বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২
গত কয়েক দশক যাবত ফ্লোরিডা ও ওহাইয়ো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে রেখেছিল এবং প্রেসিডেন্টের মাথায় মুকূট পরাতে এই দুই স্টেটের ভূমিকা ছিল মুখ্য। শিল্প প্রধান ক্লিভল্যান্ড মুখোমুখি ছিল শ্বেতাঙ্গ প্রধান সিনসিনাটির, অরল্যান্ডোর শহরতলিতে বসবাসকারী পুয়োর্টো রিকোর ইমিগ্রান্টদের বিরুদ্ধে ছিল মিড-ওয়েস্টার্ন গ্রামগুলোর শ্বেতাঙ্গরা। কিন্তু ২০২২ সালে মধ্যমেয়াদী নির্বাচনে জর্জিয়ার রান-অফ এসব জটিলতাকে হয়তো পরিবর্তনের ইঙ্গিত নিয়ে এসেছে।
জর্জিয়ার সিনেট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক ক্রীড়াবিদ হার্শেল ওয়াকারের বিরুদ্ধে ডেমোক্রেট রাফায়েল ওয়ারনকের বিজয় প্রমাণ করেছে যে দুই বছর আগে জর্জিয়ায় ডেমোক্রেটদের উত্থান ট্রাম্প যুগের কোনো অঘটনের কারণে অথবা একজন অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাবের কারণে ছিল না, বরং এটি ছিল সেই স্টেটের সিভিল রাইটস আন্দোলনের অতীত ঐতিহ্যে প্রত্যাবর্তন। জর্জিয়া এখন ওইসব ছোট স্টেটগুলোর একটি, যে স্টেটগুলো পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে।
রাফায়েল ওয়ানকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রোডম্যাপের চূড়ান্ত দিক, যা রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনৈতিক নীতিনির্ধারক ও রাজনীতিবিদরা এখন বলছেন যে ছয়টি রাজ্যই নির্ধারণ করবে যে ২০২৪ সালের নির্বাচনে কোন দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিজয় লাভ করবেন। এই স্টেটগুলো হচ্ছে: অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, পেনসিলভেনিয়া ও উইজকনসিন। রাজনীতি যে ট্রাম্প যুগের মেরুকরণ প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৈচিত্রময় জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়কে স্বীকার করে নিচ্ছে তা এখন স্পষ্ট। ট্রাম্পের সময়ে শ্বেতাঙ্গদের একটি বড় অংশ ও শ্রমজীবী মানুষ ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছিল মুখ্যত ট্রাম্পের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক আবেদন ও অভিজাত-বিরোধী বাগাড়ম্বরের কারণে, কিন্তু এখন জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের কারণে আমেরিকার পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র উন্মুক্ত করেছে।
তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি গ্রহণকারী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য এটা কোনো সুখবর নয়, যিনি দুই বছর আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে উপরোক্ত ছ’টি স্টেটেই পরাজিত হয়েছিলেন। রিপাবলিকানরা যদি পরবর্তী নির্বাচনে ভালো করতে চায় তাহলে তাদেরকে নতুন ক্ষেত্রগুলোতে তাদের অবস্থান আরো দৃঢ় করতে হবে। ভার্জিনিয়ার রিপাবলিকান গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিনের বিজয় লাভের প্রধান কৌশলবিদ ক্রিস্টিন ডেভিডসন বলেছেন যে রিপাবলিকানদের যদি শিখতে হয় যে কীভাবে বিজয়ের পথ প্রসারিত করতে হবে, তাহলে তাদেরকে কলেজ-শিক্ষিত ভোটারদের হৃদয় জয় করতে হবে, বিশেষ করে শহরতলিগুলোর কলেজ শিক্ষিতদের। তার মতে শুধু প্রবীণ রেজিস্টার্ড রিপাবলিকানদের ওপর নির্ভর করে বিজয়ের আশা করা সঙ্গত নয়।
যে ছয়টি স্টেটের উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে অ্যারিজোনায় ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ডেমোক্রেট গভর্নর নির্বাচিত হয়েছেন, কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। নেভাদায় ডেমোক্রেট সিনেট প্রার্থী মাত্র ১ শতাংশ পয়েন্টে পুন:নির্বাচিত হয়েছেন, কিন্তু রিপাবলিকানরা গভর্নর পদে বিজয় পেয়েছে। কিন্তু উইজকনসিনে এর উল্টোটাই ঘটেছে। ওয়ারনক সামান্য মার্জিনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াকারকে পরাস্ত করেছেন। কিন্তু রিপাবলিকান ব্রায়ান কেম্প গভর্নর পদে সহজে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট স্ট্যাচি অ্যাব্রামসকে হারিয়েছেন। শুধু পেনসিলভেনিয়া ও মিশিগানে ডেমোক্রেটরা সকল পদে স্বচ্ছন্দে নির্বাচিত হয়েছেন।
Posted ৩:৩৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh