বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

নিউইয়র্ক সিটিতে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি

  |   বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২

নিউইয়র্ক সিটিতে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি

বিশ্বের রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় জনবহুল নগরী। সম্প্রতি এই নগরীর আইন শৃংখলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। প্রতিদিন সিটির পাঁচটি বরোর কোথাও না কোথাও সংগঠিত হচ্ছে মারাত্নক অপরাধ। বিশেষ করে বন্দুক সহিংসতায় ঝড়ে যাচ্ছে নিরীহ মানুষের জীবন। পুলিশ সদস্যরাও রেহাই পাচ্ছেন না খুনীদের হাত থেকে। এছাড়া সাবওয়েতে ধাক্কা দিয়ে ফেলা দেয়া সহ অন্যান্য অপরাধের ঘটনাও বাড়ছে সমানতালে। কোথাও স্বস্থি ও নিরাপদে নেই নগরবাসী। নিউইয়র্ক সিটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশীরাও প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছেন অপরাধ কর্মের। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্রুকলীনের ইস্ট নিউইয়র্কে মোদাসেসর খন্দকার নামে ৩৬ বছর বয়সী একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মধ্যরাতের দিকে তার নিজ বাসার কাছে খুন করা হয় তাকে। হত্যাকান্ডের এ ঘটনায় বাংলাদেশ কমিউনিটিতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। ম্যানহাটানের হারলেমে দুবৃর্ত্তের গুলিতে দুই পুলিশ অফিসারের নিহতের ঘটনা বড় ধরণের চ্যালেঞ্জে ফেলেছে নূতন মেয়রকে। সত্তরের দশকে নিউইয়র্ক সিটি ছিল আইনশৃংখলার অবনতির অনিরাপদ এক নগরী।

একের পর এক দু:খজনক ঘটনার পর নিউইয়র্কাররা আশাবাদী হয়ে ওঠেছিল এ সিটি যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে নিরাপদ নগরী হিসেবে গড়ে ওঠবে। কিন্তু তা দুরাশায় পরিণত হয়েছে। অপরাধী গ্যাংগুলো আগের চেয়ে বেশি নৃশংসতায় রাস্তায় নেমে এসেছে। এসবের সঙ্গে অন্যান্য অপরাধ এবং দুর্ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি মাসেই ব্রঙ্কসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা গেছে ১৭ জন, টাইমস স্কোয়ার সাবওয়ে স্টেশনে এক ব্যক্তি ধাক্কা দিয়ে চলন্ত ট্রেনের সামনে ফেলে হত্যা করেছে এক নারীকে। ম্যানহাটানে বার্গার কিং এর কিশোর ক্যাশিয়ারকে গুলি করে হত্যা করেছে ডাকাতরা। ব্রঙ্কসেই অন্য এক স্থানে গুলিবিনিময়ের সময় পার্ক করা গাড়িতে বসা এক শিশু আহত হয়। এর পরের দিন বৃহস্পতিবার স্ট্যাটেন আইল্যাণ্ডে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার সময় এক ডিটেকটিভ অফিসার গুলিবিদ্ধ হন। পর পর অনেকগুলো অপরাধের ঘটনা এবং সাবওয়েতে যাত্রীদের উত্যক্ত করার নিয়মিত ঘটনা সিটিবাসীকে ভীতির অন্ধকারে ছুড়ে দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।


গত দুই বছর যাবত করোনা মহামারীর ব্যাপকতা ও বিধিনিষেধের কারণে এমনিতেই নিউইয়র্ক সিটিসহ সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে অচলাবস্থার মধ্যে সিটিতে অপরাধের বিস্তার জনমনে এক অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করে। সিটির পুরোনো বাসিন্দা থেকে শুরু করে নবাগত সকলেই আইনশৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপাওে প্রকাশ করছেন অস্বস্থি। তারা মনে করেন সামাজিক নিয়মরীতির অবক্ষয় অবৈধ ও অপরাধ কর্মকান্ডের বিস্তার ঘটানোর মূখ্য কারণ। এমনকি সিটি মহামারী পূর্ব অবস্থায় যেমন ছিল, আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে তার চেয়ে অনেক বেশি এবং কেউ আর নিরাপদ অনুভব করতে পারছেন না। নিউইয়র্ক সিটিতে ইতোমধ্যে গুলিবিনিময় ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ২০১৮ সালের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ৪৮৮টি। নব্বইয়ের দশকে যেভাবে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা এখনকার ঘটনার চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। এখন বিভিন্নভাবে লোকজন নিহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটতে যাচ্ছে না।

সাম্প্রতিকালে সংঘটিত অপরাধমূলক ঘটনাগুলো দেখে ও জেনে মনে হচ্ছে সিটিবাসী পুরোনো দিনে ফিরে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে আর নিরাপত্তার বোধ অনুভব করেন না। আগে দিন ও রাতের যে কোনো সময়ে ঘুরে বেড়াতে কোনো ভয় ছিল না। কখনও ভীতি অনুভব হতো না সাবওয়ে ব্যবহারে। কিন্তু এখন সাবওয়ে ট্রেনে ওঠার কথা ভাবতেই ভীতি অনুভব হয়। সত্তরের দশকে নিউইয়র্ক সিটির অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় বেকারত্ব যেখানে ৮.৫ শতাংশ ছিল, তখন নিউইয়র্ক সিটিতে বেকারত্ব ছিল ১২ শতাংশ। এর পেছনে ছিল নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ও বড় করদাতারা সিটির বাজেট ঘাটতি ঘটার কারণে পরিণত হয়ে সিটিকে দেউলিয়াত্বের প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।


আর্থিক ঘাটতি পূরণ করার বিকল্প ছিল না। ১৯৭৫ সালে জেনারেল ইলেকট্রিক এবং পেপসিকো’র মত বড় কর্পোরেশনগুলো নিউইয়র্ক সিটি থেকে তাদের সদর দফতর সরিয়ে নেয়ার ফলে বেকারত্ব ও আর্থিক সংকট বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা কাটিয়ে উঠতে সিটির অনেক বছর সময় লেগেছে। নিউইয়র্ক সিটির সাম্প্রতি অপরাধ কর্মকান্ডে সিটিবাসী যেমন উদি¦গ্ন, তেমনি প্রচন্ড চাপে আছেন মেয়র এরিক এডামস। ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করে প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের কর্মকর্তাদেও সাথে বৈঠক করেছেন। যেকোন মূল্যে সিটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। আমরা চাই নিউইয়র্ক সিটি প্রতিটি নাগরিকের জন্য হোক নিরাপদ আবাসস্থল।


advertisement

Posted ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1382 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.