বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
বন্দুক সহিংতায় বাফেলোতে নিহত ১০ : সারাদেশে ২০২০ সালে ৪৫ হাজার ২২২ জনের মৃত্যু : বাফেলোতে ১০ জন নিহত

যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে দৈনিক গড় প্রাণহানি ১২৪

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে দৈনিক গড় প্রাণহানি ১২৪

যুক্তরাষ্ট্রের খোলাবাজারে আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতায় প্রাণহানি কিছুতেই কমছে না। গুলিতে প্রাণহানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দিন দিন বাড়ছে আগ্নেয়াস্ত্র উৎপাদন ও বিক্রি। করোনা মহামারিকালে দশ লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি আমেরিকানরা। এমন একটি দুঃসময়ে উল্টো বেড়েছে বন্দুক সহিংসতা ও বর্ণ-বৈষম্যমূলক আচরণ। বাফেলোর টপস সুপার মার্কেটে গুলিতে ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গের নিহতের ঘটনায় রাজনৈতিক মহল সহ হোয়াইট হাউজ প্রশাসনের টনক নড়েছে। নূতন করে দাবি উঠেছে বন্দুক সহিংসতা বন্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন সংস্কারের। বাফেলো হত্যাকান্ডের পর বন্দুক সহিংসতায় দেশজুড়ে সংঘটিত মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান বেড়িয়ে এসেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা দীর্ঘদিনের সামাজিক সমস্যা। এর সমাধানে নানাভাবে চেষ্টা করছে দেশটির সরকার। কিন্তু কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। দেশটির কোথাও না কোথাও প্রায় প্রতিদিনই বন্দুক হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

শুধু চলতি বছরের ১৯ সপ্তাহেই গুলিতে প্রাণ গেছে ৭ হাজার মানুষের। এসময় বন্দুক সহিংসতার বড় ঘটনা ঘটেছে ২০১টি। প্রায় একযুগের এক পরিসংখ্যান দেখা যায় ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের গুলিতে প্রতিবছর গড়ে প্রাণহানির সংখ্যা ছিলো ৩৬হাজার ৩৮৩জন। সে হিসেবে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু সংখ্যা ছিলো ১০০ জন। ২০২০ সালে এসে বন্দুকের গুলিতে রেকর্ড সংখ্যক সর্বাধিক ৪৫ হাজার ২২২ জন মানুষের মৃত্যু হয়। সিডিসি’র মৃত্যূ পরিসংখ্যানে ১৯৬৮ সালের পর বন্দুকের গুলিতে এতো মানুষের আর মৃত্যু হয়নি কখনো। বছরটিতে গড়ে প্রতিদিন প্রাণহানি ঘটেছে ১২৪ জন মানুষের। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিলো ৩৯ হাজার ৭০৭ জন। বন্দুকের গুলিতে নিহত ৬০ শতাংশই আত্মহত্যা জনিত। যাতে নিজেদের বন্দুকের গুলিতে নিজেরাই বেছে নেয় আত্নহননের পথ। বন্দুকের গুলিতে খুনের সংখ্যা বছরে গড়ে ১২ হাজার ৮৩০জন। যার আনুপাতিক হার ৩৫শতাংশ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে বছরে মারা যায় ১.৪ শতাংশ মানুষ। যার সংখ্যা ৪৯৬ জন। অপরদিকে অনিচ্ছাকৃত যা অসাবধানতাবশত গুলিতে মারা যায় ৪৮৭ জন আমেরিকান। এই হার ১.৩ শতাংশ। এছাড়া অনিরূপিত মৃত্যুর সংখ্যা ২৯৫ জন। যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যামান দুর্বল বন্দুক আইন ও আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হওয়ার কারণে প্রতিদিন প্রাণহানি ঘটছে বেঘুরে। বন্দুক সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটে ১০ স্টেটে। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমেরিকানদের বন্দুকের গুলিতে মৃত্যুর সম্ভাবনা ২৫ শতাংশ বেশি। এদেশে ৫১ শতাংশ মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নেয় বন্দুকের গুলিতে। বন্দুকে গুলি সার্বক্ষণিক লোড করা থাকে এমন পরিবারে বড় হচ্ছে ৪৬ লাখ শিশু। ফলে বছরে মারা যাচ্ছে ১ হাজার ৫’শ শিশু। পুলিশের গুলিতে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের মৃত্যুহার পাঁচগুণ বেশি। বন্দুক সহিংসতার খাতে বার্ষিক ব্যয়ের পরিমাণ ২২৯ বিলিয়ন ডলার। সবকিছু মিলিয়েই তৈরী করা হয় বার্ষিক পরিসংখ্যান। বিগত বছরগুলোতে তরুণ আমেরিকানদের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল গাড়ি দুর্ঘটনা। এরপরই ছিল বন্দুক হামলা ও গুলিজনিত মৃত্যু।


সবচেয়ে বড় ভয়ানক সংবাদ হলো যুক্তরাষ্ট্রে মোট জনসংখ্যার চেয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা অধিক। প্রায় ৩৩ কোটি মানুষের দেশে বেসামরিক ব্যক্তিদের হাতে রয়েছে প্রায় ৪০ কোটি অস্ত্র। গোটা বিশ্বের বেসামরিক মানুষ ব্যক্তিগতভাবে যত অস্ত্র বহন করে তার ৪৬ শতাংশেরই মালিকানা আমেরিকানদের। যুক্তরাষ্ট্রে ১০০ নাগরিকের জন্য রয়েছে গড়ে ১২১টি আগ্নেয়াস্ত্র। করোনাকালে ১০২০ সালে আগ্নেয়াস্ত্র উৎপাদন তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে।

বাফেলো হত্যাকান্ডের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সস্ত্রীক এবং নিউইয়র্ক গভর্নর ক্যাথি হকুল ছুটে গিয়েছেন সেখানে। তারা এই হত্যাকান্ডকে দেশটির অভ্যন্তরীন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বলে আখ্যায়িত করেছেন। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রসঙ্গটি জনসমক্ষে এসেছেন নূতন করে। প্রতিটি বড় বন্দুক সহিংসতার পর এমনটি ঘটে থাকে। পরবর্তীতে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। রিপাবলিকানদের মদদপুষ্ট ন্যাশনাল রাইফেল এসোসিয়েশন-এনআরএ অত্যন্ত প্রবাবশালী একটি সংগঠন। তাদের বিরোধিতার কারণে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন আলোর মুখ দেখতে পারেনি। এবারো হয়তো বিষয়টি সেদিকেই গড়াবে।


যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ বছরের মধ্যে গুলিতে সর্বোচ্চ নিহতের ঘটনা ২০২০ সালে

করোনা ভাইরাস মহামারীর প্রথম বছরে অর্থ্যাৎ ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে সৃষ্ট সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা ছিল ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত সর্বোচ্চ সংখ্যা। ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গুলিতে নিহতের সংখ্যা এর পূর্ববর্তী ২৫ বছরের চেয়ে ৩৫ শতাংশ অধিক ছিল। শুধু ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সকল হত্যার ঘটনায় ৭৯ শতাংশই গুলিতে এবং আত্মহত্যার ক্ষেত্রে ৫৩ শতাংশ গুলিতে নিজের নেয়ার পথ অবলম্বন করেছে। আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে কিছু জাতিগত গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমাগত বেড়ে চলায় গবেষকরা এর কারণ নির্ণয়ে দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন। ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর গবেষণায়ও এর কোনো কুলকিনারা পাওয়া যায়নি।


ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড কন্ট্রোল এর ডাইরেক্টর ডা: ডেবরা হাউরি বলেছেন আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে আহত হওয়ার সমস্যা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম স্বাস্থ্য সমস্যা। আমি হাসপাতালের ইমার্জেন্সি রুমের একজন চিকিৎসক হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসার রোগীদের পরিবারগুলোর কষ্ট ও যাতনা দেখেছি যে আগ্নেয়াস্ত্র কী ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে এবং কেন অবিলম্বে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা প্রয়োজন। সিডিসির ভায়োলেন্স প্রিভেনশন ডিভিশনের এসোসিয়েট ডাইরেক্টর ফর সায়েন্স থমাস সাইমন বলেন, গুলি করে আত্মহননের ঘটনা বেড়েছে। ২০১৯ সালে যেখানে গুলিতে আত্মহত্যা করেছিল ১৪,৩৯২ জন, ২০২০ সালে তা প্রায় ৫ হাজার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯,৩৫০ জনে। অতএব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।

এদিকে নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলোর মানুষের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে হত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। থমাস সাইমন আরও বলেন, কৃষ্ণাঙ্গ জাতিগোষ্ঠীর ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী বালক ও তরুণরা সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ। একই বয়সের শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনা ২১ গুণ বেশি। কিন্তু সিডিসি লক্ষ্য করেছে যে তরুণরা হত্যার শিকার ও আত্মহত্যাপ্রবণ হলেও যুক্তরাষ্ট্রে সকল বয়সী মানুষই আগ্নেয়াস্ত্রের গুলির শিকার হয়ে মারা পড়ছে। সর্বোচ্চ হত্যাকান্ড ১০ থেকে ৪০ বয়স গ্রুপে এবং এই গ্রুপেও কৃষ্ণাঙ্গরাই সংখ্যায় বেশি।

২০১৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে আত্মহত্যার হার কমবেশি একই রকম ছিল। তবে ৪৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষের মধ্যে এই সময়ে গুলিতে আত্মহত্যা করার ঘটনা বেড়েছিল এবং সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে আমেরিকান ইন্ডিয়ান এবং আলাঙ্কার আদিবাসীদের মধ্যে। থমাস সাইমন গুলিতে হত্যা ও আত্মহত্যার উচ্চ হারের পেছনে দারিদ্রকে মুখ্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার মতে দারিদ্র এবং হত্যা ও আত্মহত্যার মধ্যে দারিদ্রের হার কোনো জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, সকল জাতিগোষ্ঠী ও শ্রেনির মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের আয়ের তুলনায় সকল পন্য ও সার্ভিসের মূল্য যদি বেড়ে যায় তখন তারা সঙ্কট সমাধানের সহজ উপায় হিসেবে হত্যা ও আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

থমাস সাইমন বলেন, “দারিদ্রের সঙ্গে বহুকিছু জড়িত। আয় বৈষম্যের কারণে সমাজে অসাম্য এবং কাঠামোগত বর্ণবাদের উপস্থিতি, সাধ্যের মধ্যে আবাসনে ঘাটতি এবং শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে অসমতা বিরাট হয়ে দেখা দিয়েছে, যা কাটিয়ে উঠার জন্য আমাদের নীতিনিধারকরা উপযুক্ত উপায় গ্রহণ করছেন না।
করোনা মহামারীর প্রেক্ষাপটে গুলিতে হত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনা বৃদ্ধির পেছনেও গবেষকরা আয় বৈষম্যকেই দায়ী করেছেন। এবং যেহেতু পরিস্থিতি থেকে যুক্তরাষ্ট্র এখনও বের হয়ে আসতে পারেনি এবং বাড়িভাড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য এবং সকল সেবার মূল্য বৃদ্ধির কারণে আয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অসাম্য সৃষ্টি হয়েছে, সেজন্য সামনেও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার মাধ্যমে হত্যা ও আত্মহত্যা বাড়বে বলে মনে করছেন গবেষকরা। অবশ্য তারা দারিদ্রের পাশাপাশি করোনাকালে সেবা না পাওয়া, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, চাকুরি হারানো, অর্থনৈতিক চাপ ইত্যাদিকেও দায়ী করেছেন হত্যা ও আত্মহত্যার কারণ হিসেবে। এই নৈরাশ্যজনক চিত্রের মধ্যেও তিনি আশা পোষণ করেন যে আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা কমানো সম্ভব। কিন্তু আমরা কখনও এ ব্যাপারে যথাযথ কোনো পদক্ষেপ নেইনি।

বাফেলোতে ১০ জন নিহত

যুক্তরাষ্ট্রে এ বছরের সাড়ে চার মাসে সংঘটিত দুশ’র অধিক ব্যাপক বিধ্বংসী গুলিবর্ষণের ঘটনার মধ্যে গত ১৪ মে শনিবার নিউইয়র্ক স্টেটের উত্তরাঞ্চলীয় সিটি বাফেলোতে গুলিবর্ষণের ঘটনা ছিল ভয়াবহতম। বাফেলো সিটির শপিং সেন্টারে এক শ্বেতাঙ্গ তরুণের এলোপাতারি গুলিবর্ষণে ১০ ব্যক্তি নিহত এবং ৩ জন আহত হয়। হতাহত ১৩ জনের মধ্যে ১১ জনই কৃষ্ণাঙ্গ। সিটির জেফারসন এভিনিউ ও ল্যান্ডন স্ট্রিটের কাছে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ‘টপস’ নামে এক স্টোরে প্রবেশ করে এলোপাতারি গুলি চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

গার্ডকে হত্যা করে ঘাতক শ্বেতাঙ্গ যুবক। পুলিশ ঘাতককে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। এর আগে শপিং সেন্টারের সিকিউরিটি তিনি পেনসিলভানিয়া সীমান্তের কাছাকাছি নিউইয়র্কের সাউদার্ন টায়ারের বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, বর্ণবাদে উৎসাহী হয়ে পেটন এই হামলা চালান। নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হচুল বলেন, হামলাকারী তাঁর ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি প্রচার করেছেন। যে প্ল্যাটফর্ম থেকে এটি সম্প্রচার করা হয়েছে, তারা কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি হতাশ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাফেলোর ঘটনাটিকে ‘ঘৃণ্য’ কাজ আখ্যায়িত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঘৃণার কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই। ঘৃণা থেকে সৃষ্ট সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে সামর্থ্যের সবকিছুই করতে হবে। এর আগে গত মার্চে ক্যালিফোর্নিয়ার সাক্রামেন্টো শহরের একটি গির্জায় গুলি চালিয়ে নিজের অপ্রাপ্তবয়স্ক তিনজন সন্তানকে হত্যা করেন এক বাবা। পরে তিনি আত্মহত্যা করেন। অন্যদিকে এপ্রিলে অঙ্গরাজ্যটির একই শহরের সড়কে বন্দুকধারীর গুলিতে কমপক্ষে ৬ জন নিহত ও ৯ জন আহত হন।

সমাজবিজ্ঞানীরা এ ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণ-বিদ্বেষের সর্বশেষ জঘন্য দৃষ্টান্ত বলে বর্ণূনা করেছেন। নন-প্রফিট সংস্থা ‘দ্য গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ’ এর হিসাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে চলতি বছর এ পর্যন্ত ২০১ টি ব্যাপক ধ্বংসকারী গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কোনো গুলিবর্ষণের ঘটনায় চার বা অধিক সংখ্যক ব্যক্তি হতাহত হলে সেটিকে ‘মাস শ্যুটিং’ বা ব্যাপক ধ্বংসকারী গুলিবর্ষণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ঘটে যাওয়া ২০১টি ঘটনার মধ্যে নয়টি ঘটনায় চারের অধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি জানিয়েছে যে গতবছর দেশে ৬৯৩টি ব্যাপক ধ্বংসকারী গুলিবর্ষণের ঘটনার ঘটেছে, যার মধ্যে ২৮টিতে চার জন বা আরও অধিক সংখ্যক নিহত হয়েছেন।

উইজকনসিন থেকে ক্যালিফোর্নিয়া পর্যন্ত এলাকাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন পরিবেশে গুলিবর্ষণের ঘটনাগুলোতে কয়েক ডজন লোক নিহত বা আহত হয়েছে, যার মধ্যে মিলওয়াকির একটি বাড়িতে, আরকানসাসে একটি গাড়ি প্রদর্শনীতে, ডাউনটাউন স্যাক্রামেন্টো ও মিসিসিপির হোটেলে। এইসব ঘটনার সবগুলোই ঘটেছে গত উইকএন্ডের আগে, তিন দিনে চারটি গুরুতর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার মিলওয়াকির ডাউনটাউন এলাকায় গুলির ঘটনার পর শনিবার বাফেলোতে, রোববার টেক্সাসের হিউস্টনে এক ফ্লি মার্কেটে এবং ক্যালিফোর্নিয়ার লেগুনা উডসে এক চার্চে।

এবার ক্যালিফোর্নিয়ায় গির্জায় গুলি, একজন নিহত : যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গির্জায় বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। স্থানীয় সময় গত ১৫ মে বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। নিউইয়র্কের বাফেলো শহরে একটি সুপারমার্কেটে বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হওয়ার একদিন পর এ ঘটনা ঘটল।

ক্যালিফোর্নিয়ার লসঅ্যাঞ্জেলস শহরের অরেঞ্জ কাউন্টির শেরিফের দপ্তর টুইট বার্তায় জানায়, গত ১৫ মে বিকেলে স্থানীয় জেনেভা প্রিসবেটেরিয়ান গির্জায় বন্দুকধারীর গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতের সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। গির্জায় গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে অস্ত্রসহ আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। তবে তাঁর নাম-পরিচয় জানানো হয়নি। এই ঘটনার কারণ সম্পর্কেও প্রাথমিকভাবে কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

advertisement

Posted ৭:২২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ মে ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.