বাংলাদেশ অনলাইন ডেস্ক : | বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের জন্য মুখোমুখি হয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট দলের জো বাইডেন। ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টায় এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ৩ নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তিন ধাপের বিতর্কের প্রথম পর্ব আজ অনুষ্ঠিত হলো। বিতর্কে দুজনের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে বিশৃঙ্খলা দেখা যায়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল বাইডেনকে বিব্রত করা, যা নিশ্চিত করতে তিনি ক্রমাগত বাইডেনের কথার মধ্যে তাকে বাধা দিয়েছেন। এর ফলে ৯০ মিনিটের বিতর্কের মধ্যে বেশ কয়েকবার দুজনের মধ্যে বচসা হয়েছে।
ট্রাম্প যেমন প্রশ্ন তুলেছেন বাইডেনের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে, তেমনি বাইডেনও ট্রাম্পকে ‘ক্লাউন’ বলে কটাক্ষ করেছেন। বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বাইডেন প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কি চুপ করবে?’
বিতর্কের মধ্যে বাইডেনের কথা থামিয়ে দিয়ে বারবার তাকে বাধা দিয়েছেন ট্রাম্প। জবাবে একপর্যায়ে ডেমোক্র্যাট বাইডেনের স্মিত হাসির সঙ্গে মাথা ঝাঁকিয়েই হতাশা প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।
এমনকি একপর্যায়ে বিতর্কের সঞ্চালক ক্রিস ওয়ালেস যখন দুই পক্ষকে করোনাভাইরাস নিয়ে আড়াই মিনিট করে বাধাহীনভাবে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেন, তখন বাইডেন ট্রাম্পের ক্রমাগত কথার মাঝখানে বিরক্ত করার প্রবণতাকে কটাক্ষ করে ফোঁড়ন কেটে বলেন, ‘তার জন্য শুভকামনা।’
করোনাভাইরাস প্রসঙ্গ
এই বিতর্কে করোনাভাইরাস প্রসঙ্গটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ছিল এবং বিতর্কের শুরুর দিকেই এ বিষয়ে আলোচনা হয়। করোনাভাইরাসে ২ লাখ মানুষ মারা যাওয়ায় ট্রাম্পের কাছ থেকে ব্যাখ্যা আশা করছিল মানুষ। তিনি অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই বলে যে, তিনি পদক্ষেপ না নিলে আরও বহু মৃত্যু হতে পারতো এবং জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। এর জবাবে বাইডেন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে দর্শকদের উদ্দেশে সরাসরি প্রশ্ন করেন যে, তারা ট্রাম্পকে বিশ্বাস করেন কি না।
দীর্ঘ সময় সরকারি দায়িত্বে থাকা জো বাইডেনকে বিতর্কের এক পর্যায়ে ট্রাম্প বলেন, ‘৪৭ মাসে (ক্ষমতায় থেকে) আমি যা করতে পেরেছি, আপনি ৪৭ বছরে তা পারেননি।’ বাইডেনের জবাব ছিল, ‘এই প্রেসিডেন্টের অধীনে আমরা আরও দুর্বল, অসুস্থ, দরিদ্র ও বিভাজিত হয়েছি।’
নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ
বিতর্কের চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা ছিল নির্বাচনের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে। ওই অংশে বামপন্থী ও দক্ষিণপন্থী দুই পক্ষই আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। ট্রাম্পের আশঙ্কা, ডাকের মাধ্যমে ভোট দেওয়া হলে দুর্নীতির সুযোগ থেকে যায়।
এ ব্যাপারে বাইডেন দাবি জানান, সবগুলো ব্যালট যেন গণনা করা হয় এবং নির্বাচনের ফলাফল সব পক্ষ যেন মেনে নেন। শেষদিকে তিনি আরও কিছু বলতে চাইলেও ট্রাম্প তাকে আবারও বাধা দিলে সঞ্চালক ওয়ালেস বিতর্কের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘বিশৃঙ্খলাপূর্ণ’ বিতর্ক সন্ধ্যার শেষটা অনেকটা হঠাৎ করেই হয়। আর এদিনের বিতর্কটা প্রথাগত কোন বিতর্কের মতও ছিল না। এই ধরনের অনুষ্ঠান সাধারণত নির্বাচনের ফলাফলে কোন ভূমিকা রাখে না। আর ট্রাম্প ও বাইডেনের প্রথম বিতর্কটা যতটা গণ্ডগোল ও পাল্টা দোষারোপের মধ্যে শেষ হয়েছে, এর ফলে খুব বেশি মানুষের চিন্তাভাবনা পরিবর্তন হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনাও নেই।
Posted ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh