বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র

মোহাম্মদ আজাদ :   |   বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১

স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র

ছবি : সংগৃহীত

করোনা মহামারির কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পর্যায়ে লকডাউনসহ বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপিত থাকার পর ধীরে ধীরে ৫০টি স্টেটে কার্যক্রম চালু করে জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ উদ্যোগ শুরু হবে আগামী মাসের শুরু থেকেই। অবশ্য কোন কোন স্টেটে গত মাস থেকেই লকডাউনের কড়াকড়ি শিথিল করা শুরু হয়েছে। তবে স্টেট গভর্নররা ৫০ স্টেট খুলে দেয়ার উদ্যোগ নিলেও বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বহাল থাকবে বলে জানা গেছে। কি ধরনের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হবে তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে স্টেট সরকার ও সিটির কর্মকর্তাদের উপর। সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধানের ব্যবস্থা তুলে নেয়া হচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মুভি থিয়েটারসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হবে। সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন-সিডিসি জানিয়েছে যে যারা দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়া সম্পন্ন করেছেন তারা মাস্ক না পরেই সীমিত আকারে অনুষ্ঠানাদিতে উপস্থিত হতে পারবেন। তারা জিমনেশিয়ামে গিয়ে মাস্ক ছাড়াই শারীরিক কসরৎ করতে পারবেন। বার ও রেস্টুরেন্টগুলো মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা রাখা হবে।

মাস্ক পরিধানের উপর বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও কিছু কিছু ইনডোর পাবলিক প্লেসে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক থাকবে। অনৈক স্টেটে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিনিষেধেও শৈথিল্য আনা হবে। স্টেটগুলো যখন সবকিছু খুলে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হবে তখনই মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কড়াকড়ি প্রত্যাহার করা হবে বলে জানা গেছে। নিউইয়র্কের গভর্নর এন্ড্রু ক্যুমো ঘোষণা করেছেন যে আগামী ১৯ মে থেকে স্টেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক কিছুর ওপর থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। কোন আউটডোর অনুষ্ঠান ৫০০ লোক উপস্থিত হতে পারবে। কিন্তু কোন পার্টি হল বা মিলনায়তনে ২৫০ জনের অধিক জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নিউ জার্সিতে ইনডোর অনুষ্ঠানে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা থাকবে। টেক্সাসে গত ১০ মার্চ থেকেই অনেক কিছুর উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে মাস্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। মিশিগান পুরোপুরি খুলে দেয়া হবে ১ আগষ্ট থেকে। সেখানকার ৭০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন দেয়া সম্পন্ন করেছেন এবং অবশিষ্টদের ভ্যাকসিন দেয়া সম্পন্ন হবে জুলাই মাসের ভেতরেই। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান হার এবং ভ্যাকসিন গ্রহণের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যে আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ সকল স্টেট থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়া সম্ভব হবে।


যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগবিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র দ্রুতই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। টিকাদান কর্মসূচির সফলতা, নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে যাওয়াসহ নানা কারণে বিজ্ঞানীরা এখন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছেন। যদিও ভাইরাসের নানা রূপান্তর জানান দিচ্ছে, করোনাভাইরাস শেষ হয়ে যায়নি। কয়েক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত মিশিগান অঙ্গরাজ্যের হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে করোনায় সংক্রমিত রোগীর উপচে পড়া ভিড় ছিল। দেশের সর্বশেষ করোনা এপিসেন্টার হয়ে ওঠা এই রাজ্যেও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এখন কমে এসেছে। সম্প্রতি উইজকনসিন, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াসহ দেশের নানা অঙ্গরাজ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যের কোটায় নেমেছে। বিষয়টি সাময়িক হলেও, গত বছরের ভাইরাস সংক্রমণের তুলনায় এটি একটি আশা জাগানিয়া খবর।

মহামারি বিষয়ে সাম্প্রতিক অগ্রগতির কারণে আশাবাদী হয়েছে নানা রাজ্যের কর্তৃপক্ষ। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিউইয়র্ক ও শিকাগো কর্তৃপক্ষ আগামী কয়েক সপ্তাহে নগরের সবকিছু পুরোদমে খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যস্ত। প্রস্তুতি দেখে মনে হচ্ছে নগরগুলোতে যেন আবার প্রাণ ফিরে আসছে। মূলত টিকাদান কর্মসূচির সফলতার কারণেই যুক্তরাষ্ট্র এখন মহামারির এক নতুন আশাব্যঞ্জক অধ্যায়ে পদার্পণ করছে। করোনার সংক্রমণ অনেক কমছে-মানুষের মধ্যে এমন আশাবাদ কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে এখন মানুষ মাস্ক ছাড়া চলাচল করছে, রাস্তাঘাটেও মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গভর্নর, মেয়র ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এক সময় নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দুঃসংবাদ দিচ্ছিলেন, কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করছিলেন। তাঁরাও এখন নতুন আশাবাদে নিজেদের এলাকায় জারি করা বিধিনিষেধে দ্রুত ছাড় দিতে শুরু করেছেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সাবধানতা অবলম্বনের পক্ষে। আসছে সপ্তাহগুলোতে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে অবস্থার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। তবে আগের মতো এত মারাত্মক অবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে আশাবাদী তাঁরা।


মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক ব্যাধি গবেষণা ও কর্মপন্থা কেন্দ্রের পরিচালক মাইকেল ওস্টারহোম বলেন, ‘আমরা স্পষ্টত মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছি। দেশব্যাপী মহামারির উন্নতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভাইরাসের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। দেশের নতুন সংক্রমণ এখন দৈনিক ৪৯ হাজার। গত অক্টোবরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এটি সর্বনিম্ন সংখ্যা। পুরো দেশে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা এখন ৪০ হাজারে নেমে এসেছে। মৃত্যুর সংখ্যা গত জানুয়ারিতে গড়ে দৈনিক তিন হাজার ছিল।’ ইতিপূর্বে মহামারি সাময়িকভাবে স্থবির হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হয়। গত শীতে আবারও করোনা দেশের নানা এলাকায় প্রকট আকার ধারণ করে। তবে এবারের অগ্রগতির সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিন্নতা রয়েছে। তা হলো ১৫ কোটি বেশি মানুষের পূর্ণ ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে।
দেশের প্রাপ্তবয়স্ক অর্ধেকের বেশি মানুষ অন্তত একটি টিকা দিয়েছেন। আর এটাই সম্ভবত মহামারির এই অগ্রগতি এবারে স্থায়ী হবে বলে বিশেষজ্ঞদের আশান্বিত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বিশ্বের নানা দেশের পরিস্থিতি ভালো নেই। টিকার দুষ্প্রাপ্যতায় ভুগছে অনেক দেশ। ভারতের পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ। ব্রাজিলেও প্রতিদিন হাজারো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে যদিও অবস্থার উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে, তবে সাবধানতা অবলম্বনের এখনো বিকল্প নেই বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। মানুষের টিকা নেওয়ার গতি শ্লথ হয়ে এসেছে। এসব কারণে অনেকে মনে করছেন, মহামারির ক্ষেত্রে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে যে আশাবাদ সৃষ্টি হয়েছে সাবধানতার অভাবে তা ভেস্তে যেতে পারে।
ইনডোরে মাস্ক পরার নিয়ম শিথিল হতে পারে
বাস্তবতার নিরিখে যুক্তরাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা গত মাসে শিথিল করে সিডিসি। তবে সিডিসি যাঁরা টিকা নিয়েছেন বা নেননি-উভয় ধরনের লোকজনকে বিপণিবিতান, সিনেমা হল, জাদুঘর প্রভৃতি ইনডোর জনসমাগমস্থলে এখনো মাস্ক পরার নির্দেশনা দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ফাউসি বলেন, অনেক মানুষ টিকা নিয়েছেন। তাই বিধিনিষেধের বিষয়ে আরও উদার হওয়া দরকার। সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সাবেক কমিশনার স্কট গটলিব বলেন, করোনার ঝুঁকি কমছে। তাই এখন মাস্ক পরার ক্ষেত্রে যে বাধ্যবাধকতা আছে, তা শিথিল করা উচিত। যথেষ্টসংখ্যক মানুষ যদি করোনার টিকা গ্রহণ করেন, তাহলে আগামী মা দিবসে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফাউসি। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, এখন যা দেখছি, পরের মা দিবসে আমরা তার চেয়ে নাটকীয় পার্থক্য দেখতে যাচ্ছি।’ তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করেন ফাউসি। তার মধ্যে রয়েছে ব্যাপক মাত্রায় টিকাদান।


advertisement

Posted ৩:১৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ মে ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.