বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
ইউরোপ ও আমেরিকায় মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা এবং কসাইখানার কর্মীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেশি হয়েছে।
সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণের শিকার কোনো ব্যক্তির হাঁচি, কাশি বা নিশ্বাসের মাধ্যমে বের হওয়া ড্রপলেট থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটে থাকে। সংক্রমণের শিকার ব্যক্তির কাছাকাছি আসা ছাড়াও জীবাণুযুক্ত কোনো জায়গা স্পর্শ করার মাধ্যমেও ভাইরাস সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে। ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিকিউলার অঙ্কোলজির অধ্যাপক লরেন্স ইয়াং বলেন, ‘ফ্যাক্টরিগুলোতে, বিশেষ করে যেসব জায়গা ঠান্ডা এবং স্যাঁতসেঁতে, দীর্ঘসময় করোনা ভাইরাস টিকে থাকা এবং ছড়ানোর জন্য সেখানে আদর্শ পরিবেশ থাকে। অন্য জায়গার চেয়ে সেসব জায়গায় জীবাণু বহনকারী ড্রপলেট ছড়ানো এবং টিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে।’
এছাড়া এই ধরনের কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি উচ্চমাত্রায় শব্দ করে বলে মানুষ জন অপেক্ষাকৃত উচ্চস্বরে কথা বলে এবং ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে বলছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কর্মীদের সামাজিক দূরত্ব মানানো কঠিন হওয়ার কারণে তাদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা বেশি ঘটছে। মাংস প্রক্রিয়াজাত করার কাজটি কঠিন হওয়ায় কর্মীরা দীর্ঘসময় মাস্ক পরে কাজ করতে পারেন না। এটাও কারখানার কর্মীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের একটি অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এসব কারখানায় ব্যবহৃত মাংস থেকে কর্মীদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হচ্ছে, এ রকম কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি বলছে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
কারখানার ভেতরের পরিবেশ ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণে কারখানার কর্মীদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বেশি হতে পারে। অনেক ফ্যাক্টরির কাছাকাছি জায়গায় তাদের কর্মীদের বাসস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেখানে তারা এক সঙ্গে বাসে করে যাওয়া-আসা করে। অনেক ক্ষেত্রে তাদের বাসস্থানের পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে। মাংস প্রক্রিয়াজাতের কারখানাগুলোর পাশাপাশি মাংস সংরক্ষণের জায়গা অর্থাৎ রেফ্রিজারেটরেও এই ভাইরাস অপেক্ষাকৃত দীর্ঘসময় টিকে থাকতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে যেসব ভাইরাস পরিবেশে ছিল, সেগুলোর কয়েকটি প্রজাতি হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় স্থিতিশীল অবস্থায় টিকে থাকে বলে প্রমাণ পেয়েছিল বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন কাছাকাছি প্রজাতির একটি করোনা ভাইরাস যেহেতু ফ্রিজে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে, কাজেই নভেল করোনা ভাইরাসেরও একই বৈশিষ্ট্য থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ফ্রিজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
Posted ৫:০৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ জুন ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh