ভাড়াটিয়াদের বিতাড়নের উদ্দেশ্যে বাড়ি মালিকরা তাদের ভবনগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার না করে ক্রমে জরাজীর্ণ হওয়ার জন্য সংস্কারহীন অবস্থায় রাখায় নিউইয়র্ক সিটির ১,৪০০ এর অধিক আবাসিক বিল্ডিংয়ের ভাড়াটিয়ারা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এর মধ্যে ৭৯৫টি আবাসিক ভবনই সেন্ট্রাল ব্রুকলিন এলাকায় অবস্থিত। অবশিষ্ট ভবনের অধিকাংশই আপার ম্যানহাটান ও সাউথ ব্রঙ্কসে। সিটি ডিপার্টমেন্ট অফ বিল্ডিংস ও ডিপার্টমেন্ট অফ হাউজিং প্রিজারভেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট চলতি সপ্তাহে ঘোষণা করেছে যে ভবনগুলোর বিপজ্জনক কিছু মেরামতে অবহেলা প্রদর্শন অথবা ঢিমে তালে সংস্কার কাজ চালিয়ে বাড়ি মালিকরা সিটির আইন লংঘন করছে এবং এ কারণে সিটি কর্তৃপক্ষ তাদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ডিপার্টমেন্ট অফ বিল্ডিংস ভবনগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যেসব ভবনের জরুরী সংস্কার না করায় ২০১৯ সালে সিটি কাউন্সিলের পাসকৃত স্থানীয় আইন ১০৪ অনুযায়ী বিল্ডিং পারমিটে নিয়ন্ত্রণ আরো করা হয়েছে। কৌশলে ভাড়াটিয়াদের তাড়ানোর উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ভবনকে ব্যবহার অযোগ্য করে তোলার ঘটনা প্রমাণিত হলে ডিপার্টমেন্ট অফ হাউজিং বাড়ি মালিকদের উপর জরিমানা ধার্য করতে পারবে। তালিকাভূক্ত ভবনগুলোর মালিকরা ভবনগুলোর জরুরী মেরামত না করায় অনেক ভবনে বসবাস করা ইতোমধ্যে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। প্রায় অর্ধেক বাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ভায়োলেশন এর অভিযোগ রয়েছে বলে সিটির রেকর্ডে দেখা যায়। সিটি বিল্ডিংস কমিশনার মেলানি ডি রোকা বলেছেন, ভবনগুলোর তালিকা প্রকাশ করার পেছনে অন্যতম কারণ হলো সংশ্লিষ্ট ভবনগুলোর বাসিন্দারা স্থির করবেন যে কোন্ বাড়ি মালিক ভবনের অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার কাজ বন্ধ রেখেছে এবং ভাড়াটিয়াদের হয়রানি করার জন্য কোথায় ভবনে অহেতুক নতুন কোনো কাজ করা হচ্ছে। এ ধরনের বাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে সিটির আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সিটির কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তালিকাভূক্ত ভবনগুলোর মালিকরা ইতোমধ্যে যেসব ভায়োলেশন করেছে সেগুলোর প্রতিবিধান না করা পর্যন্দ ডিপার্টমেন্ট অফ বিল্ডিংসের পারমিট লাভের উপযুক্ত বিবেচিত হবে না। সিটি কাউন্সিলওম্যান মার্গারেট চিন বলেছেন, প্রত্যেকে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করার অধিকার রাখে। বাজে বাড়ি মালিকরা যখন ভাড়াটিয়াদের মৌলিক প্রয়োজনগুলো নিশ্চিত করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে তখন সিটির ওপর দায়িত্ব বর্তায় তাদেরকে সকল দিক থেকে অভিযুক্ত করা। তিনি আরও বলেন, বাড়ি মালিকরা ভাড়াটিয়াদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করার নামে তাদেরকে নাস্তানাবুদ করে, কিন্তু মালিকের ব্যবস্থাপনার ইতিহাস জানার কোনো সুযোগ ভাড়াটিয়ার থাকে না। সবকিছুর মাঝে স্বচ্ছতা থাকা জরুরী। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাড়ি মালিকরা নিজেদেরকে শুধরে নেবে। ভাড়াটিয়ারা যে ভবনে বসবাস করছেন সেখানে বসবাসের পরিবেশ যদি অনুকূল না থাকে তাহলে তাদেরকে ৩১১ ফোনে কল করে অভিযোগ জানাতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।