দর্শক-শুভানুধ্যায়ীদের ভালোবাসায় সিক্ত হলো টেলিভিশন টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকা। নিউইয়র্কের জনপ্রিয় টাইম টেলিভিশন সপ্তম বছর পেরিয়ে অষ্টম বর্ষে আর কমিউনিটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা ২৫ বছর পেরিয়ে ২৬ বছরে পদার্পণ করেছে। কমিউনিটি সেবার পাশাপাশি আমেরিকান মূলধারার রাজনীতিতে কমিউনিটির এম্পাওয়ারমেন্টে টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকা’র অবদান অনস্বীকার্য। কমিউনিটির সেবার পাশাপাশি আমেরিকান মূলধারার রাজনীতিতে অগ্রণি ভূমিকা রাখছে গণমাধ্যম দু’টি। মিডিয়া দুটির বর্ষপূর্তী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন অতিথি ও বক্তাগণ। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জ্যামাইকার তাজমহল পার্টি হলে আয়োজিত মিডিয়া দু’টির বর্ষপূর্তীর বর্ণাঢ্য গালা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য, নিউইয়র্কের কংগ্রেশনাল ডিষ্ট্রিক্ট – থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান হেকিম জাফরী। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু ও নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে নবনির্বাচিত প্রথম বাংলাদেশী-আমেরিকান কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তবর্গ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে টাইম টেলিভিশন-এর সিইও এবং বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক আবু তাহের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশী কমিউনিটির বিনির্মাণের প্রত্যয়ে যাত্রা শুরু করা টাইম টিভি ও বাংলা পত্রিকা আজো অবিচল আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। মিডিয়া দুটির অগ্রযাত্রায় কমিউনিটির সহযোগিতার জন্য তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কংগ্রেসম্যান হাকিম জাফরি অবু তাহেরকে তার অন্যতম ঘনিষ্ট বন্ধু উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে এগিয়ে নিতে তার ভিষণ ও মিশন সফল হয়েছে। ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু তার বক্তব্যে দুই বছর আগে বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ এবং সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। কমিউনিটির অগ্রসরে তিনি টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকা’র ভূমিকার প্রশংসা করেন।

নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ বলেন, আমার আজকের এই অবস্থানে আসতে মিডিয়ার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই সাথে নারীর ক্ষমতায়নে মিডিয়া সহ অভিভাবকদের আরো ভূমিকা রাখার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক ও টাইম এক্সক্লুসিভ অনুষ্ঠানের প্রধান প্যানেলিষ্ট নাজমুল আহসান বলেন, জনগণের কল্যানে সঠিক তথ্য পরিবেশন মিডিয়ার প্রধান দায়িত্ব। সেই দায়িত্বই পালন করছে টাইম টেলিভিশন। যার প্রতিদিনের অনুষ্ঠান ‘টাইম এক্সক্লসিভ’ প্রবাস ছাড়িয়ে বাংলাদেশ ও বিদেশেও জনপ্রিয়।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য ডা. মাসুদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস আহমেদ ও শাহ নেওয়াজ, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট বেদারুল ইসলাম বাবলা, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী অসিফ চৌধুরী, বাংলা পত্রিকা’র বার্র্তা সম্পাদক হাবিব রহমান, নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় ইউটিউবার প্রিসিলা। এছাড়াও ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক ও টাইম টেলিভিশনের ‘টাইম এক্সুসিভ’ অনুষ্ঠানের নিয়মিত অতিথি আলোচক হাসান ফেরদৌস ও টাইম টেলিভিশনের সাবেক অনুষ্ঠান প্রধান, মূলধারার রাজনীতিক মেরী জোবায়দা। আরো শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডা. সবুর খান, সাপ্তাহিক প্রথম আলো’র সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে কংগ্রেসম্যান হাকিম জাফরীর পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মানণা প্রদান করা হয়। এসময় সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান এবং প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিল্পী তাজুল ইমাম ছাড়াও প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী চন্দ্রা রায় ও শামীম সিদ্দিকী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তবলায় ছিলেন তপন মোদক। এছাড়াও নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় শিল্পী জেরিন মাইশা পরিবেশন করেন একক নৃত্য। মাজেদ ডিজায়ার-এর ‘মাজেদ লোদী ও নাজিয়া জাহান’ গান ও নৃত্যের সাথে ফ্যাশন শো প্রদর্শন করেন। সাংস্কৃতিক পর্ব উপস্থাপনায় ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী শামীম সিদ্দিকী ও উপস্থাপক আশরাফুল হাবিব মিহির। সাউন্ড সিস্টেমে ছিলেন তানভীর শাহীন। নিউইয়র্কের বিভিন্ন মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিক এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও চ্যানেল ৭৮৬ ও এ-এইচ ড্রিম ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন সংগঠন/প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে আবু তাহেরকে বিশেষ শুভেচ্ছা জানানো হয়। তবে করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তারে সীমিত অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে। যারা এসেছিলেন তারা প্রত্যেকেই ছিলেন ভ্যাকসিনেটেড। নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। নিউইয়র্ক (ইউএনএ)