বাংলাদেশ অনলাইন : | শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে রেস্তোরাঁর ভেতরে খরিদ্দারদের বসে খাওয়া নতুন ঘোষণায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে এসব ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের মাঝে। তবে রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ তাদের ধারণ ক্ষমতার ২৫ শতাংশ খরিদ্দারকে প্রতি দফায় ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারবেন। দেশটিতে করোনাভাইরাস মহামারিতে রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া নিষিদ্ধের পর প্রায় অচল হয়ে পড়েছে রেস্তোরাঁ ব্যবসা। গত ৭ মাস ধরে চলছে এ অচলাবস্থা। ফলে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৭শত ৫৫ টি রেস্তোরাঁর ১ কোটি ৫০ লাখ ১ হাজার কর্মচারী প্রায় বেকার হয়ে পড়েছে।
নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো গত ১৬ সেপ্টেম্বর এক ঘোষণায় রেস্তোরাঁ চালুর এ অনুমতি দিয়েছেন। ঘোষণায় বলা হয়, রেস্তোরাঁয় খরিদ্দারদের প্রবেশে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ রয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে তা প্রত্যাহার করা হবে। মহামারি থেকে মুক্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তনে আর এক দফা পদক্ষেপ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।
২৫ শতাংশ খরিদ্দারদের রেস্তোরাঁর ভেতরে বসে খাওয়া-দাওয়ার এই অনুমতিকে করোনাভাইরাস থেকে নিউইয়র্ক সিটির মুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তে পর্যটনের এই নগরীতে পর্যটকদের এবং নাগরিক সাধারণকে এই সবুজ সংকেত দিচ্ছে যে, এই শহর করোনামুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরে যাচ্ছে।
তবে খরিদ্দারদের জন্য খুলে দেয়া হলেও অনেক রেস্তোরাঁ তাদের দুরবস্থা থেকে সহজে মুক্ত হতে পারবে বলে মনে হয় না। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সংকট, অন্যদের সঙ্গে মেলামেশায় বহু আমেরিকানের অনীহা এবং বিশেষ করে আসন্ন শীত মৌসুমে রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে আবহাওয়াগত সীমাবদ্ধতা অনেকের জন্যই ব্যবসা পরিচালনার প্রতিকূল হয়ে দাঁড়াবে।
রেস্তোরাঁর ভেতরে খাওয়া-দাওয়ার অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা গভর্নর কুমো এবং মেয়র ব্লাজিও তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাতিল করে দিয়েছিলেন। তখন পর্যন্ত নিউইয়র্ক স্টেটে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এখন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সংক্রমণের হার এক শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে গভর্নর অন্য আরও কিছু পদক্ষেপের মতো রেস্টুরেন্ট ব্যবসার হতাশা ও লোকসান দূর করার জন্য এগুলোকে খরিদ্দারদের জন্য খুলে দেয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গভর্নরের এই পরিকল্পনা অনুযায়ী রেস্তোরাঁগুলোর ভেতরের টেবিলগুলো সরিয়ে শুধু ২৫ শতাংশ টেবিল রাখা যাবে।
গত জুন থেকে রেস্তোরাঁগুলোকে যে বাইরের সেবার অনুমতি দেয়া হয়েছিল শীতে সে সার্ভিস অব্যাহত রাখা যাবে না। এই অবস্থায় রেস্তোরাঁ শিল্পকে রক্ষার স্বার্থে ভেতরের সেবা প্রয়োজনীয়তার বিষয় পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
রেস্তোরাঁ খুলে দেয়ার পর করোনা সংক্রমণের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সিটির স্কুলগুলো যখন আবার শুরু হচ্ছে তার পরপরই রেস্তোরাঁগুলো খোলা হচ্ছে। অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তরা জানিয়েছেন, সিটির বাইরে যেসব স্থানে রেস্তোরাঁ ও বার চালু হয়েছে সেসবস্থান থেকে ১০ শতাংশ সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
তারা বলেছেন, রেস্তোরাঁ কেবলমাত্র একজন মালিকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নয়, একটি রেস্তোরাঁ মানে তার রান্নাঘর এবং অন্যান্য সেবার কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্র। রেস্তোরাগুলোঁ রোগ সংক্রমণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থান। আবার রেস্তোরাঁ খুলে না দিলে তারা বড় ধরনের আর্থিক লোকসানের মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার ৭শত ৫৫টি রেঁস্তোরা রয়েছে। এসব রেস্তোরাঁয় ১ কোটি ৫০ লাখ ১ হাজার কর্মচারী প্রায় বেকার হয়ে পড়েছে। নিউইয়র্কের রেস্তোরাঁ মালিকরা তাদের ব্যবসার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে ক্ষতির কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি গভর্নর ও মেয়রের বিরুদ্ধে ২ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেছেন।
Posted ১:৪২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh