| বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভের আগের পর্যায় হচ্ছে গ্রিনকার্ড লাভ বা যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী অধিবাসী হওয়া। ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস বা ইউএসসিআইএস গ্রিনকার্ডের জন্য সবচেয়ে বেশি আবেদন পায় পারিবারিক স্পন্সরশিপের ভিত্তিতে। এছাড়া চাকুরি, শরণার্থী, এসাইলাম ও বিশেষ কোটায় গ্রিনকার্ডের আবেদন করা হয়। আউএসসিআইএস এর হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আঠারো লাখের অধিক ভিসার আবেদন নিস্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এগুলো নিস্পত্তি করতে কত সময় লাগবে তা কেউ জানে না। ভারতীয় বংশোদ্ভুতদের গ্রিনকার্ডের আবেদন রয়েছে ১১ লাখ, যার মধ্যে প্রায় সাড়ে চার লাভ তাদের গ্রিনকার্ড পাওয়ার আগেই মারা যাবেন বলে সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গেছে।
গ্রিনকার্ড আবেদনের এই জট কিভাবে খুলবে তার সহজ কোনো পন্থা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। গ্রিনকার্ড পাওয়া না গেলে আবেদনকারীদের আমেরিকান সিটিজেন হওয়ার স্বপ্ন পূরণও বিলম্বিত হবে।
এমনিতেই সিটিজেনশিপের জন্য এক কোটি ৩৬ আবেদন জমা হয়ে আছে, গ্রিনকার্ডের আবেদনগুলো নিস্পত্তি হলে পরিস্থিতি আরো গুরুতর হয়ে উঠবে। জানা গেছে, প্রচলিত আইন ও কোটা পদ্ধতির কারণে সেসব আবেদনের কোনো সুরাহা সম্ভব হচ্ছে না। কোনো বিদেশি নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে তাকে অবশ্যই প্রথমে ইমিগ্রান্ট ভিসার আবেদন করতে হবে। ইমিগ্রান্ট ভিসার জন্য আবেদনের পূর্বে তিনি যে ক্যাটাগরিতে ভিসার আবেদন করেন, তা অনুমোদিত হতে হয়।
এই ক্যাটাগরিগুলো হচ্ছে: ফ্যামিলি ইমিগ্রেশন, ফিয়াঁসে ইমিগ্রেশন, কর্মসংস্থান ভিত্তিক ইমিগ্রেশন, ডাইভারসিটি ভিসা, রিটার্নিং রেসিডেন্ট ভিসা এবং রিফিউজি ভিসা। এই আবেদনকারীদের সবাই বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তাদের অনেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসার পর ডিগ্রি লাভের পর কোনো স্পন্সরের মাধ্যমেও গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করেন। প্রতি বছর কত সংখ্যক আবেদনকারীকে গ্রিনকার্ড দেয়া হবেÑ তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ফেডারেল সরকার। আবেদনের সময় বা ক্রম অনুসারে সেই কোটা পূরণ করা হয়। বাৎসরিক কোটা পূর্ণ হয়ে গেলে যেসব আবেদনকারীর আবেদন বাদ পড়ে, চেষ্টা করা হয় পরের বছর তাদেরকে যেন তালিকায় স্থান দেয়া যায়। মূলত এই কোটার কারণেই অনেক আবেদনকারীর আবেদন এ মুহূর্তে মঞ্জুর করা যাচ্ছে না।
আবেদনকারী যে দেশের, সেই দেশটির কোটা যদি খালি থাকে- সেক্ষেত্রে ওই আবেদন মঞ্জুর করা হয়। যদি খালি না থাকে, তাহলে পরের বছরের জন্য তুলে রাখা হয়। আমেরিকান এক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে যে এগারো লাখ ভারতীয়ের গ্রিনকাডের আবেদন নিস্পত্তির অপেক্ষায় আছে তাদের মধ্যে কয়েক লক্ষকে গ্রিনকার্ড পেতে ১৩৫ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
বিষয়টি অবাক করার মত হলেও আসলে শুধু ভারত নয়, আরো অনেক দেশের আবেদনকারীদের জন্য এটাই সত্যি যে তারা গ্রিনকার্ড পাওয়ার আগেই পৃথিবীর মায় ত্যাগ করবেন। গ্রিন কার্ডের জন্য বরাদ্দ কোটা একমাত্র পরিবর্তনের এখতিয়ার রয়েছে কেবল কংগ্রেসের। গত বছর গ্রিনকার্ডের ব্যাপারে আশার কথা শুনিয়েছিলেন জো বাইডেন প্রশাসন। অভিবাসন স্বীকৃতি পেতে ৬ মাসের বেশি সময় যাতে না লাগে, তার জন্য চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলে হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়। সমস্যার সমাধানে জট কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কংগ্রেসের ভূীমকা পালন করা উচিত বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন।
Posted ১২:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh