বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
সিটির মিডল স্কুলগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে বাছাই পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে অনেক স্কুল আপত্তি উত্থাপন করেছে। ইতোমধ্যে এ প্রক্রিয়া থেকে সরে গেছে ১০০টি স্কুল। যারা আপত্তি তুলেছেন তাদের বক্তব্য হচ্ছে, বাছাই পদ্ধতিতে ভর্তিতে জাতিগত বৈষম্যের স্থান রয়েছে এবং অতীতে এই পদ্ধতির কারণে সিটির পিছিয়ে পড়া জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের সন্তানেরা তাদের কাংখিত স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। উল্লেখ্য, বহুকাল থেকেই নিউইয়র্ক সিটির মিডল স্কুলগুলোতে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে টেস্ট স্কোর, গ্রেড, অ্যাটেনডেন্স এবং ব্যক্তিগত ইন্টারভিউকে ভর্তির সূচক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এ পদ্ধতিকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিভাবক পরবর্তী সময়ে তাদের সন্তানদের ভালো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন।
কিন্তু অসংখ্য জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী বৈচিত্রময় নিউইয়র্ক সিটিতে বাছাই পদ্ধতিতে ভর্তি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। এই পদ্ধতি স্থগিত রাখা হয়েছিল করোনা মহামারীর সময়ে এবং এর পক্ষে যারা রয়েছেন তারা বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। তাদের চাপেই সিটির শিক্ষা বোর্ড পুনরায় বাছাই পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছে। কিন্তু যারা ভর্তির ক্ষেত্রে সমতা আনয়ণের পক্ষে তারা অভিযোগ উত্থাপন করছেন যে, যেকোনো বাছাই পদ্ধতি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বা কমিউনিটির জন্য ক্ষতিকর। নিউইয়র্ক সিটির জনগোষ্ঠীর মধ্যে এমনিতেই যে আয় বৈষম্য রয়েছে, সেক্ষেত্রে স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে সার্বজনীনতা না থাকলে অর্থনৈতিক বৈষম্য আরো বৃদ্ধি পাবে এবং সামাজিক শৃংখলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্কুল চ্যান্সেলর ডেভিড সি ব্যাংকস তার মতামত দিয়ে বিতর্ককে আরো খানিকটা উস্কে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সকল ছাত্র গুরুত্বপূর্ণ। অভিভাবকরা যাদের ঘুম থেকে উঠিয়ে মুখে পানির ছিটা দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে পাঠান তাদের চেয়ে যারা সত্যিকার অর্থেই কঠোর পরিশ্রম করে তাদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। তবে তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দায়িত্ব ছেড়ে দেন স্কুল সুপারিণ্টেন্ডেন্টদের ওপর। তারা তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে মিডল স্কুলগুলোর প্রিন্সিপাল ও অভিভাবকদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় নিয়ে আলোচনা করেন যে স্কুলগুলোতে আগেকার মেধা ভিত্তিক ভর্তি পদ্ধতি ফিরিয়ে আনা হবে, না কি নতুন এক পদ্ধতি গ্রহণ করে লটারির ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়া, যা করোনা মহামারীকালে চালু করা হয়েছে তা বহাল রাখা হবে।
স্কুল সুপারদের মধ্যে বেশ কিছু সুপর রয়েছেন, যারা সিটির ৩২টি কমিউনিটি স্কুল ডিস্ট্রিক্টের তদারকি করেন, তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তারা মিডল স্কুলে বাছাই করে ভর্তি করা কমানোর ব্যবস্থা করা অথবা পুরোপুরি নিমূল করার সুপারিশ করবেন। কিছু স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে সাবেক নিয়ম পুনর্বহাল করা হবে। সিটির প্রায় ৫০০ মিডল স্কুলে মহামারীকালে লটারির মাধ্যমে ভর্তির ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল, যখন ভর্তির জন্য পরীক্ষা গ্রহণ, গ্রেডিং করা, স্কুলে হাজিরাসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছিল। ওই সময়েও ৪০ শতাংশ ছাত্র বাছাই প্রক্রিয়ায় স্কুলে ভর্তি হযেছে।
এসব স্কুলের অধিকাংশই ম্যানহাটান ও ব্রুকলিনে অবস্থিত এবং এই স্কুলগুলোতে কৃষ্ণাঙ্গ, ল্যাটিনো ও স্বল্প আয়সম্পন্ন পরিবারের সন্তান সংখ্যা অন্যান্য স্কুল ডিস্ট্রিক্টের চেয়ে অনেক কম, অথবা নেই বললেই চলে। অতএব জাতিগোষ্ঠী ও আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল পর্যায়ের ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে সমতা আনার পক্ষে সিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে, তাদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে বাছাইকৃত ভর্তি সমাজে বৈষম্য বৃদ্ধি করবে, সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত বলে অনেকে মনে করেন।
Posted ১২:২০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh