নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স কাউন্টির জজ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী এটর্নী সোমা সাঈদের ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠানে বক্তারা আগামী ২ নভেম্বর মঙ্গলবারের নির্বাচনে তাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। বক্তারা বলেন, একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান হিসেবে সোমা প্রাইমারী নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। আসন্ন নির্বাচনে তাকে বিজয়ী করে এই ইতিহাসের ধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কেননা, বাংলাদেশী কমিউনিটি নিউইয়র্কের উদীয়মান কমিউনিটি এবং মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশীদের অবস্থান সুদৃঢ় হচ্ছে। খবর ইউএনএ’র। বাংলাদেশী আমেরিকান কমিউনিটি ভয়েস-এর ব্যানারে জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউস্থ মির্চ রেষ্টুরেন্টে শনিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এই ‘ফান্ড রেইজিং মিট এন্ড গ্রীল’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই ফান্ড রেইজিং-এ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলম্যান পিটার কু, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম ও তৈয়বুর রহমান হারুন, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটর অন্যতম উপদেষ্টা ছদরুন নূর ও অধ্যাপক শাহাদৎ হাসান।
ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডেমোক্র্যাট মিজান চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, রাসেক মালিক, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট রেজাউল করীম চৌধুরী, এটর্নী আহসান হাবীব, ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সভাপতি বিলাল আহমেদ চৌধুরী, সহ সভাপতি এএফ মিসবাহউজ্জামান, সদস্য বাবুল হাওলাদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সোমা সাঈদ উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সবাই যদি ভোট দেন অবশ্যই বিজয় নিশ্চিত। তিনি বলেন, ভোট দেওয়া ছাড়াও ডোনেশন, ভোট প্রার্থনা, ক্যাম্পেইন, ফোন কল প্রভৃতির মাধ্যমেও তার নির্বাচনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। অনুষ্ঠানে ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স সিভিল কোর্টের বিচারক পদে গত ২২ জুন অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে বিজয়ী হন বাংলাদেশী আমেরিকান এটর্নি সোমা সাঈদ। চূড়ান্ত ফলাফলে এটর্নি সোমা বিজয়ী হলে তিনি হবেন নিউইয়র্ক সিটির বিচার বিভাগে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রথম বিচারক। শুধু তাই নয় প্রথম মুসলিম নারী সাউথ এশিয়ান বিচারক হিসেবে তিনি পরিচিত হবেন। বিচারক নির্বাচিত হলে সোমা সাঈদ এই পদে নিয়োজিত থাকবেন আগামী ১০ বছর । আর এটা হবে বাংলাদেশী আমেরিকান কমিউনিটির জন্য অনেক বড় পাওয়া। উল্লেখ্য নিউইয়র্ক সিটির সিভিল কোর্টে মোট বিচারকের সংখ্যা ১২০ জন। তন্মধ্যে ৫০ জন সিভিল কোর্টে এবং বাকীরা অন্যান্য কোর্টে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। সিভিল কোর্টের বিচারকগণ সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণের মামলা পরিচালনা করতে পারেন। সিভিল কোর্টের বিচারক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পূর্বে এটর্নি সোমা সাঈদ নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট-২৪ এর বিশেষ নির্বাচনে অংশ নেন। গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক ভোট পান তিনি। এটর্নি সোমা সাঈদ কুইন্স কাউন্টি ওমেন’স বার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনে তাকে সমর্থণ প্রদান করেছেন বিভিন্ন স্তরের রাজনৈতিক, সামাজিক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ। কমিউনিটির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে যার ফলে বিভিন্ন সময়ে জনগণের শিক্ষা, চাকুরী, ক্ষুদ্র ব্যবসা, গৃহায়ন প্রভৃতি মৌলিক অধিকার আদায়ে আলবেনীতে ছুটে যান তিনি ।
সোমা সাঈদ বারো বছর বয়সে আমেরিকা আসেন। বসবাস শুরু করেন কুইন্সে। এটর্নি সোমার পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। তার প্রয়াত পিতা আফতাব সাঈদ বাংলাদেশে ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রয়াত মাতা ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। তার পিতা ছিলেন সাপ্তাহিক বাংলাদেশ’র প্রথম সম্পাদক। । কুইন্সের মানুষের সাথে তাঁর গড়ে উঠে আত্মীক বন্ধন। নারী-পূরুষ, ধর্ম-বর্ণ কিংবা ছোট-বড় নির্বশেষে সকলের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন সোমা সাঈদ। এটর্নি সোমা সাঈদ কুইন্স কাউন্টি ওমেন’স বার এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। ২০০৮ সালের মন্দাকালীন সময়ে সোমা সাঈদ আন্দোলন করেন উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে সোচ্চার হন তিনি। এশিয়ান কমিউনিটিতেও সোমা সাঈদের পেশাগত ও সামাজিক যোগাযোগ রয়েছে। স্থানীয় কমিউনিটিতে একধরণের গ্রহণ যোগ্যতাও রয়েছে তার।
Posted ৩:০৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh