বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
বিশ বছর আগে মাত্র ১৪ ডলার চুরির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার ডেভিড কোলসন (৫৫)। বিশ বছরের কারাবাসের পর তার সাজা হ্রাসের সুপারিশের প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহে তিনি মুক্তি লাভ করে কারাগারের বাইরে পা রেখেছেন। ডেভিড কোলসন ১৪ ডলার চুরি করে ধরা পড়েছিলেন ২০০২ সালে। ১৯৯০এর দশকে প্রণীত ক্যালিফোর্নিয়ার ‘থ্রি স্ট্রাইকস ল’ এর আওতায় চুরির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ডেভিডের সাজা হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাবাসের। ইতোমধ্যে তার কারাগারে কাটানোর বিশ বছর অতিবাহিত হয়েছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার ডিপার্টমেন্ট অফ কারেকশনস এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন গত মাসে এই কৃষ্ণাঙ্গ নন্দীর মুক্তির সুপারিশ করলে এ মাসের প্রথম সপ্তাহেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
ডেভিড কোলসন যখন কারাদন্ডে দন্ডিত হন তখন তার বয়স ছিল ৩৫ বছর। তিন দশক আগে প্রণীত ক্যালিফোর্নিয়ার থ্রি স্ট্রাইকস ল’ এর উদ্দেশ্য ছিল সেখানে চুরি-চামারিসহ ছোটখাট অপরাধ লাগামহীনভাবে ঘটে চলেছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য খুব তুচ্ছ ধরনের চুরির ঘটনাতেও অপরাধীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধান সম্বলিত আইনটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। শুধু ক্যালিফোর্নিয়ায় নয়, অন্যান্য অনেক স্টেটে অনুরূপ আইন করা হয়েছে স্বভাবজাত অপরাধীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধ তৎপরতা দমনের উদ্দেশ্যে। ডেভিড কোলসনের ক্ষেত্রে যা ঘটেছিল, তা সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টে এসেছে যে অপরাধ সংঘটনের সময় তিনি হোমলেস ছিলেন এবং লং বিচে এক বাড়ির গ্যারেজ থেকে বিভিন্ন সামগ্রী চুরি করেন। তিনি তার জীবনের দীর্ঘ সময় মানসিক ব্যাধিতে, মাদকাসক্তির মধ্যে কাটিয়েছেন। তিনি তার চুরি করা জিনিসগুলো বিক্রয় করে ১৪ ডলার পান। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং তাকে বিচার করা হয় চুরি ও ডাকাতির অভিযোগে। এর আগেও বিশোর্ধ বয়সে তিনি অহিংস ধরনের অপরাধে দু’বার কারাগারে ছিলেন।
২০০২ সালের চুরির ঘটনায় গ্রেফতারের পর তাকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিচারিকভাবে দন্ডিত বলে দেখানো হয়নি, কারণ চিকিৎসকরা তাকে সিজোফ্রেনিয়াগ্রস্ত বলে চিহ্নিত করেন এবং বিচারের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা হয়। আরো জানা যায় যে তার জন্মের সময় তার মায়ের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর এবং তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন। চার বছর বয়সে তাকে দত্তক দেওয়া হয় এবং যে পরিবারে তিনি ছিলেন সেখানে নিয়মিত প্রহৃত হতেন বলেও জানা গেছে। কিশোর বয়সেই তিনি মাদক, অ্যালকোহলে আসক্ত হন এবং গ্যাং এর কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। দুবার তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ক্যালিফোর্নিয়ায় স্ট্রাইকস ল’ এর আওতায় দন্ডিত হয়ে প্রায় ৩৩ হাজার লোক কারাদন্ড ভোগ করছে, যার মধ্যে ৪৫ শতাংশই কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান। যদিও স্টেটের জনসংখ্যার মাত্র ৬.৫ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ। কোলসন সাংবাদিকদের বলেছেন যে তিনি ধারণা করতেন যে জীবনে আর কখনো তিনি মুক্তি লাভ করবেন না। কিন্তু স্টেটের ডিপার্টমেন্ট অফ ারেকশনস এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন তার ক্লাসরুম সাফল্য ও গত দুই দশকের ভলান্টিয়ার সার্ভিসে দক্ষতা ও আন্তরিকতার কারণে তার সাজার অবশিষ্ট মেয়াদ মওকুফের সুপারিশ করে।
Posted ২:০০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh