার্কিং লটে অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স্র গড়ে উঠছে এবং শীঘ্রই এ ধরনের আরো অনেক অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে গড়ে উঠবে বড় বড় পার্কিং লটে। সিটি বলছে যে এসব অ্যাপার্টমেন্ট হবে অতিরিক্ত সাশ্রয়ী ও সকল ধরনের আয়ের মানুষের সাধ্যের মধ্যে।
Posted ১২:০৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh