শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪ | ১৭ কার্তিক ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বিদেশীরাও নির্বাচনের হিসাব কষছে!

বাংলাদেশ ডেস্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট ২০২০

বিদেশীরাও নির্বাচনের হিসাব কষছে!

আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে প্রধান দুই প্রার্থী। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জন্য লড়বেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে তিন মাসের মতো সময় বাকি থাকলেও নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন জাতীয় জরিপে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জো বাইডেনের থেকে ৭-৮ পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন। বর্তমান করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকায় অনেক মার্কিন নাগরিক খুশি নন। সম্প্রতি পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলন হয়েছে। এই আন্দোলন নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন অনেক মার্কিনি। যে কারণে জরিপগুলোতে ভালোভাবে এগিয়ে আছেন জো বাইডেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরেফিরে প্রেসিডেন্ট হন রিপাবলিকান কিংবা ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থীরাই। দেশের জনগণ মূলত এই দুই শিবিরে বিভক্ত। সাধারণত বেশির ভাগ রাজ্যেই সবসময় একই রকমের ভোট পড়ে। কিছু ?কিছু রাজ্য আছে যেখানে দুই জন প্রার্থীর যে কেউ বিজয়ী হতে পারেন। এসব রাজ্যেই নির্ধারিত হবে কে নির্বাচনে জয়ী আর কে পরাজিত হবেন। জয়-পরাজয়ের যুদ্ধটা হয় সেখানেই আর তাই এসব রাজ্যকে বলা হয় ব্যাটেলগ্রাউন্ড স্টেটস। তাই প্রত্যেক নির্বাচনের সময় এসব রাজ্যে নির্বাচনি প্রচারণার পেছনে অনেক বেশি সময় ব্যয় করে থাকেন প্রার্থীরা। করোনা ভাইরাসের সংকটের মধ্যে প্রার্থী ও ভোটাররা যখন নির্বাচন নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ কষছেন তখন যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার মাইল দূরের দেশেও চলছে নানা হিসাব। এর কারণ বৈশ্বিক ভূ-রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ অবস্থান।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান নির্বাচন নিরাপত্তা কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, বেশ কয়েকটি দেশ আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। ন্যাশনাল কাউন্টার ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি সেন্টারের (এনসিএসসি) পরিচালক উইলিয়াম এভানিনা এক বিবৃতিতে বলেন, এসব দেশের মধ্যে রয়েছে চীন, রাশিয়া ও ইরান। যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাবের মাধ্যমে পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে চাইছে। তার দাবি, চীন ও ইরান চাইছে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হোক। সেখানে রাশিয়া ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের বিপক্ষে। যদিও বিভিন্ন তদন্তে এর পক্ষে জোরালো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু এই দাবির পেছনে কিছু ভিত্তি অবশ্যই রয়েছে। কারণ প্রতিটি দেশই যুক্তরাষ্ট্রে এক জন বন্ধুভাবাপন্ন প্রেসিডেন্ট চায়।

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জেতাতে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এই অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও রাশিয়া ট্রাম্পের পক্ষেই ছিল। কারণ সাবেক ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না রাশিয়ার। ২০১৬ সালের ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে পছন্দ করতেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অন্যদিকে নির্বাচনের আগেই রাশিয়ার আস্থা অনেকটাই অর্জন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব কারণে রাশিয়া ট্রাম্পের জয়ের পক্ষে ছিল! জয়ী হওয়ার পর গত চার বছরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ বা নীতি গ্রহণ করেননি ট্রাম্প। যে কারণে বৈশ্বিক অঙ্গনে অনেকটা স্বাধীনভাবে বিচরণ করেছে রাশিয়া। তাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও ক্ষমতায় আসুক এটা রাশিয়ার জন্য স্বাভাবিক চাওয়া এনসিএসসি পরিচালক উইলিয়াম এভানিনা তার বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে হস্তক্ষেপ করতে চায় ইরান। ভোটের আগে তারা যুক্তরাষ্ট্রে বিভক্তি তৈরি করতে চায়। তেহরান মনে করে, ট্রাম্প পুনর্র্নিবাচিত হলে ইরানের ওপর মার্কিন চাপ আরো জোরালো হবে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ধারণা করা অযৌক্তিক নয়। কারণ সাবেক ওবামা প্রশাসন ইরানের সঙ্গে ছয় জাতির পরমাণু চুক্তি করেছিল। ধীরে ধীরে ইরানের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে সম্মত হয়েছিল। ইরান বিশ্বের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে। ইরানের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানকে কোণঠাসা করতে গিয়ে কিছুদিন আগে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের কারণে কঠোর চাপের মুখে থাকা ইরান নির্বাচনে জো বাইডেনের পক্ষে থাকবে এটা সহজেই অনুমেয়।

অন্যদিকে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে। উইঘুর ও হংকং ইস্যুতে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। চীনের একটি কনস্যুলেট বন্ধ করে দিয়েছে। এখন চীনা অ্যাপ টিকটক ও উইচ্যাট বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এই দ্বান্দ্বিক অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ট্রাম্পকে অবশ্যই চাইছে না চীন। অন্যদিকে হস্তক্ষেপের অভিযোগ না উঠলেও ইউরোপের অনেক দেশ জো বাইডেনের জয় আশা করে। এর কারণ বিগত সাত দশকের বেশি সময় ধরে যে ট্রান্সলান্টিক জোট ইউরোপের স্থিতিশীলতার ভিত্তি হিসেবে ছিল, তা ট্রাম্পের সময় নড়বড়ে অবস্থায়।

বিগত কয়েক বছরে ট্রাম্প যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে বেশি স্বস্তি পায়নি ইউরোপ। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি, ফাইভ-জি’র মতো বিষয়গুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ও ভূমিকার কারণে ইউরোপ পুরোনো মিত্রের কাছ থেকে আস্তে আস্তে সরে গেছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও জিতে আসেন, তাহলে এ সম্পর্ক আরো খারাপ হবে। তাই নানা ভূ-রাজনৈতিক ইস্যু বিবেচনায় নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রে হলেও সেখানকার ফলাফল নিয়ে চিন্তা-দুশ্চিন্তা রয়েছে বিশ্বের চার কোণেই।

 

Posted ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ আগস্ট ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: weeklybangladesh@yahoo.com

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.