বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের মনোনয়নের বিষয়টা থেকে বেরিয়ে এসেছে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে আসা নারীদের কী ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে এবং কীভাবে এ ক্ষেত্রে অবস্থার পরিবর্তন আসছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের অবচেতনে নারী আর পুরুষকে বৈষম্যের চোখে দেখার যে সংস্কৃতি রয়েছে, তাতে একজন পুরুষের যে আচরণকে ‘আত্মবিশ্বাসী’ হিসেবে দেখা হবে, সেখানে একজন নারীর একই আচরণকে ‘ক্ষমতার জাহির’ হিসেবে গণ্য করা হয়। আবার ওই নারী যদি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হন, এই বৈষম্যের ক্ষেত্রে বর্ণের ব্যাপারটাও যোগ হয়।
রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান উইমেন অ্যান্ড পলিটিকসের পরিচালক ডেবি ওয়ালশের এক বিশ্লেষণে বিষয়টি উঠে এসেছে। ওয়ালশ বলেন, একটা অভিযোগ আছে যে নারীরা প্রেসিডেন্ট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো শক্ত মনের নন, তাদের যথেষ্ট দৃঢ়তা নেই। কিন্তু চরিত্রের দৃঢ়তা বা আপনার কঠিন হওয়ার ক্ষমতা আপনি কীভাবে দেখাবেন, যদি আপনার রাগ আপনি প্রকাশ করতে না পারেন।
তিনি মনে করেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট টিভি বিতর্কের সময় কমালা হ্যারিস দলের মত তুলে ধরেছেন বেশ সাফল্যের সঙ্গেই। কিন্তু তার মতে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মনে হয়েছে তিনি যথেষ্ট শক্ত অবস্থান নেননি। যদিও তিনি মনে করেন, তাকে কথা বলতে বাধা দেওয়ার সময় মিস হ্যারিস যেভাবে বিনীত সুরে তার উত্তর দিয়েছেন, তা ছিল ‘দুর্দান্ত’। নারীদের কথা বলতে না দিয়ে তাদের কথার ওপর পুরুষদের কথা চাপিয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতা যেসব নারীর হয়েছে, তারা কমালা হ্যারিসের অনুভূতি পুরোই উপলব্ধি করতে পেরেছেন বলে ওয়ালশের মত।
অবশ্য কিছু বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেখাবেন, কোনো নারী যোগ্য কি না, তা প্রমাণ করতে হলে তাকে প্রচারণার সময় পুরুষের থেকে আরও ভালো করতে হবে। ভোটারদের কাছে প্রার্থীর লিঙ্গ কোনো বিবেচ্য বিষয় না হলেও নারী প্রার্থীদের যোগ্যতার বাড়তি প্রমাণ দিতে হবে। একজন পুরুষ প্রার্থী যোগ্য সেটা মানুষ ধরেই নেয়, কিন্তু নারী প্রার্থীকে তার প্রমাণ দেখাতে হয়।
গত আগস্ট মাসে ইকোনমিস্ট সাময়িকী ও ইউগভের চালানো যৌথ সমীক্ষায় দেখা যায়, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স হ্যারিসের চেয়ে পছন্দের বিচারে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২৫ শতাংশ বলেন, হ্যারিস সম্পর্কে তাদের ধারণা স্পষ্ট নয়, আর মি. পেন্স সম্পর্কে একই মতামত দেন মাত্র ১৪ শতাংশ।
কিন্তু বিতর্কের পরও জরিপে দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন, প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে পেন্স সুযোগ্য হবেন। এ ব্যাপারে হ্যারিসকে যোগ্য মনে করেছেন ৫০ শতাংশ আমেরিকান।
নিরপেক্ষ ভোটারদের মধ্যে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পেন্সের সক্ষমতার ওপর আস্থা রাখেন, আর ৪৪ শতাংশ মিস হ্যারিসের যোগ্যতার ওপর আস্থাশীল।
এ বিষয়ে ওয়ালশের ব্যাখ্যা, আমেরিকায় রাজনীতিতে জড়িত পুরুষরা সব সময়ই তাদের পরিবারের একটা চিত্র তুলে ধরেন। কারণ সেটা সব সময়ই একটা বাড়তি মূল্য যোগ করে। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে তা উল্টো হয়ে যায়।
তিনি ২০০৮-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী সারা পেলিনের উদাহরণ টেনে আনেন। সে সময় পরিবারে তার দায়িত্ব নিয়ে শ্যেন দৃষ্টি রেখেছিল এবং ব্যাপক কাটাছেঁড়া করেছিল সংবাদমাধ্যম এবং কিছু ডেমোক্র্যাট সদস্য। ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারিকে নিয়েও একই ধরনের কথা শোনা গেছে আমেরিকাজুড়ে।
Posted ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৬ অক্টোবর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh