সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

রোজাদারদের জন্য সুখবর নেই : নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

বাংলাদেশ ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

রোজাদারদের জন্য সুখবর নেই : নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

ছবি: সংগৃহীত

রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় রাখতে সরকার নানাভাবে চেষ্টা করলেও কোনো তৎপরতাই যেন কাজে আসছে না। ধারণা করা হচ্ছিল এবার রমজানে অন্তত রোজাদারদের জন্য হলেও বাজার পরিস্থিতি সহনীয় রাখা হবে। সে লক্ষ্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজারে একাধিক সংস্থার তৎপরতাও শুরু হয়। তার সঙ্গে রমজাননির্ভর পণ্যসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপরও অন্য বছরের মতোই রমজানকে ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ী চক্রটি অতি মুনাফার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বাজার কারসাজি করে ডিসেম্বর থেকেই ডাল, ছোলা, চিনি, খেজুর ও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। সব ধরনের মাংস, মরিচ ও আদা-রসুনসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। ফলমূল ও খেজুরেরও আকাশচুম্বী দাম নিচ্ছে তারা। এতে রোজা ঘিরে বাজারে এসে পণ্য কিনতে ক্রেতাসাধারণের নাভিশ্বাস অবস্থা। তারা বলছেন-প্রতিবছরের মতো এবারও পণ্যের বাড়তি দরেই রোজা শুরু করতে হচ্ছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হুঙ্কার থাকলেও নির্বিকার তদারকি সংস্থা।

সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল, শিল্প মন্ত্রণালয়, র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বিএসটিআই, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনিটরিং টিম বাজার তদারকিতে রয়েছে। এই কার্যক্রমে জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, মৎস্য কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, শিল্প ও বণিক সমিতির প্রতিনিধি এবং ক্যাবের সদস্যরা সহায়তা প্রদান করবে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে।


এত হাঁকডাকের পরও রোজার পণ্যের বাজার বেসামাল। সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে তার প্রমাণও মিলেছে। ৩০০ টাকা কেজি দরের তিউনিশিয়ার খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। ৮৫ টাকা কেজি দরের ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। ১৩৫ টাকার চিনি ১৬০ টাকা কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। ভালো মানের মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ৮০ টাকা কেজি দরের শসা একদিনের ব্যবধানে ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকা হালির লেবু ৮০ টাকায় ঠেকেছে। বেগুনের দামও কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাড়ানো হয়েছে ইফতার পণ্যের দামও। মুড়ি, খেজুর, বেসন, সরিষার তেল, বুটের ডালের দাম ১০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর শরবত তৈরির উপকরণ ইসবগুলের ভুসির দাম কেজিতে ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি কিনতে হচ্ছে ২২০ টাকা দরে।


কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা শুধু মুখে বললে হবে না। এর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আগে সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের হাতে নিত্যপণ্য দিতে হবে। পণ্যের দামে লাগাম টানতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলো ঠিকমতো নেওয়া হচ্ছে না।

গোলাম রহমান আরও বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বছরের পর বছর ভোক্তারা ঠকছেন। সংস্থাগুলো জানে কে বা কারা পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজি করছে। একাধিকবার তারা সেটা চিহ্নিত করেছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না।


খুচরা বাজারের পণ্যমূল্যের মধ্যে নভেম্বরে প্রতি কেজি চিনি ১৩৫ টাকা বিক্রি হলেও ডিসেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। সোমবার (১১ মার্চ) চিনির কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। ডিসেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকা, আর বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা। ডিসেম্বরে দাম বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৯০-৯৫ টাকা। সোমবার সেই ছোলা বিক্রি হয় ১১০ টাকা কেজিতে। ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। ডিসেম্বরে ১৫৫ টাকা, আর সোমবার ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের মধ্যে নভেম্বরে প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৬৮ টাকা, ডিসেম্বরে দাম বেড়ে ১৭০ টাকা ও সোমবার বিক্রি হয় ১৭০ টাকায়।

প্রতি কেজি তিউনিশিয়ান খেজুর নভেম্বরে ৩০০ টাকা বিক্রি হলেও ডিসেম্বরে বিক্রি হয় ৪০০ টাকা। আর সেই একই খেজুর বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা কেজি। নভেম্বরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা বিক্রি হলেও ডিসেম্বরে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে দেশি জাত বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমে ফেব্র“য়ারির শুরুতে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। সোমবার তা ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হয়।

এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২২০ টাকা। যা ডিসেম্বরে ছিল ১৭০ টাকা আর নভেম্বরে দাম ছিল ১৮৫ টাকা। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৭৮০ টাকায়।
খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে মান ও দামভেদে সাদা মুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা। যা আগে ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হতো। বুটের ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। যা আগে ৯০ টাকা বিক্রি হয়। এছাড়া ইফতারে শরবত তৈরিতে ব্যবহৃত ইসবগুলের ভুসি, ট্যাং, রুহ-আফজার দামও বাড়ানো হয়েছে। প্রতি কেজি ইসবগুলের ভুসি তিন মাস আগে ১৬০০ টাকা বিক্রি হলেও এখন ২১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত ট্যাং বিক্রি হয়েছে ৮৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৮০০ টাকা। বড় সাইজের রুহ আফজা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়। যা আগে ৩৫০ টাকা ছিল। ছোট সাইজের রুহ-আফজা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা। যা আগে ২০০ টাকা ছিল। সোমবার প্রতি লিটার খোলা সরিষার তেল বিক্রি হয়েছে ২৬০-২৭০ টাকা। যা আগে ২৫০-২৬০ টাকা।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি লাল আপেল ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা আগে ২৬০-২৭০ টাকা ছিল। কমলা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি। যা আগে ২৮০-৩০০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি আনার বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা। যা আগে ৩১০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি বরই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা যা আগে ৭০-৮০ টাকা ছিল। পেয়ারার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। যা আগে ৬০-৭০ টাকা ছিল।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, পণ্যের দাম ক্রেতার সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, অবৈধ মজুত গড়ে পণ্য সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

advertisement

Posted ৭:১৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1403 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.