বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

৩টি রাজ্যের ভোট গণনা বন্ধে ট্রাম্প শিবিরের মামলা

মোহাম্মদ আজাদ :   |   বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর ২০২০

৩টি রাজ্যের ভোট গণনা বন্ধে ট্রাম্প শিবিরের মামলা

নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় সুনিশ্চিত হচ্ছে টের পেয়ে ট্রাম্প শিবির মিশিগান, জর্জিয়া এবং পেনসিলভেনিয়ায় ভোট গণনা বন্ধ করতে মামলা দায়ের করে। শুরুতে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে ভোট পুনর্গণনার দাবি তুলেছিল ট্রাম্প শিবির। এরপর তিন অঙ্গরাজ্যে মামলাই করে বসে তারা। ক্ষমতা ধরে রাখার এ অপকৌশল ট্রাম্পের পূর্ব পরিকল্পিত। এসব মামলার মধ্য দিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যেতে চান। এ কারণেই তড়িঘড়ি করেই নির্বাচনের আগে সুপ্রিম কোর্টে নতুন বিচারপতি নিয়োগ দেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ভোটগ্রহণ বন্ধের দাবিতে পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে মামলা করেছে ট্রাম্প শিবির। শুরুতে উইসকনসিনে ভোট পুনর্গণনার দাবি তুললেও সেখানে মামলা করেনি তারা।


ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবির প্রথমে মিশিগানে ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয়। প্রচার শিবিরের ব্যবস্থাপক বিল স্টেপিন এক বিবৃতিতে বলেন, মিশিগানের আইন অনুযায়ী ভোট গণনার নির্ধারিত জায়গায় ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের কাউকে সেভাবে উপস্থিত থাকার সুযোগ দেওয়া হয়নি। সে কারণে তাদের পক্ষে ব্যালট পেপার খোলা ও ভোট গণনার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ সম্ভব হয়নি।

এরপর পেনসিলভানিয়া ও জর্জিয়ায় মামলা করে বসে ট্রাম্প শিবির। যদিও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী ওপরের চার অঙ্গরাজ্যের মধ্যে মিশিগান ও উইসকনসিনে এরই মধ্যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের জয় নিশ্চিত হয়েছে। ২০১৬ সালে এই দুই রাজ্যেই জয় পেয়েছিলেন ট্রাম্প।


নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য বলছে, মিশিগানে ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছে বাইডেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্প পেয়েছেন ২৬ লাখ ১৭ হাজার ৬০ ভোট। এই জয়ে মিশিগানের ১৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। আর উইসকনসিনে বাইডেন পেয়েছেন ১৬ লাখ ৩০ হাজার ৩৮৯ ভোট। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ১৬ লাখ ৯ হাজার ৮৭৯ ভোট। এখানে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ১০টি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মেইলে পাঠানো ভোটের ফলাফল মেনে নিতে রাজি নন। ইতিপূর্বে ট্রাম্প একাধিকবার বলেছেন যে, তিনি কোর্টে ফলাফল চ্যালেঞ্জ করবেন। মঙ্গলবার রাতে ভোট গণনা চলকালেও তিনি নতুন করে কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। বুধবার দুপুরে ট্রাম্প মিশিগানের ভোট গণনা চ্যালেঞ্জ করেছেন। এদিকে পেনসিলভেনিয়ায় ট্রাম্প ৩ লক্ষাধিক ভোটে বাইডেনের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও সেখানকার ১৪ লাখ মেইল ভোটের ৭৫ শতাংশ ভোটই বাইডেন বা ডেমোক্রেটদের। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে।


এমন আশঙ্কায় ট্রাম্প ও বাইডেন উভয় শিবিরই তৈরি করে রেখেছে আইনজীবীর বিশাল বাহিনী। এবারের নির্বাচনের পরিসমাপ্তি ঘটার জন্য আদালত শেষ ভরসা হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে আগেই। ডাক ভোটের গণনার সময়সীমা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রিপাবলিকান শিবির। কিন্তু সুপ্রিমকোর্ট তাদের ৩ দিনের দাবি বাতিল করে ৬ দিন পর্যন্ত ডাক ভোট গণনার সময়সীমা বহাল রেখেছেন। এছাড়া ড্রাইভ থ্রো বা গাড়ি চালিয়ে ভোট, একই রাজ্যে একাধিক প্রার্থীকে বিজয় ঘোষণার মতো আশঙ্কাও রয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের চূড়ান্ত নিষ্পতিতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রচার শিবির তৈরি করেছে আইনজীবী বাহিনী। এদের বলা হচ্ছে আর্মি অব ল’ইয়ার্স। নিউইয়র্ক টাইমস। এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রধান ইস্যু করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৯০ লাখের বেশি মানুষ এ প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এসে করোনা আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দৈনিক এক লাখ পর্যন্ত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন সেখানে।

রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও তিনি এ ভাইরাসটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেননি। নেননি তার সমর্থকরাও। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ঝুলন্ত রাজ্য নর্থ ক্যারোলিনা, উইসকনসিন, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ায় স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই র‌্যালির আয়োজন করেছে ট্রাম্প শিবির। এমনকি তিনি ফ্লোরিডার এক সমাবেশে বলেছেন, পুনরায় জয়ী হলে দেশের প্রধান সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টোনি ফাউসিকে বরখাস্ত করবেন।

ওহাইও ও পেনসিলভানিয়ায় বাইডেনের শেষ দিনের প্রচারণা দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চালানো হয়েছে। এ সময় সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা কি আমার সঙ্গে একমত। মহামারীকালে ট্রাম্পের দায়িত্ব পালনের কারণে সংক্রমণ বেশি হয়েছে। ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এখন করোনাকে পরাজিত করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে ট্রাম্পকে পরাজিত করা।

করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসকে আমলে না নিয়ে মানুষ ভোট দেয়ার প্রতি অনেক বেশি আগ্রহী। প্রায় ১০ কোটি আগাম ভোট দেয়া থেকে সেটিই বোঝা যায়। এছাড়া ভোটের দিনও মানুষের সারি ছিল অনেক দীর্ঘ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যেমনটি আগে দেখা যায়নি। অনেক মানুষ এবারের ভোটকে নিজেদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিক- দু’পক্ষই নিজেদের জয়ী দাবি করতে পারে এমন ইঙ্গিতের কারণে উত্তেজনা ও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। ডেনভার থেকে ডেট্রিয়ট ও ওয়াশিংটন সর্বত্র উত্তেজনার পারদ দেখা যাচ্ছে। এ কারণে অনেক রাজ্যের গভর্নর ন্যাশনাল গার্ড প্রস্তুত রাখছেন।

নির্বাচনের আগের দিন গত ২ নভেম্বর সর্বত্র ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল। ভোটের পর ফলাফল নিয়ে দু’পক্ষের ভিন্নমুখী অবস্থানের কারণে এ ভীতিকর পরিস্থিতি সংঘাতে রূপ নিতে পারে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের দুটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। প্রথমত, মহামারীর মধ্যে ভোট আয়োজনের চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত, ভোট গণনার পদ্ধতিগুলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের খাটো করে দেখানোর প্রক্রিয়া সামলানো।

সর্বোপরি, নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবেন কিনা এবং হেরে গেলে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন কিনা- এমন প্রশ্নগুলোর স্পষ্ট কোনো জবাব ট্রাম্প দেননি। তিরি বরং ভোটের রাতে হোয়াইট হাউসে পার্টি করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। ডাক ভোট গণনার দিন কমিয়ে না আনা ও ড্রাইভ থ্রো ভোট গণনা না করার জন্য ট্রাম্প শিবিরের আবেদন সুপ্রিমকোর্ট প্রত্যাখ্যান করায় একাধিকবার উচ্চ আদালতের সমালেচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট। এসব কারণে ফলাফল নির্ধারণে শেষ পর্যন্ত আদলতে যাওয়া লাগলে দু’পক্ষই তৈরি করেছে রেখেছে বিশাল আইনজীবী বাহিনী।

নির্বাচনে যেটিকে একসময় দুঃস্বপ্ন মনে হতো তা ঘটতে চলেছে। বাইডেন দাবি করেছেন তিনি জয়ের পথে এগিয়ে রয়েছেন এবং ট্রাম্প নিজেকে জয়ী দাবি করে ভোট জালিয়াতি ও চুরির অভিযোগ করেছেন। এভাবে চললে যা গড়াতে পারে আদালতের কাছে। আদালতের সিদ্ধান্ত যে দলের পক্ষেই যাক না কেন, পরাজিতরা ক্ষুব্ধ হবেন এবং তারা মনে করবেন তাদের হারিয়ে দেয়া হয়েছে। অবশ্য চূড়ান্ত ফল এখনো জানা যায়নি। তবে এটি স্পষ্ট যে, ভোটের রাতে আমেরিকা দ্বিধাবিভক্ত জাতি হয়েই রয়েছে এবং তা আরো বাড়ছে। মার্কিন ভোটাররা ট্রাম্পকে তেমনটা সমর্থন দেননি, যা তিনি প্রত্যাশা করছিলেন। তবু লড়াইয়ের সীমা চিহ্নিত হচ্ছে। এই নির্বাচনে যারাই জয়ী হোক না কেন, রাজনৈতিক যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে। জবাবে বাইডেনের নির্বাচনী শিবির বলেছে, আইনি লড়াই মোকাবেলায় তাদের আইনজীবীরাও তৈরি রয়েছেন।

advertisement

Posted ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.