নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো করোনা ভাইরাস নিরোধী ভ্যাকসিন প্রয়োগের মন্থর গতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভ্যাকসিন প্রয়োগ দ্রুততর করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ফার্মেসি, আরজেন্ট কেয়ার সেন্টার, জাভটিস সেন্টার এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্ক ও সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউইয়র্ক এর ক্যাম্পাসগুলোকে ব্যবহার করা হবে। গত মঙ্গলবার অ্যালবেনিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গভর্নর ক্যুমো বলেন, ভ্যাকসিন বিতরণ ব্যবস্থার আওতায় যেসব স্থানকে নির্বাচন করা হয়েছে সেসব স্থানে আমরা প্রতি সপ্তাহে ৩০০,০০০ ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারছি।

আরো অধিক পরিমাণ ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য আমাদেরকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে এবং আমরা আশা করছি শিগগিরই আমরা কাংখিত পরিমাণে ভ্যাকসিন পাবো। তিনি হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন দেয়ার গতি বৃদ্ধি করার আহবান জানিয়ে পুলিশ, ফায়ার ডিপার্টমেন্ট, শিক্ষক ও ট্রানজিট ইউনিয়নের মত বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিও আহবান জানিয়েছেন ভ্যাকসিন বিতরণে তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা তৈরি করতে, যাতে অত্যাবশ্যকীয় কর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ দ্রুত হয় এবং যথাশীঘ্র সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই লক্ষ্যে স্টেট কর্তৃপক্ষ কমিউনিটি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চার্চ, কমিউনিটি সেন্টার ও পাবলিক হাউজিং এ ভ্যাকসিনেশন সেন্টার স্থাপন করে দরিদ্র ও সংখ্যালঘু কমিউনিটির সদস্যদের ভ্যাকসিন দেয়ার কর্মসূচি পরিচালনার কথাও ভাবছে। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে স্টেটে এ ধরনের ৬৩৬টি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে, যেগুলোতে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে বলে ক্যুমো জানান। এছাড়া নিউইয়র্ক সিটির পাঁচটি বরোতে ৮৪৫ টি স্থান ইতিমধ্যে তালিকাভূক্ত হয়েছে, যেখানে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি সাপেক্ষে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রয়োগ শুরু হবে।

নিউইয়র্ক সিটির হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন দেয়ার গতি মন্থর হওয়ায় গভর্নর ক্যুমো হাসপাতালগুলোকে জরিমানা করার হুমকি দেয়ার পর সিটি মেয়র বিল ব্লাজিও গভর্নরের সমালোচনা করে বলেছেন যে, এ ধরনের হুমকি আমলাতান্ত্রিক মনেবৃত্তির ফল এবং জরিমানা করার হুমকি এক ধরনের ঔদ্ধত্য। আমরা ভ্যাকসিন দেয়ার লক্ষ্য পূরণে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কারো কোন অবহেলা করার সুযোগ নেই। আমরা যে পরিমাণে ভ্যাকসিনের সরবরাহ লাভ করছি তা নির্ধারিত অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অত্যাবর্শীয় স্বাস্থ্যকর্মী, দীর্ঘকালীন সেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহণকারী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্মীদের দেয়া হচ্ছে। সিটি এখন ব্যাপক ভিত্তিতে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি পরিচালনার প্রস্তুত। ভ্যাকসিনের সরবরাহ পেলে আমরা সপ্তাহে সাতদিন এবং প্রতিদিন চব্বিশ ঘন্টা কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি। তিনি আশা করছেন যে জানুয়ারী মাসের শেষ নাগাদ ১০ লাখ নিউইয়র্কার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ লাভ করবে। ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ এন্ড হসপিটালস এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মিশেল কাটজ এর বরাত দিয়ে মেয়র ব্লাজিও বলেছেন যে, সিটির ১১টি সরকারি হাসপাতালে যারা রোগী সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে, তবে তিনি আরেকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন যে, হাসপাতাল কর্মীদের ৩০ শতাংশ সেবা গ্রহণে সম্মত হয়নি।