গত ১৫ আগস্ট (শনিবার) সকাল। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্য উত্তর উপকূলের সমুদ্রস্নানে নেমেছিলেন ৩৫ বছরের ডয়োলি। সার্ফার স্বামী মার্ক র‌্যাপলে সার্ফ করছিলেন কাছেই। দুজনের মধ্যে টুকটাক কথাবার্তাও চলছিল। এরই মধ্যে হঠাৎ চিৎকার করে ওঠেন ডয়োলি। সার্ফিং বোর্ডে থেকেই র‌্যাপলে দেখেন বিশালাকার এক হাঙ্গর আক্রমণ করেছে তার স্ত্রীকে। কামড়ে ধরেছে ডান পা। ছাড়া পাওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিন মিটার দীর্ঘ সাদা হাঙ্গরটির সঙ্গে পেরে উঠছেন না ডয়োলি। অবস্থা দেখে একটু বিলম্ব না করে প্রথমে সার্ফিং বোর্ড দিয়েই হাঙ্গরের গায়ে আঘাত করলেন র‌্যাপলে। কিন্তু জলদানব নাছোড়বান্দা। বারবার বোর্ডের আঘাতেও সে পিছু হঠছে না। উপায় না দেখে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন র‌্যাপলে। সর্বশক্তি দিয়ে ঘুষি মারতে শুরু করলেন হাঙ্গরের গায়ে। দশাসই কয়েকখানা ঘুষি খেয়ে অবশেষে ডয়োলির পা ছাড়ল সাদা জলদানব। র‌্যাপলে স্ত্রীকে তুলে আনলেন সৈকতে। এরপরই একটি হেলিকপ্টার অ্যাম্বুলেন্স এসে ডয়োলিকে নিয়ে যায় হাসপাতালে।

এভাবে ওই ঘটনার বর্ণনা দেন সার্ফ লাইফ সেভিং এনএসডব্লিউর প্রধান নির্বাহী স্টিভেন পিয়ার্স। তার ভাষায় স্ত্রীর জন্য ওই ব্যক্তির এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে বীরোচিত। স্টিভেন বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এই বছর ওই এলাকায় হাঙ্গরের আনাগোনা তুলনামূলক বেশিই। সেই কারণে আগে থেকে আমরা সতর্ক করেছি পর্যটকদের। শনিবারের ঘটনাটি খুবই অনাকাক্সিক্ষত। এদিকে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের পরিদর্শক অ্যান্ড্রু বেভারলি বলেন, আমরা বা প্যারামেডিক চিকিৎসকরা আসার আগে র‌্যাপলে ও সার্ফ লাইফ সেভিং-এর সদস্যরা যেভাবে ডয়োলিকে উদ্ধার করেছেন তা আসলেই অসাধারণ। তারা তাৎক্ষণিকভাবে এমন পদক্ষেপ না নিলে হয়তো ওই নারীকে বাঁচানো সম্ভব হতো না।

এদিকে এই ঘটনার কারণে নিউ সাউথ ওয়েলসের একাধিক সৈকত সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সৈকত এলাকায় টাঙানো হয়েছে সতর্কতার সাইনবোর্ড।