নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ইউরোপ, কানাডা ও আমিরাকায় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইমিগ্রান্টরা বিভিন্ন সময় অনেক অব্যবহৃত চার্চ ক্রয় করে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার তৈরীর কথা শোনা যায়। বাঙালী কম্যুনিটির কিছু খোদাভীরু মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় লং আইল্যান্ডের নাসাউ কাউন্টির পোর্ট ওয়াশিংটনে ১১৮ হারবার রোডে একটি চার্চ ক্রয় করে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে রূপান্তরিত হয়েছে! বিশিষ্ট কম্যুনিটি এক্টিভিস্ট ও ব্যাবসায়ী আসেফ বারী টুটুল ও জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহতী উদ্যোগটি আল্লাহর রহমতে সফল্যের মুখ দেখেছে। এই মসজিদটির নাম করণ করা হয়েছে ‘পোর্ট ওয়াশিংটন মসজিদ ইন্ক’। উল্লেখ্য, মসজিদের প্রপার্টি ক্রয় করতে গিয়ে কর্যে হাসানা হিসেবে নগদ অর্থ লগ্নী হয়েছে।
বারী হোম কেয়ারের সিইও আসেফ বারী টুটুল বলেন, আমেরিকান মুসলিম সেন্টর নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে জেএমসির প্রধান ইমাম মাওলানা আবু জাফর বেগ, মুফতি মালেক ও ইমাম রফিকুল ইসলাম মিলে নিউইয়র্কের পোর্ট ওয়াশিংটনের ১১৮ হারবার রোডের চার্চটি কেনার উদ্যোগ নেন ও এটিকে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চুক্তি করেন। সে সময় ফান্ড রেইজিং এর চেষ্টা শুরু হয়।
চার্চটি ক্রমে মোট মূল্য ছিল ৭.৫০ লাখ ডলার। দেড় বছর সময়ে তারা পুরো অর্থ সংগ্রহ করতে পারছিলেন না। যার ফলে এটি হাত ছাড়া হয়ে যাবার উপক্রম হয়। উদ্যোক্তরা আমার কাছে আসেন এবং মাওলানা আবু জাফর বেগ আমাকে বিস্তারিত জানিয়ে সহযোগিতা চান, লং আইল্যানের ঐ এলাকায় যে সব বাংলাদেশি আছেন তাদের পক্ষে এত অর্থ দেয়া সম্ভব হবে না বলে আমার কাছে বাকী টাকা কর্জে হাসানা হিসেবে সহযোগিতা চান। এ সময় আমার সাথে আরো এগিয়ে আসেন ইমিগ্রান্ট এল্ডার হোমের কর্ণধার ও জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও রনকনকমা প্রবাসী মো: জিয়া খান। আমরা এই তিন জন মিলেই কর্জে হাসানা হিসেবে বাকী টাকা সংগ্রহ করে ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ উক্ত চার্চটি ক্রয় করি। এ সংবাদে কমিউনিটিতে এক বিশেষ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় যে নিউইয়র্কে এই প্রথম একটি চার্চ মসজিদে রূপান্তরিত হলো।
গত ২৯ জানুয়ারি রোববার মসজিদ প্রাঙ্গণে মসজিদ ক্রয় উপলক্ষ্যে শোকর ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। কম্যুনিটির উলেখযোগ্য সংখ্যক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। উদ্যোক্তারা সবাইকে সাধ্যনুযায়ী সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে মসজিদের কর্যে হাসানা পরিশোধে শরীক হতে আহবান জানিয়েছেন।
মসজিদ পরিচালনা পরিষদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আসেফ বারী টুটুল ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া খান সার্বিক অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। আসেব বারী টুটুল জানান, এই মুহূর্তে আমরা নতুন করে ফান্ড রেইজ করছি না। আগামীতে এটি করা হবে। তার পরও এই দিন প্রায় আমন্ত্রীত অতিথিরা ৭ হাজার ডলারের মত ফান্ড দিয়েছেন। নাজাম আদায়, রমজানে তারাবির নামাজ, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইসলামিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও আরবি শিক্ষাও চালু করা হবে বলে পরিচালনা পরিষদের প্রেসিডেন্ট আসেফ বারী টুটুল জানান।
দোয়া অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন যথাক্রমে ফার্মাসিস্ট সালেহ আহমেদ, ডা. আতুউল ওসমানী, ডা. নাহীদ সুলতানা, বারী গ্রুফের চেয়ারম্যান মুনমুন হাসিনা বারী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম, রিয়েল এস্টেট ব্রোকার মামুন মির্জা, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নাসির খান পল, আবদুল লতিফ সম্রাট, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আহসান হাবীব, বগুড়া সমিতির প্রেসিডেন্ট মহব্বত আকন্দ ও সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম, সাফক ইসলামিক সেন্টর থেকে মো: জিয়া খান ও মো: জিল্লুর রহমান, ইমিগ্রান্ট এল্ডর হোমের কর্ণধার ও জেবিবিএ’র সভাপতি গিয়াস আহমেদ, বারাকা কনসট্রাক্সনের প্রেসিডেন্ট ইফতেখার আহমেদ, রিয়েলেটর আজিজুল হক মুন্না ও মেজবা উদ্দিন প্রমুখ।
এছাড়াও স্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাসান ইমাম, মামুন মির্জা, মিঠু মুরাদ, মো: মির্ধা, মিসেস নাজনিন মির্জা, আব্দুর রাজ্জাক, মৌসুমী ভূইয়া, আফরোজা বেগম, মারুফ মির্জা, সানি হোসাইন, তানভির কবির, পিনো কবির, মুরাদ হোসেন, মিজানুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন পোর্ট ওয়াশিংটন পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট-এর সার্জেন্ট পিটার গিরিভিট ও তার টিম।
Posted ১২:২৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh