মোহাম্মদ আজাদ : | বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাজিও ঘোষণা করেছেন যে সিটির পাবলিক স্কুলগুলো খুলে দেয়ার কারণে জনমনে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার স্বস্থির পাশাপাশি অভিভাবক ও সিটি কর্তৃপক্ষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেজন্য যেসব শিক্ষার্থী ভ্যাকসিন নেয়নি তাদের প্রতি সপ্তাহে করোনা ভ্যাকসিন সনাক্তকরণ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে কোয়ারেন্টাইনের বিধি শিথিল করা হয়েছে এবং ৫ থেকে ১১ বছর বয়স্ক শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন নেয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি জানান হয়েছে। এমনকি ফাইজার-বায়োএনটেক শিশূদের ভ্যাকসিন দেয়ার পক্ষে বলার পরও সিটির আপত্তি অব্যাহত থাকবে বলে মেয়র জানান। ডেল্টা ভেরিয়েন্টে বিস্তার সত্বেও গত বছরজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যার দিক থেকে অন্যতম প্রধান বৈশ্বিক কেন্দ্রে হিসেবে ছিল নিউইয়র্ক সিটি, তা সত্ত্বেও নিউইয়র্কের পাবলিক স্কুল খুলে দেয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সিটি আলোচনার শীর্ষে এসেছে।
সিটি মেয়র বলেছেন যে স্কুলগুলো নিরাপদ এবং কোন শিক্ষার্থী বা ষ্টাফ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদেরকে অন্যান্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, ১২ বছর বয়সের নিচের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হলে অবিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে না পাঠিয়ে বাড়িতেই রাখতে চাইবেন, সে কারণে সিটি কর্তৃপক্ষ ১১ বছরের নিচে কারও ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক করার বিরোধী। মেয়র অনলাইনে শিক্ষার ব্যবস্থা সম্প্রসারণ বা অব্যাহত রাখতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি জানান যে সিটির পাবলিক স্কুলগুলোর ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগের বেশি অন্তত এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছে। সিডিসির গাইডলাইন অনুসারে কোন শিক্ষার্থীর করোনা টেস্ট ফলাফল যদি পজিটিভ আসে, সেক্ষেত্রে র্যাা ভ্যাকসিন নেয়নি তারা যদি মাস্ক পরিধান করে ও তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখে তাহলে তাদেরকে আর কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না। কারণ এভাবে কোয়ারেন্টাইন করা হলে প্রায় ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় গুরুতর বিঘ্নের সৃষ্টি হবে। টিচার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মাইকেল মালগ্রু ভাইরাস সনাক্তকরণের জন্য টেস্ট করার সুবিধা বৃদ্ধির প্রশংসা করলেও কোয়ারেন্টাইনের বিধি শিথিল করার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা সবসময় যথাযথভাবে মাস্ক পরিধান করবে অথবা ঠিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখবে তা অবাস্তব ও বিশ্বাস করা কঠিন। তিনি বলেন, “মেয়রের দুনিয়ায় হয়তো সকল শিশু তাদের দূরত্ব বজায়রাখে, ঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করে ও সারাদিন একইভাবে রাখে, কিন্তু আমাদের স্কুলগুলোর বাস্তব দুনিয়া সেভাবে চলে না, বিশেষ করে অনেক স্কুলে যেখানে ঠিকভাবে স্থান সংকুলান হয় না।”
তিনি গত রোববার মেয়র বিল ডি ব্লাজিওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাপ্তাহিক করোনা ভাইরাস টেস্ট করার বিষয়টিকে প্রতি দুই সপ্তাহে একবার টেস্ট করার সুপারিশ করেন। এদিকে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষক ও স্টাফদের বাধ্যতামূলক ভ্যাকসিন দেয়ার নিয়ম কার্যকর করা হবে। কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মেয়রের পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন যে স্কুলের শিক্ষক ও স্টাফদের ঢালাও ভ্যাকসিনেশন এর ব্যবস্থা না করে স্কুল চালু করা ঝুঁকিপুর্ণ হয়েছে এবং তারা দ্রুত তাদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনার আহবান জানান। সিটির কোন কোন স্কুলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় করোনা ভাইরাস সনাক্ত হওয়ার পর ইস্ট হারলেম এর পিএস ৭৯ গত সোমবার থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্কুলটির শিক্ষার্থীরা দশদিন পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস করবে।
Posted ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh