বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি বিক্রিতে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। আগস্টে টানা সপ্তম মাসের মতো দেশটিতে ব্যবহূত বাড়ির বিক্রি সংকুচিত হয়েছে। গত মাসে বাড়ি বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। বন্ধকি ঋণে উচ্চ সুদের হার এবং মূল্য
বাড়ার কারণে বাড়ি বিক্রি কমছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব রিয়েলটরস (এনএআর) জানায়, জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে বাড়ি বিক্রির পরিমাণ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৪৮ লাখে দাঁড়িয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্থিক ডাটা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টসেট জানায়, ওই সময়ে বাড়ি বিক্রির সংখ্যা অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর ২০২০ সালের মে মাসের তুলনায় বর্তমানে বাড়ি বিক্রির বার্ষিক গতি ধীর হয়েছে। আগস্টে দেশটিতে বাড়ির গড় মূল্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫০০ ডলারে পৌঁছেছে। চলতি বছরের শুরুতে বার্ষিক বাড়ি বিক্রি প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধির পর বাড়ির মূল্য ধীরগতিতে বাড়ছে। এদিকে কভিড-১৯ মহামারী শুরুর পূর্বে দেশটিতে মাঝারি বাড়ির মূল্য বছরে প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। এনএআরের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স ইউন বলেন, ক্রমবর্ধমান বন্ধকি ঋণের সুদহার স্পষ্টভাবে আবাসন বাজারকে বাধাগ্রস্ত করছে। তবে আগস্টের বাড়ি বিক্রির তথ্যই প্রমাণ করে যে হাউজিং মার্কেট দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ খাতের গতি আশঙ্কাজনক হারে ধীর হয়েছে। কারণ বাড়ি ক্রেতারা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্ধকি হারের সম্মুখীন হয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে মূল্যস্ফীতিও চার দশকের মধ্যে সর্বোচ্চে রয়েছে। ফেডারেল হোম লোন মর্টগেজ কোম্পানি ফ্রেডি ম্যাক জানিয়েছে, ৩০ বছরের হোম লোনের গড় সুদের হার গত সপ্তাহে বেড়ে ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ হয়েছে। ২০০৮ সালের পর এবারই প্রথম বাড়ির ঋণে সুদের হার ৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। যেখানে এক বছর আগেও গড় সুদের হার ছিল ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হাউজিং খাত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে জটিল মন্দাবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ হোম বিল্ডার্স (এনএএইচবি)। অ্যাসোসিয়েশনের সিইও জেরি হাওয়ার্ড সম্প্রতি ব্লুমবার্গ নিউজ এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বর্ণনা করেছেন যে আবাসিক ভবন নির্মাণ কীভাবে হ্রাস পেয়েছে এবং চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ব্যাপক কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে হাউজিং খাত জাতীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে।
আবাসিক রিয়েল এস্টেট আমেরিকান অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ হোম বিল্ডার্স এর মতে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে হাউজিং তৎপরতার বার্ষিক অবদান ১৫ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত। অতএব এই খাতের অবনতি অর্থনীতির অবশিষ্ট অংশের ওপর গুরুতর বাজে প্রভাব ফেলবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হাউজিং খাতে এমন শোচনীয় পরিস্থিতি আর কখনও সৃষ্টি হয়নি বলে জেরি হাওয়ার্ড জানান। অ্যাসোসিয়েশনের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ক্রেতা ও বিল্ডাররা উভয় হাউজিং মার্কেট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে, যা ২০২২ সালে আমেরিকার অর্থনৈতিক দিগন্তে আরেকটি সম্ভাব্য মন্দার ইঙ্গিত।
Posted ১:২৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh