যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি নেই প্রায় এক দশক। এসময়কালে দলটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় কোন কোন ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হলেও কখনোই অবসান ঘটেনি বিভক্তির। মূলত নেতৃত্বের কোন্দলের কারণে বহুধাবিভক্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি একক ও ঐক্যবদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শক্তি সঞ্চয় করতে পারেনি বর্হিবিশ্বে সময়োচিত আন্দোলন গড়ে তুলতে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র বিভক্তির জন্য যতোটা না দায়ী দলটির আভ্যন্তরীন কোন্দল তার চেয়ে অনেক বেশী দায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। স্বার্থবাদী এসব নেতারাই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন্দল এবং বিভক্তি জিইয়ে রেখেছে বলে মনে করেন দলের স্থানীয় ত্যাগী নেতা কর্মীরা। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি না থাকলেও তা নূতন করে গঠনের কার্যত কোন উদ্যোগ কখনোই গ্রহণ করেননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অথচ এসময়ে বার কয়েক নূতন করে কমিটি করা হয়েছে যুক্তরাজ্যে।

বর্হিবিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্ববহণকারী যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে অবজ্ঞা করে এভাবেই সংগঠনটির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। ফলে কার্যকর কোন ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে বারবার হোঁচট খাচ্ছে সংগঠনটি। তারপরও শহীদ জিয়ার আদর্শের এসব সৈনিকদেরকে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। ফলে জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকীকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিভক্তি পৌছে চরমে। বিভিন্ন নাম ও ব্যানারে নিউইয়র্ক সিটিতেই অনুষ্ঠিত হয় প্রায় ৮টি অনুষ্ঠান। অতীতে এ দিবসটি ঘিরে এতোগুলো অনুষ্ঠান আয়োজনের নজির নেই।

সাম্প্রতিককালে সংগঠনটির এ বিভক্তি আরো বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে বিকল্প হিসেবে গঠিত “সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি’কে দায়ী করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। তাদের মতে গত ২৬মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত হওয়ার একমাস পর যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে ৫০১ জনের কমিটি করার বিষয়টি ছিলো অসময়োচিত ও হাস্যকর। দেশে কেন্দ্রীয় বিএনপি যেখানে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে বিরত ছিলো সেখানে যুক্তরাষ্টে বিলম্বিত এই কমিটির হেতু নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বাতিঘর বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী এবং অসুস্থ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাসিত। লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা-হুলিয়া। অনেকে শিকার হয়েছেন খুন গুমের। সরকারের নির্বতনমূলক আচরনে যেখানে ত্রাহি অবস্থা দলটির। সেখানে আন্দোলনের ডাক না দিয়ে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি কতোটা সময়োপযোগী এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

এছাড়া সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটিতে নেতাকর্মীদের অবস্থান ও যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় বেড়ে গেছে বিভক্তির মাত্রা। ফলে বিলাস বহুল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সিংহভাগ নেতা ছিলেন অনুপস্থিত। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যেকোন কমিটি গঠনের জন্য স্থানীয় নেতা কর্মীরা ভূমিকা রাখতে চান। লন্ডন বা বাংলাদেশ থেকে নেতা পাঠিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তারা অখুশী। তারা চান যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মুল কমিটি। যার মাধ্যমে তারা আন্দোলন গড়ে তুলতে চান বর্হিবিশ্বের। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকীতে তারা একটি বৃহত্তর এবং মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনে উদ্যোগী ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। আর যতোদিন একাজটি না হবে ততোদিন বিভেদ বিভক্তির কোন অবসান হবে এমনটি মনে করেন না যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতাকর্মীরা।