নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১
এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সাথে মতবিনিময় ও বৈঠক উপলক্ষে সরকারি সফরে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গত ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার পরপরই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের এই সফর বিশেষ গুরুত্ব বহণ করে।
সফরকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ সহিদ; জাতিসংঘ অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের সভাপতি কোলেন ভিক্সেন কিলাপাইল; স্বল্পোন্নত দেশ, ভূ-বেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ এবং উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহের উচ্চ প্রতিনিধি ও আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল কোর্টিনে র্যাট্রে; এবং জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভোলপমেন্ট পলিসি’র সচিব রোন্যাল্ড ম্যোলেরাস্ এর নেতৃত্বাধীন একটি বিশেষজ্ঞ দলের সাথে আলাদা আলাদা ফলপ্রসু বৈঠক করেন।
জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সাথে অনুষ্ঠিত এসকল বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণ ছিল বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের লালিত আকাঙ্ক্ষা।
কাতারের দোহায় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় ৫ম এলডিসি সম্মেলনে গ্রহণের জন্য ‘এলডিসি’র দেশগুলোর পরবর্তী ১০ বছরের কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক ডকুমেন্টটির নেগোসিয়েশনে বাংলাদেশের নেতৃত্বদানের বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ সমূহের প্রতি আলোকপাত করেন, বিশেষকরে তিনি আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থাসমূহের যে সুবিধা এলডিসিভূক্ত দেশসমূহ পায় তা উত্তরণ পরবর্তী সময়ে অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। দোহা কর্ম-পরিকল্পনায় যাতে উত্তরিত ও উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রণোদনা ভিত্তিক উত্তরণ সহায়তা কাঠামো নিশ্চিত করা হয়, সে বিষয়েও জোর দেন বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এক্ষেত্রে তিনি জাতিসংঘের আলোচ্যসূচিতে ‘উত্তরণ’ ইস্যুটিকে অধিকতরত গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেওয়ার জন্য আন্ত: এজেন্সি সমন্বয় বৃদ্ধির সুপারিশ করেন।
বৈঠকসমূহে জাতিসংঘ নেতৃবৃন্দ এবং বিশেষজ্ঞগণ মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জাতিসংঘের নতুন উদ্যোগ যেমন ‘সাসটেইন্যাবল গ্রাজুয়েশন সাপোর্ট ফ্যাসিলিটি’ এবং ‘এনহ্যান্সড্ গ্রাজুয়েশন মনিটরিং’ সম্পর্কে অবহিত করেন যা উত্তরিত দেশসমূহের যে কোনো সঙ্কটে বা কাঙ্খিত অবস্থান থেকে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিলে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। দোহা কর্ম-পরিকল্পনার নেগোসিয়েশনে নেতৃত্বদানের জন্য জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা এবং কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি রবার্ট রে এর প্রশংসা করেন জাতিসংঘের নেতৃবৃন্দ।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট কার্যালয় পরিদর্শনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। গত ৬ ডিসেম্বর সোমবার ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসানসহ কনস্যুলেটের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ তাঁকে স্বাগত জানান। কনস্যুলেটের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব কনস্যুলেটের সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতি বা ডিজিটালাইজ করার পরামর্শ দেন। আলোচনাকালে তিনি কনস্যুলার সেবাগ্রহীতাদের সুবিধার্থে এবং অধিকতর সেবা প্রদানের নিমিত্তে কনস্যুলেটের নিজস্ব ভবন ক্রয়ের ব্যাপারেও গুরুত্বারোপ করেন।
ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে কনস্যুলেট এর বিভিন্ন কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব কনস্যুলেটের বিভিন্ন কনস্যুলার সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং কনস্যুলার সেবাপ্রার্থীদের সাথে কথা বলেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব কনস্যুলেটের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কনস্যুলেটের কর্মকর্তাবৃন্দকে অনুরোধ জানান। কনস্যুলেট সফরকালে তাঁর সহধর্মিণী সরকারের সাবেক সচিব মিজ্ কামরুন নাহারও উপস্থিত ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে কনস্যুলেট সফরের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
Posted ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh