নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১
নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল ও স্টেট নির্বাচনে লড়েছেন এমন দুই বাংলাদেশী-আমেরিকান নারী প্রার্থী স্টেট নির্বাচনী আইন প্রয়োগে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। মেরি জোবাইদা ও মৌমিতা আহমেদের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের আইন পরিবর্তন হয়ে গেছে। ডাক নামে নির্বাচনে দাঁড়ানোয় প্রার্থীতা বাতিল হয়েছিল এ দুই নারীর। এখন আইন সভায় রীতিমতো আইন পাশ করে মূল নামের পরিবর্তে ডাক নামে নির্বাচনের বৈধতা দিয়েছে নিউইয়র্ক রাজ্য। রাজধানী আলবেনীতে ষ্টেট ও সিনেটে পাশ হয়েছে নতুন আইন।
জানা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিলে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রাইমারী নির্বাচনে নিউইয়র্ক রাজ্যের অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-৩৭ (নিউইয়র্ক সিটির সানিসাইড, রিজউড, এলআইসি, এস্টোরিয়া, উডসাইড ও ম্যাসপ্যাথ এলাকা) থেকে অ্যাসেম্বলীওম্যান পদে লড়েন মেরি জোবাইদা আর অ্যাসেম্বলী ডিষ্ট্রিক্ট-২৪ ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে মৌমিতা আহমেদ। সার্টিফিকেটে মেরি জোবাইদার নাম মেহেরুন্নেছা আর মৌমিতা আহমেদের নাম আকিয়া তাসনিম আহমেদ। প্রার্থীতায় মেহেরুন্নেছার পরিবর্তে মেরি জোবাইদা আর আকিয়া তাসনিম আহমেদের পরিবর্তে মৌমিতা আহমেদ ব্যবহার করায় তাদের মনোনয়ন বাতিল করে বোর্ড অফ ইলেকশন।
পরবর্তীতে বোর্ড অব ইলেকশনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান মেরি ও মৌমিতা। আদালতে তারা তুলে ধরেন মূল নামের পরিবর্তে ডাকনাম ব্যবহারের কারণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আদালতকে তারা জানান, বাংলাদেশে সার্টিফিকেটে থাকা নামের বাইরেও ডাক নামে ডাকা হয় অধিকাংশ মানুষকে। এদেরকে সাধারণ মানুষ সাটিফিকের নামের পরিবর্তে ডাক নামেই বেশি চেনেন। মেরি ও মৌমিতা নাম ব্যবহারের পেছনের কারণও এটি। বাংলাদেশ ও নিউইয়র্কের মানুষ তাদের মূল নামের পরিবর্তে ডাক নামেই বেশি চেনেন। এজন্যই এ নাম ব্যবহার করা হয়েছে প্রার্থীতায়। তাদের কথায় সন্তোষ্ট হয়ে আদালত প্রার্থীতা বহাল রাখেন। এসময় তাদের হয়ে আদালতে লড়েন এটর্নী আলী নাজমী। পরবর্তীতে ডাক নামের কারণে ভবিষ্যতে আর কারো প্রার্থীতা যেন বাতিল না হয় সেজন্য এগিয়ে আসেন নিউইয়র্ক রাজ্যের আইন প্রণেতারা। নিউইয়র্ক রাজ্য সিনেটর জন ল্যু বিষয়টি আইন আকারে সিনেটে উত্থাপন করলে সংখ্যাগরিষ্টের ভোটে ডাক নামেও নির্বাচন করার আইন পাশ হয়। পরে ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান জেফরিন এল অউব্রি বিলটি অ্যাসেম্বলিতে তুললে সেখানেও সংখ্যাগরিষ্টদের ভোটেপাশ হয় বিলটি ।
শুক্রবার এই বিলে স্বাক্ষর করেছেন নিউইর্ক রাজ্য গভর্নর কেথি হোকো। এর মাধ্যমে ডাক নামে নির্বাচনে দাঁড়ানোর বৈধতা আইনে পরিণত হলো। বিলটি সম্পর্কে গভর্নর ক্যাথি হকুল বলেন, দু’জন সাউথ এশিয়ান প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন যা করেছিল তার পুনরাবৃত্তি রোধ করতেই এই আইন। আমরা সবাইকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়ার সুযোগকে অবারিত করে দিতে চাই। এ ব্যাপারে মেরী জোবাইদা বলেন, এটি আমাদের ব্যক্তিগত কোন লড়াই ছিল না। ডাক নামের জন্য যখন আমাদের প্রার্থীতা বাতিল হলো তখন আমরা লড়তে শুরু করলাম এবং এর শেষ দেখে ছাড়বো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। অবশেষে আমরা জয়ী হয়েছি। আমরা সবার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আজকের এই ঐতিহাসিক মুহুর্তে আমাদের জন্য যারাই সাহস ও সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
মৌমিতা আহমেদ বলেছেন, সত্যের জন্য আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। এটা শুধু বাংলাদেশী ইমিগ্র্যান্ট নয় সকল ইমিগ্র্যান্টদের বিজয়। নিউইয়র্ক রাজ্যে পাশ হওয়া নতুন আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রাজ্যও গ্রহণ করবে বলেও বিশ্বাস মেরি ও মৌমিতার। বিলের স্পন্সর সিনেটর জন লু বলেন, মেরী ও মৌমিতা যে লড়াই শুরু করেছিলেন তা ছিল অভিবাসী সমাজের দাবী আদায়ের সংগ্রাম। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। নিউইয়র্ক (ইউএনএ)
Posted ৩:৩১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh