বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২
নিউইয়ক সিটি সাবওয়ের নতুন প্রধান হতে যাচ্ছেন ম্যাসচ্যুসেটস ট্রান্সপোর্টেশনের সাবেক সেক্রেটারী রিচার্ড এ ড্যাভে। তিনি আগামী ২ মে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। করোনা ভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর সিটি ট্রানজিটের প্রথম স্থায়ী প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন্ন তিনি। মহামারীর কারণে গত আড়াই বছরে সাবওয়ে যখন লক্ষ লক্ষ যাত্রী হারিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে আসেনি এবং নজীরবিহীন ঘাটতির সম্মুখীন সিটির সাবওয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করে নিউইয়র্কের এই জনপ্রিয় গণপরিবহনকে সকল দিক থেকে চাঙ্গা করে তোলার দায়িত্ব গ্রহণ যে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং তা বোঝা সহজ। আটচল্লিশ বছর বয়স্ক রিচার্ড ড্যাভে ইতিপূর্বে বোস্টন ট্রানজিট সিস্টেমের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং বোস্টন কনসালটিং গ্রুপের অংশীদার হিসেবে বিশ্বের বহু সিটিতে ট্রানজিট ব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শদানকারী হিসেবে কাজ করেন।
সিটি সাবওয়ের প্রধান হিসেবে রিচার্ড ড্যাভের প্রধান কাজ হবে সাবওয়েতে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠা, সাবওয়ে ব্যবহারকারী যাত্রীদের পুনরায় সাবওয়ে ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা। স্টেট গভর্নর থেকে শুরু করে নিউইয়র্ক সিটি মেয়র, কর্পোরেট নেতৃবৃন্দ সকলেই একমত যে বিশ্বের অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ে শুধু নিউইয়র্কারদের যাতায়াত করার সুবিধাজনক পরিবহনই নয়, বরং সিটি সাবওয়ের সঙ্গে জড়িত সিটির বিশাল অর্থনীতি। ১১৭ বছরের পুরোনো এই সাবওয়েকে স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে না পারলে সিটির অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রিচার্ড ড্যাভে তাকে যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে তা স্বীকার করে বলেছেন যে সাবওয়ে ও বাস মিলে যে গণপরিবহন নিউইয়র্ক সিটিতে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেটিই তাকে এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক এমন এক সিটি যা বিপুলভাবে নির্ভর করে পরিবহন ব্যবস্থার ওপর এবং এই পরিবহন ব্যবস্থা যদি সুষ্ঠুভাবে কাজ না করে তাহলে ধরে নিতে হবে যে নিউইয়র্ক সিটি কাজ করছে না।”
তিনি তার প্রথম অগ্রাধিকার হিসেবে সাবওয়ের যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেবে যাত্রীদের সাবওয়ে ব্যবহারে আকৃষ্ট করার মাধ্যমে। কারণ যাত্রীদের ভাড়া ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভর্তুকি দিয়ে একটি সময়ের পর আর পরিচালনা করা সম্ভব নয় এবং এ ধরনের পরিস্থিতিতে পরিচালন ব্যয় হ্রাস করতে একের পর এক সার্ভিস বন্ধ করতে হয়, জনশক্তি হ্রাস করতে হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সিটি সাবওয়ে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মার্চ মাসের আগে সিটি সাবওয়ে প্রতি কর্মদিবসে গড়ে প্রায় ৫৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতায় সিটিতে শাটডাউন ঘোষণা করা হলে ছাত্র ও কর্মীরা যার যার বাড়ি চলে যায়, অন্যান্যরা কর্মহীন হয়ে পড়ে, পর্যটকদের আগমণ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে সাবওয়ের যাত্রীসংখ্যা ৯০ শতাংশ হ্রাস পায়। বাসে যাত্রীসংখ্যা হ্রাস পায় ৮০ শতাংশ। দুই বছরের বেশি সময় পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। গত সপ্তাহে সাবওয়ের যাত্রী সংখ্যা মহামারী পূর্ব অবস্থার যাত্রী সংখ্যার ৫৮ শতাংশ ফিরে এসেছে বলে রিপোর্ট করা হয়, বাসের ক্ষেত্রে তা ৬২ শতাংশ। এ চিত্র থেকে ধারণা করা হয়েছে যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যাত্রী সংখ্যা ৮৬ শতাংশের উর্ধে উঠবে এমন আশা করা যায় না।
যাত্রীসংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ায় সিটির গণপরিবহন চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। মহামারীর আগে এমটিএ যাত্রী ভাড়া থেকে মোট রাজস্বের ৩৮ শতাংশ আয় করতো, যা আমেরিকার প্রধান ট্রানজিট সিস্টেমগুলোর তুলনায় বেশ উচ্চ। ফেডারেল প্যানডেমিক সহায়তা সিটির ট্রান্সপোর্টেশন কর্তৃপক্ষকে ভাড়া বৃদ্ধি স্থগিত ও সার্ভিস বন্ধ রাখা স্থগিত করতে বাধ্য করেছে, কিন্তু সার্বিক অর্থনৈতিক মূল্যায়ন অনুযায়ী দেখা যায় যে ২০২৫ সালে সাবওয়ের ঘাটতি হবে ৫০০ মিলিয়ন ডলার এবং তা ২০২৬ এ ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
Posted ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh