শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ভারত-চিন সংঘাত ঘিরে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রবল!

বাংলাদেশ ডেস্ক :   |   শনিবার, ২৭ জুন ২০২০

ভারত-চিন সংঘাত ঘিরে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রবল!

ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যাওয়া বিচিত্র নয়। চিনের অনমোনীয় আগ্রাসন নীতির কারণে ঘটনার গতিপ্রকৃতি কিন্তু সেদিকেই এগোচ্ছে। পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন দু’পক্ষই সেনা বাড়ানোয় এমনিতেই চরম উত্তেজনা রয়েছে। এর পর যদি আমেরিকা ভারতের পাশে দাঁড়ায়, তা হলে অবধারিত ভাবেই কিন্তু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যাবে।

গলওয়ান সংঘাত পরবর্তী পরিস্থিতিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের যে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, তা বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলোও বুঝছে। কিন্তু, কেউ-ই প্রকাশ্যে চিনকে তার আগ্রাসন নিয়ে কিছু বলছে না। রাশিয়া এখনও পর্যন্ত মুখ বন্ধই রখেছে। গলওয়ান সংঘাতের পর ভারত-চিন দু-পক্ষকে নিয়ে বসার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যায় রাশিয়া। কারণ, না ভারত, না চিন কেউ-ই তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপে রাজি হয়নি।


বর্তমান পরিস্থিতি রাশিয়া কাকে শেষ পর্যন্ত সমর্থন করবে, কার পাশে গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে গোটা বিশ্ব। এমনকী রাশিয়া নিজেও ধন্দে রয়েছে। তার কারণ ভারত তার পুরনো বন্ধু। অন্য দিকে, চিনের সঙ্গেও রাশিয়ার সম্পর্ক এখন ভালো। তাই রাশিয়া পুরনো মিত্র নাকি নয়া মিত্রের পাশে দাঁড়াবে তা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেনি।

ভারতের পাশে আমেরিকা দাঁড়ালে, সে ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া দাঁড়াবে চিনের পিছনে। ভারত-চিন যুদ্ধ যদি শেষ পর্যন্ত বাধেই সে ক্ষেত্রে শুধু আমেরিকা নয়, জাপান, অস্ট্রেলিয়াও ভারতের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে নেমে পড়বে। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে ভারত-চিন যুদ্ধ এড়ানো কিন্তু এ বার মুশকিল। কৃটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে ভারত মীমাংসায় আগ্রহ দেখালেও চিন কিন্তু ভারতের জমি আঁকড়ে বসে রয়েছে। গলওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে তারা ৮০০ মিটার দূরে রয়েছে বলে দাবি করলেও, উপগ্রহ চিত্র কিন্তু সে কথা বলছে না। ভারতীয় ভূ-খণ্ডের যে অংশ চিন অবৈধ ভাবে দখল করে, স্থায়ী কাঠোমো গড়ে তুলেছে, সেখান থেকে সরার নাম করছে না।
ভারত যে চিনের এই দখলদারি এ বার মানবে না, তা লাদাখ সীমান্তে যুদ্ধের প্রস্তুতিতেই পরিষ্কার। শুধু গলওয়ানের জমি নয়, লাদাখ থেকে কেড়ে নেওয়া আকসাই চিনের জমিও ভারত এ বার বুঝে নিতে চায়। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর থেকেই আকসাই চিন তাদের দখলে রেখেছে বেজিং। বিশেষত, এমন একটা পরিস্থিতিতে যখন আমেরিকার মতো শক্তিধর বন্ধু পাশে রয়েছে।


তবে, আমেরিকার শক্তিতে ভরসা করেই যে ভারত যুদ্ধে নামবে, তা কিন্তু নয়। চিনকে মোকাবিলায় ভারতের শক্তি কিন্ত কম নেই। লাদাখে ইতিমধ্যে তিন বাহিনীর ১৫ হাজারেরও বিশে সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। পার্বত্য এলাকায় ভারতের এই ১৫ হাজার সৈন্যের মোকাবিলায় চিনের অন্তত ৫ লক্ষ সেনা লাগবে। এমনটাই মনে করেন সমর বিশেষজ্ঞরা। চিনের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ভারতের অত্যন্ত শক্তিধর ভীষ্ম ট্যাংকও লাদাখে অপেক্ষা করছে। লাদাখ সীমান্তের অবহ চাক্ষুষ করতে সেনাপ্রধান নিজে কয়েক দিন আগে ঘুরে গিয়েছেন। ফিল্ড কম্যান্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এখন উপরতলা থেকে খালি নির্দেশের অপেক্ষা।

এর মধ্যে চিন আর একবার কোনও ভাবে প্ররোচানা দিলে, তা বারুদে আগুন পড়ার মতোই হবে। সেনাকে ফ্রি-হ্যান্ড দিয়েই রেখেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সেনার হাতেই ছাড়া রয়েছে।


এর পর তো আমেরিকা রইল। চিনকে বারবার সতর্ক করে থেমে নেই আমেরিকা। মার্কিন সেনা কিন্তু ইউরোপ ছেড়ে এদিকেই আসছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে বড় সংখ্যক মার্কিন সেনা চলে আসবে বলে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও। আমেরিকার মাথায় শুধু ভারত নয়। একইসঙ্গে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিন্সও রয়েছে। ভারতের মতো এই দেশগুলিও কিন্তু চিনা সেনার অবিরাম হুমকির শিকার। ফলে, চিনকে শায়েস্তা করতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিন্সকেও সুরক্ষা দেবে আমেরিকা।
চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মির (PLA) মোকাবিলায় কতসংখ্যক মার্কিন সেনা এশিয়ায় মোতায়েন করা হবে, সে হিসেব কষতে বসেছে আমেরিকা। বছরের পর বছর ধরে রাশিয়ার আগ্রাসন সামল দিতে ইউরোপের একাধিক দেশে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে আমেরিকা। এখন রাশিয়া নয়, চিন ও চিনের কমিউনিস্ট পার্টিকেই বিশ্বের জন্য হুমকি স্বরূপ মনে হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর। তাই জার্মানিতে মার্কিন ফোর্স ৫২ হাজার থেকে কমিয়ে ২৫ হাজারে নামিয়ে আনবে আমেরিকা। বাকি ২৭ হাজার মার্কিন সেনা আসছে এশিয়ায়। জার্মানির সঙ্গে এ নিয়ে আমেরিকার কথাও হয়েছে।

বর্তমানে দক্ষিণ চিন সাগর এবং পূর্ব চিন সাগর উভয় ক্ষেত্রেই আঞ্চলিক বিরোধে জড়িয়ে রয়েছে চিন। সীমান্ত নিয়েও ভারতের মতো একাধিক দেশের সঙ্গে চিনের সংঘাত রয়েছে। একাধিক দেশের সঙ্গে চিনের সংঘাত রয়েছে। অনেক কটটি দ্বীপপুঞ্জ বেআইনি ভাবে চিনের নিয়ন্ত্রণাধীন।

গলওয়ানে চিনাসেনা ভারতের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক সামরিক সংঘাতে জড়ানোর পরেই আমেরিকার কিন্তু, ধৈর্যের বাধ ভেঙেছে। ১৫ জুন রাতে ওই সংঘর্ষে বিহার রেজিমেন্টের এক অফিসার-সহ ২০ ভারতীয় সেনা শহিদ হন। দক্ষিণ চিন সাগরে ক্রমাগত চিনাসেনার আগ্রাসনও চটিয়েছে আমেরিকাকে। তাই শুধু সেনা নয়, তিন তিনটি মার্কিন রণতরিও চলে এল বলে।

প্রশ্ন উঠছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো এমন একটা পরিস্থিতি এল কেন? কেন, গোটা বিশ্ব এক হয়ে চিনের সম্প্রসারণবাদী নীতি এবং সামরিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করছে না? যদি সত্যিই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যায়, তার প্রভাব কিন্তু ভারত-চিন গণ্ডি বা শুধু এশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। চিনকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখাই যে আমেরিকার কৌশল, মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও সে ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেন। পম্পেওর আভাস থেকেই পরিষ্কার, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকেই চিন আসল অবরোধ মুখে পড়তে চলেছে। ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপিন্সের মতো দেশগুলি দক্ষিণ চিন সাগরে বারবার চিনের সামরিক আগ্রাসনের মুখোমুখি হচ্ছে।

আমেরিকা যে তা মানবে না, স্পষ্ট করে দেন পম্পেও। ১৯৮৮ সাল থেকেই ফিলিপিন্সের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তি রয়েছে। চিনের ক্রমাগত হুমকির প্রেক্ষিতে ভিয়েতনামও আমেরিকার ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উপকূলরেখার সুরক্ষায় মার্কিন নৌসেনা ভিয়েতনামকে সাহায্য পাচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়িয়েছে আমেরিকা। সিঙ্গাপুরের বিমান ও নৌঘাঁটি ব্যবহারেও আমেরিকা চুক্তি করে রেখেছে। এই দেশগুলিতে মার্কিন সেনা সমারোহ বাড়লে চিন কিন্তু চারদিক থেকে ঘেরাটোপের মধ্যে পড়বে।

এ ছাড়া সরাসরি যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে, তাইওয়ানকেও হুমকি দিয়েছে চিন। তাইওয়ানে মার্কিন সেনার পাকাপাকি কোনও ঘাঁটি না-থাকলেও প্রশিক্ষণ ও নজরদারি চালাতে প্রায়শই যাতায়াত রয়েছে। তিন মার্কিন বিমানবাহী ক্যারিয়ার তাইওয়ানের কাছেই অপেক্ষায় রয়েছ।

চিন এবং তার দোসর উত্তর কোরিয়ার মোকাবিলায় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলি রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে। শুধু দক্ষিণ কোরিয়ায় তিন বাহিনী মিলিয়ে ২৮ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। জাপানে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৩ ঘাঁটি রয়েছে আমেরিকার। রয়েছে ৫৪ হাজার সৈন্য। সেখানে ৫০টি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং ২০ হাজার মার্কিন নৌসেনা সবসময় তৈরি রয়েছে। এ ছাড়া গুয়াম নামে ছোট্ট একটা দ্বীপে আরও ৫০০০ সৈন্য রয়েছে আমেরিকার।  সূত্রঃ বিপ্লব রায়, এই সময়

advertisement

Posted ৬:৪৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৭ জুন ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1401 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.