বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৩
বাংলাদেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সিটিতে জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতের অন্ধকারে একদল সেনা কর্মকর্তা কর্তৃক রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করার ঘটনায় তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি রোধ ও দেশকে গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
এ উপলক্ষে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস, নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনসূহ দোয়া, আলোচনা সভা ও বাঙালি ভোজের আয়োজন করে।
জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’র দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ
নিউইয়র্ক : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ অনুষ্ঠান করেছে জ্যাকসন হাইটস এলাকবাসী। গত ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে বিকেল চারটা থেকে রাত পর্যন্ত চলে দোয়া ও তবারক বিতরণের অনুষ্ঠান। বিপুলসংখ্যক মানুষ দোয়ায় অংশ নেন ও তবারক গ্রহণ করেন। এই সময় আয়োজক সংগঠন জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা আগত মানুষের হাতে খাবার তুলে দেন। অনুষ্ঠান স্থলে বসে খাওয়ার ব্যবস্থাও ছিল।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের যেসব সদস্যকে ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়, তাদের সবার জন্য দোয়া ও মাগফিরাত কামনা এবং অন্যান্য সকলের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল চারটায়। শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর সভাপতি শাকিল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম নমি। তারা দুইজনই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেবিবিএ-এর সাবেক সভাপতি ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শাহনেওয়াজ, জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, শাহ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট শাহ জে চৌধুরী, ব্যবসায়ী নেতা মাহাবুবুর রহমান টুকু, আহ্বায়ক মীর নিজামুল হক, রফিক আহমেদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সহ সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ানসহ আরো বেশ কয়েকজন। অনুষ্ঠানে বক্তারা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্র্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। সেই সাথে বক্তৃতায় বক্তারা ১৫ আগস্টের সেদিনের ভয়াল রাতের কথা তুলে ধরেন। সেদিনের সেই ঘটনা অত্যন্ত হৃদয় বিদায়ক। এই ধরণের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য অতিথিদের পক্ষ থেকে শাকিল মিয়া এবং মোহাম্মদ আলম নমিকে ধন্যবাদ জানান। তারা বেশ কয়েক বছর ধরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। মোহাম্মদ আলম নমি বলেন, আমরা প্রতি বছরই চেষ্টা করছি অনুষ্ঠানের পরিসর আরো বড় করার জন্য। গত বছরের চেয়ে আমরা এবার আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করছি। ভবিষ্যতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে এর চেয়ে বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করার। তিনি বলেন, প্রতি বছর এখানে আমরা এই অনুষ্ঠানে আয়োজন করছি। এবারও করেছি। একটি অনুষ্ঠান করতে গেলে অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। নানা কথা ও সমালোচনা হবেই। এই সমালোচনাকে এড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি ভবিষ্যেত আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করতে পারবো। এরপর অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথির মধ্যে তবরাক বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শাহনেওয়াজ এবং তার সহধর্মিনী রানো নেওয়াজ ও জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার হাতে খাবার তুলে দেন। উল্লেখ্য, এই বছরও সহস্রাধিক মানুষকে তবারক দেয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা। এবার অনুষ্ঠান বিকেলে শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত।
জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’র দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ
অনুষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর সভাপতি সাকিল মিয়া, আহ্বায়ক মীর নিজামুল হক, সদস্য সচিব সোহেল গাজী এবং সাধারণ সম্পাদক মো: আলী নমি, অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মো: এ আজাদ, মিয়া মোঃ দুলাল, আব্দুল মালেক ও আব্দুল হামিদ। পরিচালনায় ছিলেন শাহনেওয়াজ। সদস্য সচিব হাজী এনাম, মোঃ মাহবুবব রহমান এবং ডিউক খান। তত্বাবধানে ছিলেন শা জে চৌধুরী, প্রধান সমন্বয়কারী মইনুল ইসলাম, প্রধান পৃষ্ঠপোষক আসেফ বারী টুটুল, চেয়ারম্যান মামুন মিয়াজী, চেয়ারপারসন বিপ্লব সাহা, কো চেয়ারপারসন সাখাওয়াত বিশ্বাস, পৃষ্ঠপোষক নুরুল আজিম, ফাহাদ সোলায়মান, তারেক হাসান খান, এটর্নী মঈন চৌধুরী, জেড আর চৌধুরী (লিটু) ও আহসান হাবিব।
সহযোগিতায় ছিলেন মইনুল ইসলাম, শাহ জে চৌধুরী, বারী হোম কেয়ার, আশরাফুল আলম খোকন, হাজী এনাম, ডেরা রেস্টুরেন্ট, মেসবাহ আবেদীন, শেখর কৃষ্নান, ডা: ফেরদৌস খন্দকার, রূপসী চাঁদপুর ফাউন্ডেশন, সি কে (অভি), মনসুর চৌধুরী, প্রিমিয়াম সুইটস, মামাস রেস্টুরেন্ট, নরুল আমিন বাবু, নুরুজ্জামান সর্দার, ফরহাদ রেজা, নিলুফা শিরিন, হাসান জিলানী, মোহাম্মদ আলী, মোঃ কে ভূঁইয়া, গোলাম হাসান, রফিকুল ইসলাম , আক্তার ভূঁইয়া, আকতারুল রহমান মামুন, রনি, মো: কামরুজ্জামান, মো: জাহিদ মিয়া, মোঃ নাজের উদ্দিন, সাঈদ খান, রাজু আহমেদ, মফিজুর রহমান, জেবিবিএ, হাসান মাহমুদ সোহেল, মোঃ লুৎফর রহমান চুন্নু, আলমগীর হোসেন, মোঃ আশরাফুল আজিজ, মোঃ জহিরুল ইসলাম, মোঃ আব্দুর রহিম ভূইয়া, মোঃ আবু তাহের, মোঃ আনেয়ার হোসেন (অনু), আহাত ভূঁইয়া, ডা: তৌহিদ শিবলী ও গোল্ডেন এইজ হোম কেয়ার।
উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন হারুন ভূঁইয়া, মোঃ মহিউদ্দিন দেওয়ান, জয়নাল আবেদীন, রাশেদ আহমেদ, ইশতিয়াক রুমি, সিরাজুল হক কামাল, মহসিন ননী, কামরুজ্জামান কামরুল, প্রদীপ সাহা, কাজী শামসুদ্দোহা, মনসুর চৌধুরী, মোঃ পিয়ার, মোল্লা মাসুদ, রফিকুল আহমেদ, ইকতারুজ্জামান রতন, মো: কবির রতন, বিদ্যুৎ দাস, জে মোল্লা সানি, এলিন রহমান, দেবাশীস দাস রব, শফিউদ্দিন মিা, শহাদাৎ হোসেন। সার্বিক সহযোহিতায় ছিলেন, মোঃ মানিক বাবু, শেখ নোমান পলাশ, আসাদুল ইসলাম আসাদ, মো: হাসনাত হাসান, শামস জনি, শাহীন চৌধুরী, আফতাব জনি, আকরাম হোসেন বিপ্লব, নিহার সিদ্দকী, আলম খান আলম, মো: সায়েম উল্লাহ, মুক্তা মিয়া, গোপাল সান্যাল, ওয়াসীম, নান্টু মিয়া, গনেশ কীর্তনীয়, মো: রাদবি, শাহরিয়ার হোসেন, শোভন, কবির চৌধুরী জেসী।
বাংলাদেশ সোসাইটি
নিউইয়র্ক : বাংলাদেশ সোসাইটির উদ্যোগে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ রব মিয়া, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সিনিয়র সহসভাপতি মো: মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সহ সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ মো: নওশেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম ভূঁইয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ডা: শাহনা লিপি, প্রচার ও গণসংযোগ সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, সমাজকল্যাণ মোহাম্মদ টিপু খান, সাহিত্য সম্পাদক ফয়সাল আহমদ, ক্রীড়া ও অ্যাপায়ন সম্পাদক মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, স্কুল ও শিক্ষা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরী সদস্য ফারহানা চৌধুরী, মো: আখতার বাবুল, আবুল বাশার ভূঁইয়া, সুশান্ত দত্ত, মো: সাদী মিন্টু, শাহ মিজানুর রহমান। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলাদেশ দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রস্থ, কনস্যুলেটগুলোর পক্ষ থেকে এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকেও যোগ্য মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালন করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাস
ওয়াশিংটন ডিসি : যথাযোগ্য মর্যাদাড ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে গত ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে নিয়ে রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং কিছুক্ষণ নীরবে দাড়িয়ে থাকেন।
পরে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আবদুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (ইকনোমিক) মোঃ মেহেদি হাসান, মিনিস্টার (কর্মাস) মোঃ সেলিম রেজা, কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মোঃ মনিরুজ্জামান এবং কাউন্সেলর শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি। এ উপলক্ষে পরে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান জাতির পিতা এবং ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের অন্যান্য শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিকামী বাঙালি জনতা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অস্ত্র হাতে তুলে নেন এবং জাতির পিতার নেতৃত্বে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনেন।
১৫ আগস্টকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে এবং তার স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম ও মহান আত্মত্যাগের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতির পিতার বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন।
পরে দূতাবাস আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশী প্রবাসী বিভিন্ন বয়সের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের অন্যান্য শহিদের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফার্স্ট সেক্রেটারী মোঃ আতাউর রহমান। এর আগে বাংলাদেশ দূতাবাস জাতির পিতার ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে ১১ আগস্ট জুমার নামাজের পর ওয়াশিংটন ডিসিস্থ ইসলামিক সেন্টারে এক দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করে।
জাতিসংঘ স্থায়ী মিশন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের সকলের একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহবান জানান। অনুষ্ঠানে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।
বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিতসহ উপস্থিত সকল অতিথিবৃন্দ। রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন দেশ। তাঁর ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে স্বাধীনতা লাভের মাত্র সাড়ে তিন বছরে আমরা বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করেছি এবং বিশ্ব পরিমন্ডলে একটি অত্যন্ত মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি। এমন একজন মহান ও বিশ্বনন্দিত নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি পৃথিবীর ইতিহাসে সেদিন সবচেয়ে বর্বরোচিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত যারা এখনো বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারকার্য সম্পন্ন করে জাতিকে কলংকমুক্ত করতে আসুন আমরা সরকারের প্রতি আমাদের সহযোগিতা আরো বর্ধিত করি।
নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ১৫ আগস্ট যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও ‘জাতীয় শোক দিবস’ পালন করে। এ উপলক্ষে কনস্যুলেটে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে এক উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মিডিয়া ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে উপস্থিত অতিথিবৃন্দসহ কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন । জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয়। জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
কনসাল জেনারেল তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টে সকল শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে এদিনটিকে ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় বলে অভিহিত করেন। বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে সকল গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব প্রদান করেছেন এবং তাঁরই বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে বলে কনসাল জেনারেল মন্তব্য করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ছিলেন অন্যায়, অবিচার ও শোষণের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর বলে তিনি যোগ করেন। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্টনীতির মূল ভিত্তি “সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়” উল্লেখ করে কনসাল জেনারেল বলেন যে,বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র বাঙালীরই নয় বরং তিনি বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতাকামী মানুষের প্রেরণার অবিরাম উৎস ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশর উন্নয়ন, অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অর্জনের উপর কনসাল জেনারেল আলোকপাত করেন। কনসাল জেনারেল সকলকে যার যার অবস্থান থেকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ স্বপ্নের বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান। তিনি সবার মাঝে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, দর্শন ও চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার উপর জোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
আগত অতিথিবৃন্দ জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবময় জীবন, নীতি, সংগ্রাম ও আদর্শের উপর বিশদভাবে আলোচনা করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।
Posted ৫:১৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh