সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের ওপর সমান কর চায় আইএমএফ

ঢাকা   |   শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের ওপর সমান কর চায় আইএমএফ

ছবি: সংগৃহীত

বেসরকারি চাকরিজীবীদের মতো সরকারি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে সমান হারে কর আদায় করতে বলেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। পাশাপাশি কোনো করছাড় না দিয়ে করদাতা যেটুকু আয় করবেন, তার পুরোটার ওপর কর আরোপ করতে বলেছে তারা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের শিখন-পড়নের পর আইএমএফের পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি বিশদ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। যেখানে রাজস্ব খাতে এমন বড় ধরনের সংস্কার আনার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব সংস্কারের কোনটা কোন সময়ের মধ্যে করতে হবে, তা-ও উল্লেখ করে দিয়েছে।
কর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার ওপর সমান কর আরোপসহ আইএমএফের বেশ কিছু বিষয় পরামর্শ ভালো। তবে পর্যালোচনা করে তাদের পরামর্শের কিছু অংশ যদি দেশ, জনগণ ও শিল্পস্বার্থবিরোধী হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার নিজের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।


আইএমএফ বাংলাদেশকে দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত হিসেবে বিভিন্ন খাতে নজরদারি ও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির যুক্তিতে নানান শর্ত ও পরামর্শ দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা ১০ দিন ধরে এনবিআরের ২০ কর্মকর্তাকে শিখন-পড়ন কার্যক্রমে অংশ নেয়। এর সমাপনী হয়েছে গতকাল। ওই সমাপনীতে তারা একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে সরকারি-বেসরকারি সবার ওপর সমান করের কথা বলা হয়েছে।

বর্তমানে বেসরকারি চাকরিজীবীরা বছরের মোট বেতন (বাড়িভাড়া, যাতায়াতসহ অন্যান্য) ও বোনাসের ওপর কর দেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য মোট হিসাবের ওপর ৩ ভাগের ১ ভাগ বা সাড়ে ৪ লাখ টাকার যেটা কম হয়, সেই অংশটা ছাড় পান। আর পুরুষ চাকরিজীবীর করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ এবং নারীর সাড়ে ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ কারও বেতন-ভাতা বছরে ১৫ লাখ টাকা হলে সাড়ে ৪ লাখ ও সাড়ে ৩ লাখ টাকা বাদ দিয়ে ৭ লাখ টাকার ওপর তাঁকে কর দিতে হয়। অন্যদিকে সরকারি চাকরিজীবীরা শুধু তাঁদের বেতনের মূল অংশ (বেসিক) ও দুই উৎসবের দুই বোনাসের ওপর কর দেন।


কিন্তু আইএমএফ বলছে, সরকারি-বেসরকারি সবার ওপর সমান কর দিতে হবে। আগামী অর্থবছর থেকেই এটা করতে হবে। তা ছাড়া বেতনভোগীদের কোনো করছাড় বা রেয়াত দেওয়া যাবে না। আর ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমার পর প্রথম ১ লাখের ৫ শতাংশের স্ল্যাব বাতিল করে সরাসরি ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে কর আদায় করতে হবে।

এ ব্যাপারে এনবিআরের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা মুখ খুলতে নারাজ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঋণের শর্তের কারণে সংস্থাটি এসব পরামর্শ দিয়েছে। এর সবই খারাপ নয়; আবার সব ভালোও নয়। সবার ওপর সমান কর আরোপ, আইসিটি খাতের করমুক্তি সুবিধা বাতিল করা বা আসছে বাজেট থেকেই কর অবকাশ সুবিধা বাতিলের মতো অনেক স্পর্শকাতর বিষয় রয়েছে, যেগুলো রাতারাতি হয়তো সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তবে বেশ কিছু পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের জন্য খারাপ হবে না।’


আয়কর বিভাগের সাবেক সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেউ বেশি কর দেবে, কেউ কম কর দেবে, এটা হওয়া উচিত নয়। আর কর অবকাশ দেওয়া না দেওয়ার ক্ষমতা কর বিভাগের কাছে থাকা উচিত নয়। এটা সংসদ ঠিক করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিছু কিছু সংস্কার দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আইএমএফ চাইলেই করতে হবে, এমন নয়।’

দেশের আইসিটি খাতের কর অবকাশ সুবিধা ২০২৪ সাল পর্যন্ত রয়েছে। এখন আইএমএফ বলছে, এটা যেন কোনোভাবেই আর বাড়ানো না হয়। এটাও আসছে বাজেটে ঘোষণা দিতে হবে। একই সঙ্গে উৎপাদনমুখী শিল্প খাতের কর অবকাশ সুবিধাও ২০২৫ সালের পর আর না বাড়াতে বলেছে আইএমএফ।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বর্তমানে আইসিটি খাত কর সুবিধার কারণে বিকশিত হচ্ছে। আইএমএফের এ পরামর্শ মানা হলে এ ক্ষেত্রে কিছুটা ছন্দপতন হতে পারে। শিল্পের ক্ষেত্রেও ঢালাওভাবে কর অবকাশ সুবিধা তুলে দিলে জিনিসপত্রের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, ভোক্তার খরচ বাড়বে।

গ্যাস উত্তোলন খাতে কোম্পানিগুলো ‘ডিপ্লেশন অ্যালাউন্স’ নামে একটি বিশেষ করছাড় সুবিধা পায়। বাস্তবে এ খাতে কোম্পানির কোনো খরচ না হলেও তারা এ খাতে কর সুবিধা নিয়ে থাকে। আইএমএফ বলছে, এ সুবিধা রাখার প্রয়োজন নেই।

আসছে বাজেট থেকেই দেশের বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও শীর্ষ কোম্পানিকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করার কথা বলেছে আইএমএফ। অন্যথায় তাদের দেওয়া সব ধরনের কর রেয়াত বাতিলের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

একই সঙ্গে ২০২৬ ও ২০২৭ সাল থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। অন্যথায় তাদেরও সব কর রেয়াত বাতিল করতে বলেছে। আইএমএফ মনে করে, সব করদাতার কাগজে দেওয়া রিটার্ন কম্পিউটার ডেটাবেইসে ঢোকাতে হবে। এতে করে কর কর্মকর্তারা যেকোনো সময় যেকোনো করদাতার ফাইলে ঢুকে তা যাচাই-বাছাই করতে পারবেন।

আরও একটি বড় ধরনের সংস্কারের কথা বলেছে আইএমএফ। সংস্থাটি কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ায় এনবিআরের স্বেচ্ছা ক্ষমতা বাতিল করতে বলেছে। এ ক্ষমতার আওতায় এনবিআরের কর কর্মকর্তারা চাইলে যেকোনো করদাতা ব্যক্তি বা কোম্পানিকে কর অবকাশ সুবিধা দিতে পারে। আইএমএফ মনে করে, এ ধরনের ক্ষমতা শুধু সংসদের থাকতে পারে।

তা ছাড়া চলতি বাজেটে কোন কোন খাত কর অবকাশ সুবিধা পাবে, তার একটি তালিকা ঘোষণা করা আছে। কিন্তু এ তালিকার বাইরেও এনবিআর চাইলে যেকোনো খাতকে কর অবকাশ সুবিধা দিতে পারবে—এমন ক্ষমতার কথা বাজেটে বলা আছে। আইএমএফ বলছে, এই ক্ষমতাও এনবিআরের হাতে থাকার দরকার নেই।

সংস্থাটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির গেইন ট্যাক্স, বন্ড ও জিরো কুপন বন্ডসহ আরও বিভিন্ন মুনাফার ওপর সুদকে করমুক্ত রাখার বিপক্ষে। সংস্থাটি চায়, এসব সুদ বা মুনাফার ওপর করমুক্ত সুবিধা আসছে বাজেট থেকেই বাতিল করতে হবে।

advertisement

Posted ৬:০১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1403 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.