বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর ২০২০
সরকারের কেন্দ্রবিন্দুতে করোনা সংক্রমণ ঘটা বা রাষ্ট্রের কর্ণধারের করোনা সংক্রমিত হওয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকা একমাত্র দেশ নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও রাষ্ট্র প্রধানদের করোনা সংক্রমণ ঘটার তালিকায় রয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো। কিন্তু তাদের অভ্যন্তরীণ গণ্ডিতে স্বল্প লোক সংক্রমিত হলেও ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও তার অভ্যন্তরীণ পরিধিতে সংক্রমণের পরিমাণ অনেক বেশি, যা বিশ্ব মোড়লের দপ্তর হোয়াউট হাউসকে সর্বোচ্চ করোনা ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো জুলাইয়ের গোড়ার দিকে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়েছিলেন। তিনি ভাইরাসটির ভয়াবহতাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলেন এবং জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সুপারিশগুলিকে তিরস্কার করেছিলেন। ফলে, আগস্টের মধ্যে দেশটির মন্ত্রিসভার ২৩ সদস্যের মধ্যে ৮ জনই সংক্রমণের শিকার হন। মার্চের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক এবং নাদিন ডরিসসহ আরও দু’জন প্রবীণ সদস্যও সে মাসে সংক্রমিত হন এবং জনসনের সিনিয়র উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংস এবং স্কটিশ সেক্রেটারি অ্যালিস্টার জ্যাকের মধ্যেও করোনার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল।
ভারত এবং রাশিয়াতে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা সংক্রমিত হয়েছেন, তবে তাদের অসুস্থতা তাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের স্পর্শ করতে পারেনি। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, আমেরিকার পর বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে করোনা ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ভারতে করোনা সংক্রমণের মাত্রা সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ করে বাড়তে শুরু করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার ৫ সদস্য আগস্টে করোনা সংক্রমিত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন মোদির অন্যতম বিশ্বস্ত সহচর এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভারতের প্রাদেশিক মন্ত্রীরাও করোনা সংক্রমণ থেকে রেহাই পাননি। আগস্টের তাদের মধ্যে ১৬ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তবে মোদি সংক্রমিত হননি।
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভসহ রাশিয়ার বেশ কয়েকজন আইন প্রণেতা করোনা সংক্রমিত হন এবং সেরে ওঠেন। দ্য মস্কো টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে রাশিয়ান ডুমার নিম্নকক্ষের কমপক্ষে ৬০ সদস্য মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছেন। সেপ্টেম্বরে তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইরান বিপুল সংখ্যক সংক্রমণ পরিলক্ষিত হওয়া প্রথম দেশগুলির একটি। মহামারির প্রথমদিকে ইরান সম্ভবত বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। গত মার্চে ইরানের পার্লামেন্টে সংক্রমণ অস্বীকার করার পরিবেশের কারণে দেশটির পার্লামেন্টে প্রায় ৮ শতাংশ সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমিতদের মধ্যে ভাইস পেসিডেন্ট মাসুমেহ এবেতেকার এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ইরাজ হারিচিও ছিলেন।
তবে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই একই সাথে রাষ্ট্রপ্রধান এবং তার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে করোনার ব্যপক বিস্তার পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা বাকিদের থেকে ব্যতিক্রম এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। গত ১ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার করোনা সংক্রমণ ঘোষণা করার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩৪ জন কর্মকর্তার করোনা সংক্রমণের খবর সামনে এসেছে। তাদের অনেকেই অ্যামি কনি ব্যারেটের সুপ্রিম কোর্টের মনোনয়নের অনুষ্ঠানের অতিথি ছিলেন, যেখানে নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি এবং প্রায় কেউ মাস্ক ব্যবহার করেনি। ইভেন্টটিকে এখন একটি সম্ভাব্য সুপার-স্প্রেডার বা দ্রুত সংক্রামক ইভেন্ট হিসাবে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের চলমান অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্যে নির্বাচনে প্রাক্কালে ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষস্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ হোয়াইট হাইসের সার্বিক পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ করে তুলেছে। সূত্র : বিজনেস ইনসাইডার
Posted ৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh