বাংলাদেশ ডেস্ক : | শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার আর ১০০ দিন (রোববার থেকে) বাকি রয়েছে। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বিভাজন ও উত্তেজনায় ভরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভক্তি দূর করার চেষ্টা করছে আমেরিকা। ১৯৬০-এর দশকের পর থেকে গভীর খাদের কিনারে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
করোনাভাইরাস দেশটিতে ভয়ংকর কামড় বসিয়েছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যু এক লাখ ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে বর্ণবাদ ও পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে অগ্নিগর্ভ বিক্ষোভ, বাম নেতৃত্বাধীন দাঙ্গা। মাথাচাড়া দিয়েছে ডানপন্থী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এসবের পাশাপাশি এখনও পিছু ছাড়েনি রুশ হস্তক্ষেপের ভূত। খবর এএফপি।
আবাসন ব্যবসা ম্যাগনেট থেকে ২০১৬ সালে আকস্মিকভাবে নির্বাচিত হওয়া ট্রাম্প দম্ভের সঙ্গে বলেন, তিনি বিজয়ী হতে কখনও ক্লান্ত হন না।
কিন্তু আগামী ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প অবমাননার মুখে পড়তে পারেন। তার ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন জরিপে তার থেকে এগিয়ে রয়েছেন, যাকে ট্রাম্প ‘দুর্বল’ ও ‘ঘুমন্ত’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
যদিও ২০২০ সালে উত্থিত বর্ণবাদ ও যৌনতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে কোনো পদক্ষেপ নেননি ৭৪ বছর বয়সী ট্রাম্প ও ৭৭ বছরের বাইডেন। তারা দু’জনই শ্বেতাঙ্গ।
একজন বিলিয়নিয়ার, অর্থকড়ির মধ্যে বড় হয়েছেন, কিন্তু রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সীমিত। অন্যজন তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সিনেট সদস্য। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দুই মেয়াদের ভাইস প্রেসিডেন্ট। রয়েছে রাজনীতিতে অগাধ অভিজ্ঞতা।
তবে তিক্ততা ও বিভ্রান্তি হজম করতে হবে মার্কিন ভোটারদের। ট্রাম্পের দাবি, বাইডেন ক্ষমতায় এলে আমেরিকানদের উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দেবেন।
কিন্তু বাইডেন বলছেন, তিনি লড়াই করছেন ‘আমেরিকার আত্মা’র জন্য। জনমত জরিপ বাইডেনকে একটু সুবিধাজনক অবস্থানে রেখেছে। সুইং স্টেটগুলোয় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন তিনি।
এমনকি টেক্সাসের মতো রিপাবলিকান ঘাঁটিতেও শক্তপোক্ত ভিত গড়েছেন বাইডেন। মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিুকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ নিয়ন্ত্রণে রাখা ডেমোক্রেটিক দলের চোখ উচ্চকক্ষ সিনেটের দখল নেয়া।
করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে ট্রাম্পের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হতে যাচ্ছে। অদৃশ্য এ ভাইরাস দেশে বেকারত্বের হার বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র। করোনা নিয়ে নিয়মিত প্রেস বিফ্রিংয়ে স্বাস্থ্যবিজ্ঞান-বহির্ভূত কথাবার্তায় ভাবমূর্তিও হারিয়েছেন ট্রাম্প। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ নাগরিক করোনা মোকাবেলায় ট্রাম্পের নেতৃত্বে আস্থা রাখেন না। মার্কিন ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে ৪০ শতাংশ জনসমর্থন রয়েছে ট্রাম্পের।
এরপরও আশাবাদী ট্রাম্প। ২০১৬ সালের নির্বাচনে সব রিপাবলিকান মনোনয়নপ্রত্যাশীদের হারিয়েছিলেন। অবশেষে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকেও হটিয়ে ক্ষমতার চেয়ারে বসেন ট্রাম্প। তিনি বিশ্বাস করেন, এখনও তার কাছে তুরুপের টেক্কা রয়েছে।
গত সপ্তাহে ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি হারছি না। কারণ, ওইসব জনমত জরিপ ভুয়া। ২০১৬ সালেও তারা ভুয়া ছিল এবং এবার তারা আরও ভুয়া।’ কোভিড-১৯-কে ‘অদৃশ্য শত্রু’ বলেছেন ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে তার আরেকটি ‘অদৃশ্য শত্রু’ দেখা দিয়েছে।
কোনো নির্বাচনী র্যালি ছাড়াই কিছু গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার ও কিছু প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে ডেলোয়ার থেকে অভিনব প্রচারণা শুরু করেছে ডেমোক্র্যাট দল। সমালোচকরা একে ‘বাঙ্কার কৌশল’ বলে কটাক্ষ করছেন। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘হিডেনবাইডেন’ দিয়ে বিদ্রুপ করছেন।
অন্যদিকে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা ‘ডেথ স্টার’ (মৃত্যু তারকা) খেতাব পেয়েছে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে তিনি করোনার মধ্যেই কয়েকটি র্যালি করেছেন। এমনকি কোনো সমাবেশেই নিজেও মাস্ক পরেননি।
Posted ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৫ জুলাই ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh