বাংলাদেশ ডেস্ক : | সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
এবার পৃথিবীর বাইরে নজর যুক্তরাষ্ট্রের। ভিনগ্রহে পরমাণু চুল্লি গড়ার তোড়জোড় শুরু করেছে দেশটি। চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে পরমাণু কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে পরমাণু শক্তিধর যুক্তরাষ্ট্র। পরিকল্পনা মতো বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে শুক্রবার আইডিয়া চাওয়া হয়েছে।
চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই ওই দুই জায়গায় পরমাণু শক্তি কেন্দ্র গড়তে চাইছে আমেরিকা। মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি এক বিবৃতিতে জানায়, মহাকাশের কর্কট পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে মানুষের সেখানে গবেষণার জন্য বসবাসের লক্ষ্যে পরমাণু কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। আরও বলা হয়, ‘ফেডারেল সরকারের স্বার্থে মহাকাশ অনুসন্ধান মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির জোগান দিতে পারে এসব ছোট ছোট পরমাণু চুল্লি।’
আমেরিকা চাইছে, চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে ফিসন সারফেস পাওয়ার সিস্টেম গড়ে তুলতে, যাতে মানুষ দীর্ঘদিন সেখানে থেকে গবেষণা চালাতে পারে। মার্কিন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ইদাহো ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি, এনার্জি ডিপার্টমেন্ট ও নাসা মিলে কীভাবে চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর তৈরি করা যায়, সে বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। এমন রিঅ্যাক্টর তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে, যা ঠাণ্ডা করার জন্য পানির প্রয়োজন হবে না। পৃথিবীতে প্রায় সব পরমাণু চুল্লিই পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করার সিস্টেমে তৈরি।
পরিকল্পনাটি দুটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমে পরমাণু চুল্লিটির ডিজাইন করা। দ্বিতীয় পর্যায়ে একটি টেস্ট রিঅ্যাক্টর বা পরীক্ষামূলক চুল্লি তৈরি করা। দ্বিতীয় চুল্লিটি চাঁদে পাঠানো হবে মহাকাশযানে করে।
মহাকাশযানটির ল্যান্ডার ওই পরমাণু চুল্লিটি চাঁদে বয়ে নিয়ে যথাযথ স্থানে স্থাপন করে আসবে। একইভাবে মঙ্গলগ্রহেও পরমাণু চুল্লি স্থাপন করা হবে। মূলত, ২০২৬ সালের মধ্যে ভিনগ্রহে পরমাণু চুল্লি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে আমেরিকা। এই সময়ের আগেই একটি পরমাণু চুল্লি, মহাকাশযান ও ল্যান্ডার প্রস্তুত করতে হবে।
অন্তত ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ? উৎ?পাদন করতে পারবে এমন রিঅ্যাক্টর তৈরি করে চাঁদে পাঠানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য বিভাগের হিসাবে দেশটির বাসাবাড়িতে বছরে গড়ে ১১ হাজার কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়।
টাইম ম্যাগাজিন জানিয়েছে, পরমাণু চুল্লিগুলোর ওজন সাত হাজার ৭০০ পাউন্ডের (সাড়ে ৩ কেজি) বেশি হবে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে এগুলো মহাকাশে তার কার্যক্রম চালাতে পারবে।
পরমাণু চুল্লিগুলোর মেয়াদকাল হবে অন্তত ১০ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি বিভাগ জানায়, চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের অনুসন্ধানে নিয়োজিত থাকবে এ পরমাণু চুল্লি। তবে মঙ্গলগ্রহের কোন অংশে গবেষণা চালাবে, তা নিশ্চিত করেনি এনার্জি বিভাগ।
মঙ্গলগ্রহ নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। ২৩ জুলাই চীন তার দক্ষিণাঞ্চলের হাইনান দ্বীপ থেকে তিয়ানওয়েন-১ নামের মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করে। এটি সফল হলে পরবর্তী ধাপে মঙ্গলে মানুষ পাঠাবে দেশটি। এদিকে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ৩০ এপ্রিল প্রিজারভেন্স নামক দ্বিতীয় মঙ্গলযান উৎক্ষেপণের তারিখ নির্ধারণ করেছে। দু’দেশের উৎক্ষেপিত মহাকাশযানই ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি নাগাদ মঙ্গলে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতও লাল গ্রহে তাদের মহাকাশযান পাঠিয়েছে।
Posted ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ জুলাই ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh