মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

হাউজ স্পিকার নির্বাচনে অচলাবস্থা

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৩

হাউজ স্পিকার নির্বাচনে অচলাবস্থা

ইউএস কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে স্পিকার নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটেনি। গত ৩ এবং ৪ জানুয়ারি দু’দিনে ৬ দফা ভোট গ্রহণ করা হলেও কংগ্রেসম্যান কেভিন ম্যাকার্থী বিজয়ী হতে পারেননি। নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির অতি ডানপন্থীদের বিরোধিতার কারণে প্রয়োজনীয় ৬টি ভোট হারাচ্ছেন তিনি। হাউজ তথা প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল থেকে স্পিকার নির্বাচিত হয়ে থাকেন। সে হিসেবে রিপাবলিকান পার্টির মেজরিটি লিডার হিসেবে ম্যাকার্থিই স্পিকার হবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পার্টির কয়েকজন কংগ্রেসম্যানের বিরোধিতায় আটকে আছেÑযা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। সর্বশেষ ৪ জানুয়ারি রাত ৮টায় শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সমাধান না হওয়ায় হাউজের পরবর্তী অধিবেশন ৫ জানুয়ারি দুপুর পর্যন্ত মূলতবী করা হয়েছে।

স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার জন্য ম্যাকার্থির কমপক্ষে ২১৮ ভোটের দরকার ছিল। গত ৩ জানুয়ারি ৩ দফা ভোটে তিনি পেয়েছেন ২০২ ভোট। রিপাবলিকান দলের অপর সদস্য জিম জর্ডান পেয়েছেন ২০ ভোট। ম্যাকার্থিকে ভোট না দিতেই জর্ডানকে স্পিকার প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন তাঁকে ভোট দেওয়া ২০ রিপাবলিকান সদস্য। ২১৮ ভোটের লক্ষ্য অবশ্য পূরণ করতে পারেননি প্রতিনিধি পরিষদের অন্য কেউও। পরিষদে ডেমোক্র্যাট দলের সব সদস্যই তাঁদের প্রার্থী হাকিম জেফরিসকে ভোট দিয়েছেন। ফলে সর্বোচ্চ ২১২ ভোট নিয়ে তিনি এগিয়ে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে স্পিকার নির্বাচন মুলতবির ঘটনা সর্বশেষ ঘটেছিল ১৯২৩ সালে। ১০০ বছর পর আবার এমন ঘটনা ঘটল। গত ৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমনই এক নাটকীয় দিন ছিল। প্রতিনিধি পরিষদে দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাকার্থি স্পিকার নির্বাচিত হতে পারেননি। কারণ, তাঁর দলের কট্টরপন্থী কয়েকজন সদস্য বিদ্রোহ করে বসেন। বরং ভোটে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হাকিম জেফ্রিস তাঁর চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। এ ঘটনায় রিপাবলিকান দলের বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল।


রিপাবলিকানদের এসব বিদ্রোহীর অধিকাংশই ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ভোটের আগে দলের বিভক্তি টের পেয়ে মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্পের সঙ্গে কথাও বলেন ম্যাকার্থি। তাতেও লাভ হয়নি। তাঁদের বিভক্তির কারণে প্রতিনিধি পরিষদে স্পিকার নির্বাচনের ভোট দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে।

গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ নেয় রিপাবলিকান পার্টি। তাদের জন্য সবকিছু যখন সহজ মনে হচ্ছিল, তখনই ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দানা বাঁধে। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটল।মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ার এই আইনপ্রণেতা স্পিকার পদে তিন দফা ভোট হেরে যান। আজ বুধবার আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে স্পিকার নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত ভোট চলবে।


বিশ্লেষকেরা বলছেন, ম্যাকার্থি কোনোভাবে নির্বাচনে উতরে গেলেও প্রতিনিধি পরিষদে আগামী দুই বছর মধ্য ও কট্টরপন্থী রিপাবলিকানদের মধ্যে লড়াই চলতে দেখা যাবে। এ কারণে প্রতিনিধি পরিষদের বেশ কিছু অ্যাজেন্ডা রিপাবলিকানদের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না–ও হতে পারে।

গত নভেম্বরের নির্বাচনে স্বল্প ব্যবধানে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ পায় রিপাবলিকান পার্টি। তাই স্পিকার নির্বাচনে রিপাবলিকানদের কয়েকটি ভোট বিপক্ষে চলে গেলেই ম্যাকার্থির জন্য সমস্যা।


সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, ম্যাকার্থিই স্পিকার হবেন বলে যখন ধরে নেওয়া হচ্ছিল, তখনই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পরিষদে রিপাবলিকান সদস্যদের বিভক্তি। স্পিকার নির্বাচিত হতে ম্যাকার্থির দরকার ছিল কমপক্ষে ২১৮ ভোট। অথচ গত মঙ্গলবার তৃতীয় দফা ভোটে তিনি পেয়েছেন ২০২ ভোট। রিপাবলিকান দলের অন্য সদস্য জিম জর্ডান পেয়েছেন ২০ ভোট। ম্যাকার্থিকে ভোট না দিতেই জর্ডানকে স্পিকার পদে প্রার্থী করিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের কট্টরপন্থী রিপাবলিকান সদস্যরা।
শুধু ম্যাকার্থি নন, ২১৮ ভোটের লক্ষ্য অবশ্য পূরণ করতে পারেননি প্রতিনিধি পরিষদের অন্য কোনো প্রার্থী। পরিষদের ডেমোক্র্যাট দলের সব সদস্যই তাঁদের প্রার্থী হাকিম জেফ্রিসকে ভোট দিয়েছেন।

ফলে সর্বোচ্চ ২১২ ভোট পেয়ে তিনি এগিয়ে ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি স্পিকার নির্বাচিত হতে পারবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। স্পিকার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে জিম জর্ডান বলেন, তাঁর স্পিকার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বুধবার দ্বিতীয় দিনের ভোটে কেভিন ম্যাকার্থিকে সমর্থন দিতে দলের সদস্যদের বলবেন তিনি। এমনকি দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগেও তিনি বলেছিলেন, স্পিকার পদের জন্য ম্যাকার্থিই যোগ্য ব্যক্তি। তবে কেভিন ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া রিপাবলিকান সদস্যরা জর্ডানের কথা মানতে নারাজ। তাঁদের ভাষ্যমতে, গত মঙ্গলবার নেওয়া সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছেন না তাঁরা। তাঁরা বলছেন, এমনকি ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিন বুধবার আরও অনেকে দাঁড়াবেন বলে ধারণা করছেন। ম্যাকার্থিবিরোধী এমনই একজন রিপাবলিকান সদস্য বব গুড। তিনি বলেন, ম্যাকার্থির বিরুদ্ধে তাঁরা তাঁদের শেষ সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছেন।

গত নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর নতুন স্পিকার নির্বাচনের পথ তৈরি হয়। সে হিসেবে গত মঙ্গলবার নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সদস্যদের বিদ্রোহের কারণে এভাবে নির্বাচন মুলতবি ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে খুবই বিরল। প্রশ্ন উঠছে, কেন রিপাবলিকানদের মধ্যে এই বিভক্তি? রিপাবলিকান দলের পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, দলটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিরোধ এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

রিপাবলিকান দলের লবিস্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘ম্যাকার্থি নির্দিষ্ট ককাস ধরে কোনো বন্ধু বানাননি। তিনি অনেক শত্রু তৈরি করেছেন। অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা তাঁকে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণে পছন্দ করেন না।’ ম্যাকার্থি ইতিমধ্যে তাঁর বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। বিরোধীরা তাঁকে কট্টর মূলধারার ও ক্ষমতালোভী হিসেবে দেখেন। ম্যাকার্থি এখন তাঁদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। তবে রিপাবলিকান দলের লবিস্টের মতে, যে সময় ম্যাকার্থির মরিয়া হয়ে লড়াই করার কথা, তখন তিনি রিপাবলিকানদের সঙ্গে দুর্বল আলোচনা করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৯ কট্টরপন্থী রিপাবলিকান সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা মতাদর্শগত ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে ম্যাকার্থির বিরোধিতা করছেন। তাঁরা আরও চাপ দিয়ে ছাড় আদায়ের সুযোগ নিচ্ছেন।

রিপাবলিকানদের এই বিভক্তির বিপরীতে ডেমোক্র্যাটরা একজোট। দলের নতুন নেতা হাকিম জেফ্রিসের সঙ্গেই রয়েছেন তাঁরা। ওয়াশিংটনের পর্যবেক্ষকেরা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নানা তত্ত্ব দিচ্ছেন। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রুথ ব্লোচ রুবিন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ম্যাকার্থি তাঁর দলের এক পক্ষের কাছে জিম্মি। তিনি তাঁদের আর কোনো ছাড় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তাঁর কাছে আর কোনো বিকল্পও নেই। তিনি তাঁদের নতুন নেতৃত্ব বা বিভিন্ন কমিটিতে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাছে টানতে পারেন।

advertisement

Posted ৩:৪১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.