বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক মৃত্যুহার দুই হাজারের বেশি বলে নিউইয়র্ক টাইমস এর ডাটাবেজ থেকে জানা গেছে। গত রোববার সমাপ্ত এক সপ্তাহের এই গড় সংখ্যা গত মার্চ মাসে দৈনিক মৃত্যুহারের চেয়ে অনেক বেশি। ডেল্টা ভেরিয়ে টেক্সাস ও ফ্লোরিডায় অধিক সংক্রমিত হয়েছে এবং এখন যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, তাদের ৩০ শতাংশের বেশি টেক্সাস ও ফ্লোরিডার। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত হিসাব অনুযাযী ফ্লোরিডার মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫৬ শতাংশ করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছে, যেখানে দৈনিক গড় মৃত্যু প্রায় ৩৫৩ জন। টেক্সাসে ভ্যাকসিন নিয়েছে সেখানকার জনসংখ্যার মাত্র ৫০ শতাংশ, এবং সেখানে দৈনিক মৃত্যুহার ২৮৬ জন। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন-সিডিসি যদিও সমগ্র দেশে এক ডোজ ভ্যাকসিন নেয়া জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ ভ্যাকসিন নিয়েছে বলে দাবী করছে, সেক্ষেত্রে নিউইয়ক টাইমসের ডাটাবেজ মাত্র ৫৪ শতাংশ আমেরিকানের ভ্যাকসিন নেয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। মিসিসিপির গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে সেখানে মৃতের সংখ্যা প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে কম দেখানো হয়েছে।
এদিকে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ অ্যালার্জি এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস এর ডাইরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিফ মেডিকেল এডভাইজার এন্থনি স্টিফেন ফাউচি আমেরিকানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যে কেউ যাদ তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার যোগ্যতার মধ্যে না পড়েন তাহলে তাদের বুষ্টার ডোজ নেয়ার আপাতত কোনো প্রয়োজন নেই। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব স্থানে করোনার বিস্তার এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি, সেসব স্টেটে ভ্যাকসিনেশন হার কম। তবে এমন কিছু স্টেট রয়েছে, যেখানে ভ্যাকসিনেশন হার অধিক হওয়া সত্বেও সংক্রমণ হার এখনো বেশি। তেমন একটি স্টেট হচ্ছে ভারমন্ট। গুয়ামে ৬৪% ও আইডাহোতে ৪১% ভ্যাকসিনেশন হলেও গত সপ্তাহে মৃত্যু হার বেশি ছিল।
গত জুলাই মাসে সিডিসির পক্ষ থেকে বলা হয় যে, “যুদ্ধের গতি পাল্টে গেছে,” ডেল্টা ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ জলবসন্তের সংক্রমণের মত দ্রুত সংক্রমণশীল ভাইরাস। এই ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে বলে দাবী করা হলেও ভ্যাকসিন গ্রহণকারীরাও যে হারে সংক্রমিত হচ্ছে তাতে ভ্যাকসিন বিজ্ঞানি ও মহামারী নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বিশেষজ্ঞরা বিচলিত হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিষ্ট্রেশনের মূখ্য উপদেষ্টা প্যানেল গত শুক্রবার সুপারিশ করেছে যে, যাদের বয়স ৬৫ বছরের উর্ধে তারা এখনো ‘হাই রিস্ক’ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন তাদের বুষ্টার ডোজ নেয়া প্রয়োজন। ফাউচি অতিরিক্ত ডোজ নেয়ার উপযুক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমেরিকানদের ধৈর্য ধরার আহবান জানান। যারা ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে উপযুক্ততার বিচারে তৃতীয় ডোজ সুপারিশ করা হলেও তিনি মডার্না এবং জনসন এন্ড জনসনের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে তৃতীয় ডোজ প্রয়োজন পড়বে কিনা তা জানতে কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলেন।
ফাউচি নিশ্চিত করেছেন যে ১২ বছরের নিচের বয়সীদের করোনার ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ অব্যাহত থাকবে। দেশের প্রায় চার কোটি আশি লাখ শিশু, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে, তারা এখনো ভ্যাকসিনের আওতায় আসেনি। ফাইজার বলেছে যে, শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলাফল সম্পর্কে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এবং মডার্নার ফলাফল কয়েক সপ্তাহ পর পাওয়া যাবে।
এদিকে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের বিস্তার রোধ না হওয়ার কারণে আমেরিকান কোম্পানিগুলো তাদের সকল কর্মচারিকে বিশেষ করে নিউইয়র্ক সিটির অফিসগুলোতে যোগ দিতে বলছে না। যেসব অফিস চালু করা হয়েছে, সেগুলোতে সীমিত সংখ্যক কর্মচারি কাজ করছেন, বাকিরা বাড়ি থেকে অনলাইনে কাজ করছেন। তবে ম্যানহাটানের আকাশছোঁয়া ভবনগুলোসহ অধিকাংশ ভবনের নিচতলায় সাধারণত রেস্টুরেন্ট বা কাপড়ের দোকান রয়েছে, সেগুলোতে এখন উপচে পড়া ভিড়। কারণ নিচতলার এক চতুর্থাংশ দোকানপাট এখনও বন্ধ এবং ভাড়া দেয়া হবে এমন বোর্ড ঝুলছে। জনপ্রিয় কফি চেইন শপ ষ্টারবাকস গত বছরের মার্চ মাসে ম্যানহাটানে তাদের আউটলেটগুলোর মধ্যে ৪৪টি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। প্রেট এন্ড ম্যাঙ্গার সিটিরতে তাদের ৬০ টি শপের মধ্যে মাত্র অর্ধেক চালু করেছে।
Posted ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh