বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্নর নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী লী জেলদিন ও ডেমোক্রেটিক প্রার্থী ক্যাথি হকুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাছাকাছি অবস্থানে চলে এসেছেন, যদিও হকুল এখনো জেলদিনের চেয়ে যথেষ্ট এগিয়ে আছেন। সিয়েনা কলেজের সাম্প্রতিক জরিপ ফলাফল অনুযায়ী জেলদিন যেভাবে পিছিয়ে ছিলেন, তিনি তার সে অবস্থা কাটিয়ে ওঠতে সক্ষম হয়েছেন। ডেমোক্রেট স্টেট হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্কে প্রার্থী হিসেবে রিপাবলিকান জেলদিন লিবারেল হিসেবে পরিচিত এবং রিপাবলিকানরা তার বিজয়ী হয়ে আসার সম্ভাবনা দেখছিল। কিন্তু বাস্তব হচ্ছে ২০০২ সাল থেকে নিউইয়র্ক স্টেটে কোনো রিপাবলিকান প্রার্থী জয় লাভ করেননি।
নির্বাচনের আর মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি আছে। সময় যত ঘনিয়ে আসছে, দুই প্রার্থী বলতে শুরু করেছেন যে, নিউইয়র্কের ভোটাররা অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন পতনোন্মুখ অর্থনীতি এবং মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান চাপে। স্টেটের ৬১ শতাংশ ডেমোক্রেট ভোটারের মধ্যে নিউইয়র্ক ঠিক পথে আছে, কিন্তু ৮৭ শতাংশ রিপাবলিকান ও অধিকাংশ স্বতন্ত্র ভোটার মনে করেন যে স্টেট ভুল দিকে চলছে। জরিপ অনুযায়ী ক্যাথি হকুল শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থক হারিয়েছেন এবং মনে হয় শ্বেতাঙ্গরা দুই প্রার্থীর পক্ষেই সমভাবে নিজেদের সমর্থন ভাগ করে নিয়েছেন।
এর আগের সপ্তাহে মারিস্ট কলেজের এক জরিপ অনুযায়ী ক্যাথি হকুল রেজিস্টার্ড ভোটারদের মধ্যে ১০ শতাংশ পয়েন্টে এবং সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আট শতাংশ পয়েন্টে লী জেলদিনের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন। এছাড়া ভোট বিশ্লেষণ ওয়েবসাইট ফাইভথার্টিএইট ওয়েবসাইটের এর জরিপে মিসেস হকুল সব মিলিয়ে ১২ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন।
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ক্যাথি হকুল এবং লী জেলদিন একে অন্যের প্রতি চূড়ান্ত আক্রমণের তীর নিক্ষেপ করছেন, পরস্পরকে তাদের নিজ দলের চরমপন্থী বলে বর্ণনা করছেন, এমনকি তারা গর্ভপাত ও জাতি পরিচয় নিয়েও কথা বলছেন। হকুল বলছেন যে মি: জেলদিন নিউইয়র্ক স্টেটের কঠোর গর্ভপাত অধিকার সংরক্ষণের প্রতি চরম এক হুমকি, অপরদিকে জেলদিন স্টেট গভর্নরের নীতিমালার দোষারূপ করেন, যেসব নীতির কারণে নিউইয়র্কে অপরাধ এবং সেবা ও পন্য মূল্য লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। নির্বাচনী প্রচারণা বিরাট এক ঝাঁকুনি খান যখন গত উইকএেেন্ড রিপাবলিকান গভর্নর প্রার্থী লী জেলদিনের পক্ষ সমর্থন করে ঘোষণা দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এর আগে জেলদিনের নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রাখেন এবং তার সোস্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ”ট্রুথ সোস্যাল’ এ দেয়া এক পোষ্টে তাকে ‘মহান ও বিচক্ষণ’ প্রার্থী হিসেবে বর্ণনা করে ভোটারদের প্রতি আহবান জানান রিপাবলিকান প্রার্থীর পক্ষ সমর্থন করতে।
নিউইয়র্কে যেহেতু ডোনাল্ড ট্রাম্প অত্যন্ত অজনপ্রিয়, সেজন্য লী জেলদিনকে সাবেক প্রেসিডেন্টের সমর্থন দানের বিষয়টিকে ডেমোক্রেটরা জেলদিনের বিরুদ্ধে প্রচারণার কাজে লাগায় একটি বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যে সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জেলদিনের সম্পর্ক কতটা নিবিড় ছিল, যিনি কংগ্রেসম্যান হিসেবে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সার্টিফাই করা বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। এ পরিস্থিতিতে জেলদিন সাবেক প্রেসিডেন্টের তার প্রতি সমর্থনকে তেমন জোরেশোরে প্রচারের পথ থেকে সরে আসেন। গত সোমবার তিনি এ সম্পর্কে বলেছেন যে এটা তেমন কোন খবর নয়।
নিউইয়র্ক সিটিতে ক্যাথি হকুলের অবস্থা এখনো ভালো এবং তিনি জেলদিনের ২৩ শতাংশ পয়েন্টের বিপরীতে ৭০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছেন। মহিলা ভোটার এবং কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনোদের মধ্যেও সিটিতে তার সমর্থন ব্যাপক বলে জরিপ ফলাফলে দেখা যায। লী জেলদিনের অবস্থা নিউইয়র্ক সিটির প্রান্তভাগের এলাকগুলোতে ভালো। বলা যায় দুই প্রার্থীর হাড্ডআহাড্ড্ অবস্থা। হকুল এখানে ৪৯ শতাংশ পয়েন্ট এবং মাত্র ৪ শতাংশ পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন জেলদিন।
Posted ১:২৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh