বাংলাদেশ রিপোর্ট : | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে ঈদ জামাত
নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় এবার সম্পূর্ন ভিন্ন আমেজে অনুষ্ঠিত হলো পবিত্র ঈদুল আজহা। করোনাকালে মুসলমানদেও অন্যতম বৃহত্তম এ ধর্মীয় উৎসব ছিলো সাদামাটা। শুধু উত্তর আমেরিক্ইা নয় বাংলাদেশ সহ গোটা বিশ্বেও মুসলমানদেরকে কঠোর স্বাস্থ্যনীতি মেনে অংশ নিতে হয়েছে ঈদের জামাতে। খোলা মাঠে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণ। ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি, শুভেচ্ছা বিনিময়, দল বেঁধে কোরবানীতে অংশ নেয়া। কিংবা আত্মীয় স্বজন ও বন্ধ-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কোন উদ্যোগ আয়োজন ছিলো না এবারের ঈদে। ঈদের জামাত একাধিক বার অনুষ্ঠিত হয়েছে মসজিদগুলোতে। এতে বজায় রাখতে হয়েছে সামাজিক দূরত্ব ॥ মাস্ক পরিহিত অবস্থায় নিজ জায়নামাজে আদায় করতে হয়েছে নামাজ। মাস্ক পরিহিত থাকায় চেনা যায়নি অনেককে। ঈদেও সকালে বৃষ্টি থাকায় কিছুটা প্রতিকূলতা সামনে নিতে হয়েছে মুসল্লিদেরকে।
এছাড়া এবারের ঈদে বড় ধরণের ব্যতিক্রম ছিলো বেশির ভাগ মসজিদে মহিলা এবং শিশুদেও নামাজের ব্যবস্থা না থাকা। এতে আনন্দেও মাত্রা কমে যায়। নামাজ শেষে কুশলাদি বিনিময়ে তেমন সুযোগ ছিলো না। করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভীতি এখনো মানুষের মানুষের মন থেকে লোপ পায়নি। ফলে এক ধরণের আতঙ্কেও মধ্য দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে হয়েছে সবাইকে। তারপর প্রতিটি মসজিদে ঈদের জামাত ছিলো মুসল্লিতে পরিপূর্ণ। প্রতিটি ঈদেও জামাতে মুসলিম উম্মাহর সুখ-সমৃ;িদ্ধ কামনা কওে বিশেষ মুনাজাত করেন ইমামগণ। খোতবাতেও উঠে আসে ভয়াবহ করোনা মহামারি থেকে বিশ্ববাসীকে পরিত্রাণ দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট আকুতি। ঈদের জামাত শেষে অনেকেই চলে যান কোরবানীর মাংশের জন্য গ্রোসারী , সুপার মার্কেট ও পোলট্রি ফার্মে।
স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় পরিবারে সন্তানদেরকে নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করেছেন মুসলমানরা। অনেকের কাজ ছিলো না আবার যাদের কাজ ছিলো তারা ছুটি নিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়ে ব্যতিক্রমধর্মরীতি এক ঈদ উদযাপিত হয়েছে। মসজিদগুলোতে প্রতিটি জামাতেই বক্তব্য রেখেছেন স্থানীয় জন প্রতিনিধি ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তাবৃন্দ।
আরাফা ইসলামিক সেন্টারে ঈদ জামাত
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার
নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এ এবার ঈদুল আযহার ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের দিন জেএমসি-তে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সাড়ে ৬টায় । এতে ইমামতি করেন জেএমসি’র খতিব ও ইমাম মওলানা মির্জাআবু জাফর বেগ। এক ঘন্টা বিরতিতে সকাল সাড়ে ৭টা, সাড়ে ৮টা, সাড়ে ৯টা এবং সকাল সাড়ে ১০টায় আরো ৪টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন ইমাম শামসে আলী। তৃতীয় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ আকিব চৌধুরী, চতুর্থ জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম এবং পঞ্চম জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা জুনায়েদ আহমেদ। জামাতে মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে গেলে মসজিদ সংলগ্ন ‘জেএমসি ওয়ে’তে খোলা রাস্তার উপরও মুসল্লীরা নামাজে অংশ নেন।
জেএমসি’র ঈদের জামাত চলাকালীন সময়ে নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু ও স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন মসজিদে উপস্থিত হয়ে মুসল্লীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর পরিচালনায় জামাতের পূর্বে বক্তব্য রাখেন সেন্টারটির প্রেসিডেন্ট ডাঃ মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজাফফর। তারা মুসুল্লিদের শুভেচ্ছা জানান এবং করোনাকালে কমিউনিটির যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করেন। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের উন্নয়নে সবাইকে মুক্ত হস্তে অনুদান প্রদানের আহ্বান জানান।
জেএমসি পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতি মেনেই জেএমসি-তে ঈদুল আযহার নামাজের আয়োজন করা হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদুল ফিতরের সময়ের চেয়ে ঈদুল আযহায় একত্রে নামাজ আদায়ের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি মহান আল্লাহতায়ার কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। জেএমসি’র ৫টি ঈদ জামাতে ৪ সহস্রাধিক মুসুল্লি নামাজ আদায় করেন।
মসজিদ আল আরাফা : জ্যামাইকার মসজিদ আল আলাফা (আরাফা ইসলামিক সেন্টার)-এ পবিত্র ঈদুল আযহার ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদ সেন্টারেই প্রথম ঈদের জামাত হয় সকাল ৬টায়। এরপর সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা ও ১০টায় আরো ৪টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতির কারনে এবার এখানে মহিলাদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিলো না। তবে পুরুষ নামাজীদের মধ্যে কে কোন জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করবেন তার জন্য মসজিদ কমিটির কাছ থেকে সিরিয়াল নম্বর সংগ্রহ করতে হয় এবং জায়নামাজ সাথে নিয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে ঈদের নাজাজ আদায় করতে হয়। আরাফা ইসলামিক সেন্টাওে ঈদের জামাতগুলোতে ইমামতি করেন ইমাম শেখ শোয়াইব, মুফতি সাঈদুর রহমান, হাফেজ সাত্তার, হাফেজ রায়ান। ঈদের জামাতের পূর্বে আরাফা ইসলামিক সেন্টারের সেক্রেটারী খন্দকার তারিকুল ইসলামের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন লু, সেন্টারটির প্রেসিডেন্ট শফিক হাসান ও বোর্ড অব ট্রাস্টির কর্মকর্তাগণ। সামাজিক দূরত্ব মেনে ৫টি জামাতে প্রায় ১৫০০ মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন।
মসজিদ মিশন : জ্যামাইকার ‘হাজী ক্যাম্প মসজিদ’ নামে পরিচিত মসজিদ মিশনে পবিত্র ঈদুল আযহার ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় প্রথম জামাত ছাড়াও সকাল ৮টা ও ৯টায় আরো দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এখানে প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের ইমাম হাফেজ রফিকুল ইসলাম। দ্বিতীয় জামাতে ইমামমতি করেন মওলানা মঞ্জুরুল করীম। আর তৃতীয় জামাতে ইমামতি করেন হাফেজ তানভির। এই মসজিদে দ্বিতীয় নামাজের আগে নিউইয়র্কের ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু উপস্থিত হয়ে মুসল্লীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এর আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি এম সাব্বির । মসজিদে মিশনের তিনটি জামাতেই উপস্থিত মুসল্লীদের মাঝে ফ্রি মাস্ক বিতরণ করা হয়।
দারুস সালাম মসজিদ : জ্যামাইকার দারুস সালাম মসজিদে ঈদুল আযহার ৬টি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে সকাল ৭টায়, পৌনে ৮টায়, সাড়ে ৮টায়, সোয়া ৯টায়, ১০টায় এবং সকাল পৌনে ১১টায়। এখানেও সামাজিক দূরত্ব মেনে মুসল্লীরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। জামাত গুলোতে ইমামতি করেন যথাক্রমে-ইমাম মাওলানা মুকিত, মাওলানা নজরুল ই্সলাম, ইমাম আলামিন আরাফাত, মাওলানা কামিল আহমেদ ও মাওলানা সোলেহ আহমেদ। দারুস সালাম মসজিদে জামাতের আগে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু’ এবং মসজিদের প্রেসিডেন্ট হাফেজ মোস্তাক। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মসজিদের সেক্রেটারী লন আহমেদ ও জয়েন্ট সেক্রেটারী বদরুল আলম।
আমেরিকান মুসলিম সেন্টার : জামাইকার আমেরিকান মুসলিম সেন্টারে যথাযথ সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ঈদুল আজহার ৪ টি জামাত আয়োজন করা হয়। ৪ টি জামাতেই এলাকার মুসলিম ভাই বোনেরা শতঃস্ফূর্তর্ অংশগ্রহণ করেন। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের ইমাম আতাউর রহমান, ২য় জামাতের ইমামতি করেন সেন্টার এর ডাইরেক্টর মৌলানা ফয়সল নওয়াজ। ৩য় জামাতের ইমামতি করেন মদিনা মসজিদের সেক্রেটারি মৌলানা হাফেজ জুল কিফিল এবং ৪র্থ জামাতের ইমামতি করেন ইকনা মসজিদের সাবেক ইমাম মৌলানা হাফেজ জাফির আলী। বিশেষ অতিথি ও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার এর ইমাম ও এএমসি চেয়ারম্যান ইমাম আবু জাফর বেগ। বক্তারা ত্যাগের মহিমায় সকলকে উজ্জিবীত হওয়ার আহ্বান করেন। জামাতের পর দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হয়।
আল আমীন জামে মসজিদ : এস্টোরিয়ার আল আমীন জামে মসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টার-এ ঈদুল আযহার ৪টি জামাত অনুষ্ঠিত হয় যথাক্রমে সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা ও ১০টায়। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিধি মেনেই মসজিদের ভিতরে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয় বলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান।
বায়তুল জান্নাহ মুসলিম কমিউনিটি সেন্টার
ব্রুকলীনের বায়তুল জান্নাহ মুসলিম কমিউনিটি সেন্টারে ঈদুল আযহার ৬টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিদ্ধান্ত ছিলো আবহাওয়া ভালো থাকলে মসজিদের সামনে খোলা রাস্তার উপর একটি জামাত হওয়ার। কিন্তু বৃষ্টির কারনেই মসজিদ কর্তৃপক্ষ ৬টি জামাতের ব্যবস্থা করেন। সকাল সাড়ে ৬টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার পর পরবর্তীতে আধা ঘন্টা বিরতি দিয়ে বাকী আরো ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাত ৬টিতে ইমামতি করেন যথাক্রমে অধ্যাপক মাওলানা মহিব্বুর রহমান, হাফেজ মওলানা আশ্রাফ উল্লাহ, হাফেজ মওলানা মাহবুর রহমান, মওলানা দিদারুল আলম, মওলানা শাইখ আজফার ও মুফতি নাঈম আহমেদ।
ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামে মসজিদে তিনটি ঈদ জামাত
ব্রঙ্কসের প্রাচীনতম মসজিদ পার্কচেস্টার জামে মসজিদে ৩১ জুলাই শুক্রবার মসজিদে ৩টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকাল ৮টায়, সকাল ৯ টায় এবং সকাল ১০টায় এসব ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় বিপুল সংখ্যক মুসল্লী জামাত তিনটিতে পৃথকভাবে নামাজ আদায় করেন।
১ম জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের ভারপ্রাপ্ত ইমাম ও খতিব মাওলানা মো: মাসহুদ ইকবাল। দোয়া মুনাজাতে মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভ, করোনামুক্ত পৃথিবী সহ বিশ্ব মানবতার কল্যাণ কামনা করা হয়। ২য় জামাতে ইমামতি করেন হাফিজ আব্দুল মান্নাফ এবং ৩য় জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা নুরুল ইসলাম। দ্বিতীয় জামাতে মসজিদের তৃতীয় তলায় মহিলারা নামাজ আদায় করেন।জামাতের আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পার্কচেস্টার জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমদ চৌধুরী।
ব্রঙ্কসের বাংলাবাজার জামে মসজিদে ৫টি ঈদ জামাত
বিপুল সংখ্যক মুসল্লী স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন বাঙালী অধ্যুষিত ব্রঙ্কসে বাংলাবাজার জামে মসজিদে। শুক্রবার মসজিদে ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদের ভিতরে এবং পার্শবর্তী পার্কিং লটে সকাল ৭:৩০ মিনিটে, সকাল ৮:৩০ মিনিটে, সকাল ৯:১৫ মিনিটে, সকাল ৯:৩০ মিনিটে এবং সকাল ১০:০০ মিনিটে এ সকল ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাবাজার জামে মসজিদে সকাল ৭:৩০ মিনিটে ১ম জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কাশেম ইয়াহইয়া। বাংলাবাজার জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ গিয়াস উদ্দিন সহ করোনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও বিশ্ব মানবতার শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া মুনাজাত করা হয়।
২য় জামাতে ইমামতি, খুৎবা পাঠ ও দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন সিংগেরকাচ আলীয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা এ কে এম আবদুন নুর। ৩য় জামাতে ইমামতি করেন হাফিজ বদরুল আলম, ৪র্থ জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের মোয়াজ্জিন আব্দুল হক এবং ৫ম জামাতে খুৎবা পাঠ করেন মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কাশেম ইয়াহইয়া।
জামাতের আগে বাংলাবাজার জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক লালন আহমেদ মসজিদের সংক্ষিপ্ত কার্যক্রম তুলে ধরে বলেন, সকলের সহযোগিতায় মসজিদটি ঋণ মুক্ত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান মুসল্লীদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদটিকে আরো বৃহৎ পরিসরে গড়ে তোলার জরুরী হয়ে পড়েছে। মসজিদ কমিটি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এজন্য সকলের আর্থিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।
নিউইয়র্ক ঈদগাহ ফেসবুক লাইভস্ট্রিমে ঈদুল আযহার জামাত
জ্যাকসন হাইটসের মোহাম্মদী সেন্টার ও নিউইয়র্ক ঈদগাহ’র পরিচালক ইমাম কাজী কায়্যূম জানান, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জামাতে নামাজের কাতার গঠন ইসলামী শরীয়তে সরাসরি নিষেধাজ্ঞার কারণে নিউইয়র্ক ঈদগাহ এবারও ফেসবুক লাইভস্ট্রিমে ঈদুল আযহার জামাতের ব্যবস্থা করে। শুক্রবার সকাল ৯টায় মোহাম্মদী সেন্টার থেকে সরাসরি ফেসবুক লাইভে সম্প্রচারিত ঈদের জামাতে মুসল্লীরা অংশ নেন। তিনি বলেন, যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে স্বাস্থ্যবিধি পালনের নিয়ম মসজিদের ছফ বা কাতারে প্রয়োগের ক্ষেত্রে ইসলামী শরীয়তের অনুমতি নেই। ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখতে একই সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুসল্লিরা নামাজে না দাঁড়ানো পর্যন্ত নবীজী নামাজ শুরুই করাতেন না। নামাজের আগে জোরে বলে দিতেন, কাতার সোজা করে নাও। কাতারের মাঝখানে কোন ফাঁক রাখা যাবেনা। কাতার ঠিক হলেই কেবল নামাজ সুন্দর ও শুদ্ধ হবে। সেজন্য দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা) নবীজীকে এই ব্যাপারে আপোসহীন দেখার পর নবীজী ও হজরত আবু বাকারের ইন্তেকালের পর মসজিদে একটি ছড়ি নিয়ে যেতেন এবং কেউ কাতারের মাঝখানে একটু খানি ফাঁক রেখেছে দেখলেই ছড়ি দিয়ে মুসল্লির দু’পায়ে বেত্রাঘাত করতেন। সেই ধারাবাহিকতাই চলে আসছে আজ থেকে ১৩’শ ৮৮ বছর আগে থেকে। ইমাম কাজী কায়্যূম বলেন, যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি পালন করতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কারনে শরীয়তের বিধি লংঘিত হয়, তাই নিউইয়র্ক ঈদগাহর সকল মুসল্লী তাদেদর নতুন প্রজন্ম ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শুদ্ধভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঈদুল আদহার ঐতিহাসিক এই নামাজটি আদায় করে দারুণ আত্মতৃপ্তি লাভ করেছেন। এবারের খুতবায় প্রবাসে কুরবানী করা নিয়ে তিনি ব্যাপক আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ঈদের দিন কুরবানী না করতে পারলেও পরের দিন অথবা তার পরের দিন আসর পর্যন্ত কুরবানীর সময় থাকে। ১৩ই জিলহজের আসর পর্যন্ত সবাইকে তাকবীরে তাশরীক চালিয়ে যাবার পরামর্শ প্রদান করেন। ইমাম কাজী কায়্যূম বলেন, যতদিন পর্যন্ত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মসজিদগুলোতে নামাজ শুরু করা যাবেনা, ততদিন ফেসবুক লাইভস্ট্রিমে জুমুমা চলতে থাকবে।
এদিকে জ্যাকসন হাইটসের মোহাম্মদী সেন্টার ও নিউইয়র্ক ঈদগাহ’র পরিচালক ইমাম কাজী কায়্যূম জানান, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জামাতে নামাজের কাতার গঠন ইসলামী শরীয়তে সরাসরি নিষেধাজ্ঞার কারণে নিউইয়র্ক ঈদগাহ এবারও ফেসবুক লাইভস্ট্রিমে ঈদুল আযহার জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। শুক্রবার সকাল ৯টায় মোহাম্মদী সেন্টার থেকে সরাসরি ফেসবুক লাইভে সম্প্রচারিত ঈদের জামাতে মুসল্লীরা অংশ নেন বলে তিনি জানান।
এছাড়াও জ্যামাইকার ইকনা, ব্রুকলীনের বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টার, ওজনপার্কের বায়তুল আমান মসজিদ, জ্যাকসন হাইটসের জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টার, ব্রঙ্কসের পার্কচেষ্টার জামে মসজিদ সহ নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ড, জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, এস্টোরিয়া, উডসাইড, ব্রঙ্কস, ব্রুকলীন, ওজনপার্ক প্রভৃতি এলাকার মসজিদে একাধিক ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে বাংলাদেশী অধ্যুষিত ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জেনিয়া, ওয়াহিও, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোরিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, এরিজোনা সহ প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
Posted ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৭ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh