শনিবার, ১১ মে ২০২৪ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় হারাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী!

বাংলাদেশ ডেস্ক :   |   রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় হারাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরী!

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ‘ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু’ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে দেশটিতে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এ জন্য দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার গত ১৭ জুন দেশটির ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ডের কাছে রাশেদ চৌধুরীর রাজনৈতিক আশ্রয় মামলার নথি পর্যালোচনার জন্য তলব করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী পলিটিকো গত শুক্রবার ‘হি থট হি হ্যাড অ্যাসাইলাম। নাউ, হি কুড ফেস এ ডেথ সেনটেন্স’ শিরোনামের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বারের এই পদক্ষেপের চূড়ান্ত ফলাফল হিসেবে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে তার রাজনৈতিক আশ্রয় হারাতে পারেন এবং তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোও হতে পারে।


প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে খুনি রাশেদ চৌধুরীর নথি তলব করেছে দেশটির আদালত। মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এই আবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাদের প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ১৫ বছর আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

এ বিষয়ে ওই প্রতিবেদনটির প্রতিবেদক বেটসি উডরাফ সোয়ান এক টুইটে জানিয়েছেন, বিচার বিভাগ ১৩ বছর আগে রাশেদ চৌধুরীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ সরকারের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পরে উইলিয়াম বার হয়তো রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে নেবেন।
অন্যদিকে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেলের এই পর্যালোচনা প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাশেদ চৌধুরীর আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডার হাউট। তিনি পলিটিকোকে বলেন, ২০০৫ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন মঞ্জুরের সময় বার তার অসন্তুষ্টির কথা না জানিয়ে এখন আবার এই মামলা পুনরায় শুরু করতে চাইছেন। এর কোনো কারণ থাকতে পারে না।
২০১৯ সালের মে মাসে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলসের সঙ্গে এক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, বাংলাদেশে রাশেদ চৌধুরীর বিচারের নথিপত্র চেয়েছে ওয়াশিংটন। পরে চলতি বছর এপ্রিলেও ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের।


বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রাতে কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খানসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে রেডিও স্টেশন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন সেনা কর্মকর্তা রাশেদ চৌধুরী। পরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্য সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিদেশে চলে যান তিনি। এরপর জিয়াউর রহমানের আমলে তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খুলল রাশেদ চৌধুরী তখন ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত।

পলিটিকো লিখেছে, ওই সময় রাশেদ বিপদ বুঝে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান। ভিজিটর ভিসায় সেখানে গিয়ে দুই মাসের মধ্যে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন। প্রায় দশ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আদালত রাশেদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। ডিএইচএসের পক্ষ থেকে বলা হয়, আশ্রয় আবেদনকারী নিজ দেশে সেনা অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত, তাই সে আশ্রয় পাওয়ার অযোগ্য। কিন্তু মার্কিন বিচার বিভাগের ইমিগ্রেশন আপিল বোর্ড ২০০৬ সালে রাশেদ চৌধুরীর পক্ষেই রায় দেয়।


তবে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী আইন ভঙ্গ করেছিলেন কিনা, সেই প্রশ্ন ওঠায় মামলাটি ইমিগ্রেশন আদালতে পুনঃপরীক্ষার জন্য ফেরত পাঠানো হয়। নতুন করে শুনানির পর ইমিগ্রেশন আদালত রাশেদকে রাজনৈতিক আশ্রয় মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। বাংলাদেশ সরকার দণ্ডিত ওই খুনিকে ফেরত পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল গত মাসে মামলার নথি তলব করেন পর্যালোচনার জন্য।
জানা গেছে, রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সেক্রামেন্টো থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরের শহর কনকর্ডের হ্যাকলবেরি ড্রাইভে বসবাস করছেন। তবে দীর্ঘদিন তাকে জনসম্মুখে দেখা যাচ্ছে না। এর আগে ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, ইলিনয় এবং মিসৌরিসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় বসবাস করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর ১২ নভেম্বর ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করার পথ সুগম করে। তারপর বিচারের আয়োজন করা হয়। ২০০৯ সালে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দণ্ডিত আসামিদের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে বাংলাদেশের পুলিশ। নানান আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারুক রহমান, মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি), শাহরিয়ার রশিদ খান এবং এ কে এম মহিউদ্দিন আহম্মেদ (ল্যান্সার) ও সাবেক মেজর বজলুল হুদার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

এর মধ্যে ঢাকা ও ব্যাংককের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরের পর বজলুল হুদাকে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও সেনা সমর্থিত অন্তর্র্বতী সরকারের সময় বরখাস্তকৃত লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র ফিরিয়ে দেয়। দণ্ডিত আরেক খুনি আবদুল আজিজ পাশা পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে ২০০১ সালের ২ জুন মারা যান। সবশেষ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে গত ৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৩টায় রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থেকে গ্রেপ্তার করে ১২ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর করে সরকার। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে ছিলেন।
পলাতক অন্য পাঁচ খুনি হলেন খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, এম রাশেদ চৌধুরী, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ও রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন। এদের মধ্যে কানাডায় নূর চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রাশেদ চৌধুরী। মোসলেহ উদ্দিন জার্মানিতে ও শরিফুল হক ডালিম স্পেনে আছে। তবে খন্দকার আবদুর রশিদ কোন দেশে অবস্থান করছেন তার সঠিক তথ্য কারও জানা নেই।

Posted ৮:৩০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ জুলাই ২০২০

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1414 বার পঠিত)

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.