নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশী সাংবাদিকদের সর্ববৃহৎ পেশাজীবী সংগঠন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। পেশাগত ক্ষেত্রে উৎকর্ষ বৃদ্ধির পাশাপাশি নানাবিধ সামাজিক আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে সংগঠনটি। এমনি একটি আনন্দানুষ্ঠানের অনুসঙ্গ বার্ষিক বনভোজন। অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব গত ১৭ জুলাই রোববার লং আইল্যান্ডের বেথপেজ স্টেট পার্কে আয়োজন করে বনভোজন। দিনভর অনুষ্ঠিত বনভোজন কার্যত পরিণত হয় সাংবাদিক ও তাদের পরিবার পরিজনদের মিলনমেলায়। চমৎকার আবহাওয়া ও বাহারি অনুষ্ঠানাদি বর্ণাঢ্য করে তোলে বনভোজনকে।
বনভোজনের কর্মকান্ডের মধ্যে ছিলো শুভেচ্ছা বিনিময়, আড্ডা, শিশু-কিশোর-কিশোরী, মহিলা ও পুরুষদের নানা খেলাধুলা। সেই সাথে ছিলো সকালের নাস্তা, মধ্যাহ্ন ভোজ আর বিকেলে চা-চক্র।সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিলো র্যাফল ড্র আর গান। প্রেসক্লাবের বনভোজন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও সমাজসেবী আবু জাফর মাহমুদ। অতিথি ও ক্লাব কর্মকর্তাগণ দুপুরে লাল রঙয়ের একগুচ্ছ বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বনভোজন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এর আগে বনভোজন আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধানে সকালের নাশতা পরিবেশিত হয়।
উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং বাংলা পত্রিকার সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সিইও আবু তাহের। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ও বনভোজন আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদ এ খান। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা মনজুর আহমদ ও আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, সাবেক সহ সভাপতি তাসের খান মাহমুদ, প্রধান অতিথি আবু জাফর মাহমুদ, আমন্ত্রিত অতিথি জেড টাইরেক্ট মর্গেজ ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মোহাম্মদ ফাহিম জান, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এবং কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বনভোজন আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম মজুমদার।
প্রেস ক্লাব সদস্য আবিদুর রহমানের কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে দুপুরে বনভোজন অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
এসময় প্রধান অতিথি বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার ইনক’র কর্ণধার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আমরা যারা সমাজ, দেশ রাষ্ট্র্রকে ভালোবাসি, দেশের মানুষের সেবায় কাজ করতে চাই তাদের সবার একই পথ। সাংবাদিক সমাজও সেই পথের পথিক। তাই আমাদের সবাইকে একই পথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের সেবায় আরো কাজ করতে হবে। নিউইয়র্কের সাংবাদিক সমাজ আর মিডিয়ার কল্যাণে তিনি তার সাধ্যমতো সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। অনুষ্ঠানের অতিথি বক্তারা নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা এবং সার্বিক সফলতা কামনা করেন। এসময় ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও উপদেষ্টা ডা. চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, সাবেক সভাপতি মাহফুজুর রহমান, সাবেক সহ সভাপতি হাবিব রহমান মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ রশীদ আহমদ-এর তত্ত্বাবধানে দুপুরে নিউইয়র্কের জনপ্রিয় সাগর রেষ্টুরেন্টের মুখরোচক খাবার দিয়ে মধ্যহ্ন ভোজ সম্পন্ন হয়। মধ্যহ্ন ভোজের পর শুরু হয় বিভিন্ন খেলাধুলা। শিশু-কিশোর-কিশোরীদের দৌড়, মহিলাদের হাড়ি ভাঙ্গা ও মিউজিক্যাল পিলো, পুরুষদের বল নিক্ষেপ প্রভৃতি খেলা পরিচালনা করেন ক্লাবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল। তাকে বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন ক্লাবের অন্যতম সদস্য সৈয়দ ইলিয়াস খসরু ও এমদাদ চৌধুরী দীপু। ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সোলায়মানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে র্যাফল ড্র’র টিকিট বিক্রি ও পরিচালিত হয়। তাকে বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন ক্লাব সদস্য রওশন হক ও শেলী জামান খান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন নিউইয়র্কের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী মরিয়ম মারিয়া। সবশেষে অনুষ্ঠিত পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি ও ক্লাবের কর্মকর্তাগণ বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন। এর আগে ক্লাবের বিগত কমিটির সভাপতি ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান এবং সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলামের কর্মকান্ডের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্লাবের পক্ষ থেকে প্ল্যাক প্রদান করা হয়। এছাড়াও সার্বিক দিক বিবেচনায় ক্লাবের ‘গুড মেম্বার’ হিসেবে ক্লাবে তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মজুমদারকে প্ল্যাক প্রদান করা হয়। বনভোজন তত্ত্বাবধানে ছিলেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম।
আকর্ষণীয় র্যাফল ড্র পরিচালনা করেন ডা: ওয়াজেদ খান। র্যাফল ড্র’র প্রথম পুরষ্কার বিমানের টিকিট এক হাজার ডলারের চেক স্পন্সর করেন কুইন্স সোস্যাল এডাল্ট ডে কেয়ার, দ্বিতীয় পুরষ্কার টেলিভিশন স্পন্সর করেন জান ফাহিম, আর তৃতীয় পুরস্কার স্বর্ণের চেন স্পন্সর করেন পুষ্পধারা প্রোপাটিজ লি: এর মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এছাড়াও নূর অটো রিপেয়ার, জ্যামাইকা ফার্মেসীর স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ কবীর, ইমিগ্রান্ট এলডার হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ, উৎসব.কম-এর কর্ণধার রায়হান জামান, এটর্নী মঈন চৌধুরী, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট সামসুল ইসলাম মজনু, ক্লাব সদস্য ও সাপ্তাহিক মুক্তচিন্তা সম্পাদক ফরিদ আলম এবং ইয়র্ক বাংলা (ম্যাগাজিন) বঙ্কসের পার্কচেষ্টার রিয়েলটি র্যাফল ড্র’র পুরষ্কার স্পন্সর করেন। এর মধ্যে ফরিদ আলমের একাধিক পুরষ্কার ছিলো। উল্লেখ্য, র্যাফল ড্র’র প্রথম পুরষ্কারের দাবীদার (টিকেট নম্বর ৯৭৭৩৭০)-কে না পাওয়ায় পুরষ্কারটি ক্লাবে গচ্ছিত রাখা হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে এই পুরষ্কারের দাবীদারকে না পাওয়া গেছে উল্লেখিত অর্থ ক্লাব তহবিলে জমা হবে। বনভোজনে অন্যান্য সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক প্রথম আলো’র সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিবলী চৌধুরী কায়েস সহ প্রেসক্লাবের সদস্যদের মধ্যে আরো যারা বনভোজন অনুষ্ঠানে যোগ দেন তারা হলেন: বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুল আবেদীন, মাঈন উদ্দিন আহমদ, এবিএম সালেউদ্দীন, আবিদুর রহমান ভূইয়া, শাহেদ আলম, ড. কনক সারওয়ার, সানাউল হক, মোস্তাফিজুর রহমান পারভেজ, আবির আলমগীর, সৈয়দ মাসুদুল কবীর, সামিউল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ জামিল আনসারী, যাকারিয়া ভূঁইয়া, মোস্তাফিজুর রহমান, সোহেল হোসাইন, মোহাম্মদ তপন মাহমুদ জনি, সৈয়দ সুজাত আলী, মাহফুজ আদনান প্রমুখ।
প্রেসক্লাবের বনভোজনে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে বিশিষ্ট অভিনেত্রী রেখা আহমদ, প্রবীণ প্রবাসী নাসির আলী খান পল, বিশিষ্ট রাজনীতিক জিল্লুর রহমান জিল্লু ও মিজানুর রহমান ভূইয়া মিল্টন, কমিউনিটি নেতা আলী ইমাম, বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচনে সভাপতি পদপ্রার্থী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন, বিশিষ্ট সাংবাদিক আমান-উদ দৌলা, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট সৈয়দ আল আমীন রাসেল, কুইন্স কাউন্টির নির্বাচিত জুডিশিয়াল ডেলিগেট সাবুল উদ্দিন, কুইন্স সোস্যাল এডভান্স ডে কেয়ার-এর দুই কর্মকর্তা জিয়াউল হায়দার ও মিরাজ, আকাশ রহমান, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট নইম উদ্দিন কুমিল্লা সোসাইটি ইউএসএ সাধারণ সম্পাদক আ স ম খালেদুর রহমান সবুজ, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নিউইয়র্ক (ইউএনএ)
Posted ৭:১২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh