বাংলাদেশ ডেস্ক | সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪
ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল পাল্টা হামলা পরিচালনা করলে তাতে যুক্তরাষ্ট্র অংশগ্রহণ করবে না। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রবিবার (১৪ এপ্রিল) হোয়াইট হাউজ এ কথা নিশ্চিত করেছে। খবর রয়টার্সের।
১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের সন্দেহভাজন হামলার প্রতিশোধ নিতে শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে কয়েকশ’ ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান।
এই হামলার পর এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুকে বলেছেন ইসরায়েল নিজেকে রক্ষার তাৎপর্যপূর্ণ সক্ষমতা দেখিয়েছে এবং নজিরবিহীন হামলাকে পরাজিত করেছে।
বিবৃতিতে তিনি ও নেতানিয়াহু সম্ভাব্য ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া বা যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন কিনা তা সম্পর্কে কিছু বলেননি বাইডেন।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি এক মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলকে রবিবার বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তবে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না ওয়াশিংটন।
ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে কিনা জানতে চাইলে কিরবি বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও দেশটিকে রক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার লৌহদৃঢ়। প্রেসিডেন্ট যেমন অনেকবার বলেছেন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধ চাই না। ইরানের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি এটুকুই বলবো।
কিরবি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার তীব্রতা বাড়ুক আমরা চাই না। আমরা বড় সংঘাত চাই না।
রবিবার ইসরায়েলের দুই সিনিয়র মন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা খুব দ্রুত হবে না এবং একা হামলা চালাবে না।
যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে মধ্যপন্থি মন্ত্রী বেনি গান্তজ বলেছেন, আমরা একটি আঞ্চলিক জোট গঠন করবো এবং আমাদের উপযুক্ত সময়ে ও পন্থায় ইরানকে উপযুক্ত মূল্য দিতে হবে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, ইরানের হুমকির বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত জোট গঠনের সুযোগ রয়েছে ইসরায়েলের সামনে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিকে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে আজ রাতের চেয়ে বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেবো আমরা।
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় সহযোগিতা না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করা হয়েছে। সহযোগিতা করলে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিকে নিশানা করা হবে।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানা গেল
শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার রাতে ওই হামলা চালানো হয়। এই প্রথম তেহরান সরাসরি ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলা চালাল। এ হামলার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার যে শঙ্কা এত দিন করা হচ্ছিল তা হয়তো বাস্তবে রূপ নেবে।
যুক্তরাষ্ট্র ‘দৃঢ়ভাবে’ ইসরায়েলকে সমর্থন করার প্রতিজ্ঞা করেছে। এখন পার্যন্ত হামলার পরিস্থিতি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে, তা নিচে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
♦ ইসরায়েল বলেছে, ইরান প্রায় ৩০০টি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইরাক ও ইয়েমেন থেকেও এসেছে।
♦ ১ এপ্রিল সিরিয়ায় তেহরানের কনস্যুলেটে হামলার পর ইরান প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করে। ইরান হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে। এর জেরেই হামলা চালিয়েছে ইরান।
♦ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশের আগেই ৯৯ শতাংশ ইরানি ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে।
♦ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে। যুক্তরাজ্যও এই অঞ্চলে আরএএফ জেট মোতায়েন করেছে।
♦ এই প্রথম তেহরান সরাসরি ইসরায়েলে আক্রমণ করেছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েল যদি এর জবাব দেয়, তবে ইরান আরো তীব্রভাবে আক্রমণ চালাবে।
সূত্র : বিবিসি
Posted ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh