বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | বুধবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২১
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে সরিয়ে দিতে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য ২৫তম সংশোধনীর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পরেও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা ভোটাভুটিতে এই সংশোধনীর প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর জ্যামই র্যাস্কিন বলেন, আপনি আপনার ক্ষমতা ব্যবহার করে মন্ত্রিসভাকে এ বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন। আতঙ্কে থাকা একটি জাতিকে রক্ষা করুন।
প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির দেয়া সংশধোনীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পেন্স বলেছেন, এই দাবি থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। এই মুহূর্তে এমন আবেগ দেশকে আরও বিভক্ত করবে এবং অশান্তি সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, ২৫তম সংশোধনীটি করা হয়েছিল প্রেসিডেন্টের অক্ষমতা দূর করতে। কিন্তু হাউস রিপ্রেজেন্টেটিভ এটাকে রাজনৈতিক গেমস হিসেবে দেখছে। এই দাবি পূরণ হবে না।
এদিকে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে গত ৬ জানুয়ারি নজিরবিহীন হামলার ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প মদদ ছিল অভিযোগ করে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সোমবার অভিশংসন প্রস্তাব আনে ডেমোক্র্যাটরা। এই অভিশংসনের পক্ষ নিয়েছেন একাধিক রিপাবলিকান সদস্য। এখন পর্যন্ত যেসব রিপাবলিকান সদস্য ট্রাম্পকে অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা হলেন হাউসের তৃতীয় শীর্ষ নেতা লিজ চেনি, জন কাটকো, অ্যাডাম কিনজিনজার ও ফ্রেড আপটন।
‘বিদ্রোহে উসকানির’ অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিশংসন প্রস্তাব আনা হয়েছে। হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
ডেমোক্র্যাটরা আগেই জানিয়েছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাতে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী না এগোলে বুধবার হাউসে ভোটাভুটি হবে। মাইক পেন্স এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারণে ২৫ তম সংশোধনী ব্যবহার করবেন না। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ট্রাম্পকে অপসারণে মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে প্রস্তাবনা পাস হয়েছে।
ডেমোক্র্যাটদের অভিশংসন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ক্যাপিটলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় সমর্থকদের উৎসাহ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ করে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসনের মুখে পড়েছেন। এর আগে ২০১৯ সালে ট্রাম্পকে অপসারণে নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাব পাস হয়। তবে উচ্চকক্ষ সিনেটের রায়ে তা বানচাল হয়ে যায়। মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, হাউস সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পেলে প্রেসিডেন্ট অভিশংসিত হবে। কিন্তু, প্রেসিডেন্টকে হোয়াইট হাউস ছাড়া করতে সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়।
ট্রাম্পকে অভিশংসন করা প্রসঙ্গে হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমাদের দেশ, গণতন্ত্র ও আমেরিকার জনগণের জন্য হুমকি। তাঁকে (ট্রাম্প) দ্রুতই সরাতে হবে।’
হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসিত হওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার বলা চলে। তবে, ট্রাম্প সিনেটে দোষী সাব্যস্ত হবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ট্রাম্পের অভিশংসনের পক্ষে খোলাখুলি অবস্থান না নিলেও ট্রাম্পের পদত্যাগ কিংবা অপসারণকে সমর্থন করছেন বেশ কয়েকজন সিনেটর। তবে, সিনেটে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ১৭ জন রিপাবলিকান সিনেটরের ভোট পেতে হবে।
এদিকে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে সিনেটে অভিশংসনের বিচার হবে না বলে এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকান দলীয় নেতা মিচ ম্যাকোনেল।
Posted ১০:১১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh