বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
প্রতিবছরের মত এবারও নিউইয়র্ক সিটি, নিউ জার্সির বাংলাদেশী অধ্যুষিত বিভিন্ন সিটি, ওয়াশিংটন ডিসি, ভার্জিনিয়া ও মেরিল্যাণ্ড, ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলেসসহ বিভিন্ন সিটিতে ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হয়েছে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এ উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতর, বাংলাদেশ মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনসমূহ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। এসবের মধ্যে ছিল বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনদানকারীদের রুহের মাগফিরাতের জন্য মোনাজাত, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
গত ২১ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ সদরদপ্তরে টানা ৬ষ্ঠ বারের মতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের এ আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এবারেও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে ইভেন্টটির আয়োজন করে এলসালভাদর, নাইজেরিয়া, পর্তুগাল ও শ্লোভাকিয়া মিশন। এতে সহ-অংশীদারিত্ব করে জাতিসংঘ সচিবালয় ও ইউনেস্কো।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের বিশেষ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি। এছাড়া অনুষ্ঠানটি উপলক্ষে শুভেচ্ছাবাণী প্রদান করেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ও নিউইয়র্ক সিটির মেয়র। অনুষ্ঠানের বক্তাগণ যাতে নিজ নিজ মাতৃভাষায় বক্তব্য রাখতে পারেন সেজন্য এই প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের ছয়টি অফিশিয়াল ভাষায় গোটা অনুষ্ঠানটি অনুবাদের সুব্যবস্থা রাখা হয়।
বাংলাদেশের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেন এর শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সঙ্গীত-‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি..’ একাধিক ভাষায় উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে মরক্কো, এলসালভেদর, শ্লোভাকিয়া ও পর্তুগালের সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও ছিল মনোমুগ্ধকর। এছাড়া জাতিসংঘ সচিবালয় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভাপতির কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তাগণের স্ব স্ব ভাষায় রেকর্ডকৃত বহুভাষিক ভিডিও বার্তা পরিবেশন করা হয় অনুষ্ঠানটিতে। জাতিসংঘ ওয়েব টিভিতে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদগণ এবং ভাষা আন্দোলনের পথিকৃৎ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই জাতির পিতার নেতৃত্বে শুরু হয় বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম যার চুড়ান্ত পরিণতি পায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের মাধ্যমে।
মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মার্তভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশীদের উদ্যোগকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে ইউনেস্কোর মাধ্যমে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এর পূর্ণ স্বীকৃতি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ও অবদানের কথাও স্মরণ করেন তিনি।
শিক্ষাক্ষেত্রে কোভিডের ভয়াবহ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে এবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য -‘প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বহুভাষায় জ্ঞানার্জন: সঙ্কট এবং সম্ভাবনা’ বেছে নেওয়ার জন্য ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি বলেন, “প্রযুক্তি বহুভাষিক শিক্ষার অগ্রগতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। সকল ভাষার প্রাণশক্তি ফিরে পেতে আমাদের সকল অংশীজনকে একসাথে কাজ করতে হবে; কম খরচে ব্যবহার-বান্ধব প্রযুক্তির বিকাশে বিনিয়োগ করতে হবে যা বহুভাষিক শিক্ষাকে সর্বত্র এগিয়ে নিতে পারে”।
স্প্যানিশ ভাষাভাষী ফ্রেন্ডস্ গ্রুপের সভাপতি হিসেবে জাতিসংঘে নিযুক্ত কোস্টারিকার স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ভাষা বিষয়ক এনজিও কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সাধারণ পরিষদের সভাপতিসহ অন্যান্য বক্তাগণ জাতিসংঘে বহুভাষাবাদ ও মাতৃভাষার প্রচারে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার অগ্রগতিতে প্রযুক্তির সম্ভাবনাময় ভূমিকা এবং প্রযুক্তিগত বিভাজন দূর করার কথা তুলে ধরেন তারা। নিজ নিজ মাতৃভাষায় কথা বলতে গিয়ে বক্তাগণ বিলুপ্তির পথে থাকা ভাষার সংরক্ষণের গুরুত্বও তুলে ধরেন। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের আগে, সকালে, যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের আয়োজন করা হয়। নিউইয়র্ক সফররত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী জনাব মো: তাজুল ইসলাম এমপি এবং একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব হেলালুদ্দীন আহমদ এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। মন্ত্রীর নেতৃত্বে সিনিয়র সচিব ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং উপস্থিত মিশনের কর্মকর্তা ও মন্ত্রীর সফরসঙ্গীগণ মিশনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।
জাতিসংঘের সামনে একুশে পালনের ৩১ বছর পূর্তি
বাংলাদেশের একুশের প্রথম প্রহরের সঙ্গে মিল রেখে স্থানীয় সময় রোববার নিউইয়র্ক সময় দুপুর ১টা ১ মিনিটে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। মহান একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙ্গালীর চেতনা মঞ্চের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হয়। এর মধ্য দিয়ে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙ্গালীর চেতনা মঞ্চের আয়োজনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর ৩১ বছর পূর্তি হল।
নিউইয়র্ক সময় দুপুর ১২টার মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রবাসী বাংলাদেশীরা জাতিসংঘের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বাদশার পরিচালনায় অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সম্মিলিত কন্ঠে ভাষার গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। সকলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ‘একুশের গান’ পরিবেশন করলে অমর একুশের শোকাবহ আবহের সৃষ্টি হয়। এরপর এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পাঘ্য অর্পণ কর্মসূচী শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষে দূতালয় প্রধান রফিকুল ইসলাম ও প্রথম সচিব (প্রেস) মো: নুর এলাহি মিনা, নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল এর পক্ষে ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস. এম নাজমুল হাসান। পরে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে একে একে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য করেন এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার ফরাছত আলী, মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, শিতাংশ গুহ, ফাহিম রেজা নূর, সাাখাওয়াত আলী, ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল, সীকৃতি বড়ুয়া, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার ভূইয়া, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ ভূইয়া, আব্দুন নূর বড় ভূইয়া, আবু তালেব চৌধুরী চান্দু, ডা. শাহানারা বেগম, ডা. মিতা চৌধুরী, মনোয়ারা বেগম মনি, জাহানারা বেগম লক্ষী, অধ্যাপক হুসনে আরা, ডা. এনামুল হক, চন্দন দত্ত, শেখ আতিকুল ইসলাম, আশফাক মাশুক, শাহীন আজমল, দুরুদ মিয়া রনেল, আলপনা গুহ, গোপাল সান্যাল, মোশাররফ হোসেন, কবি রওশন হাসান, সবিতা দাস, সাহাদাত হোসেন, নূরে আলম জিকু, কাজী রবি-উজ-জামান, দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী, শাহাবুদ্দিন চৌধুরী লিটন, আশরাফ আলী খান লিটন, ময়জুর লস্কর জুয়েল, আব্দুল কাদির লিপু, মাহবুবুর রহমান অনিক, সারোয়ার প্রমুখ।
শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ কারী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ, বাঙালির চেতনা মঞ্চ, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ইউএসএ, একুশের চেতনা মঞ্চ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যুক্তরাষ্ট্র কমান্ড, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম যুক্তরাষ্ট্র শাখা, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইনক, চট্রগ্রাম সমিতি, পেষাজীবী সমন্বয় পরিষদ ইউএসএ, বঙ্গবন্ধু প্রচারকেন্দ্র সমাজকল্যাণ পরিষদ, সিলেট গণদাবী পরিষদ, বাংলাদেশ ল সোসইটি ইউএসএ, অনুপ দাশ ডান্স একাডেমী, সুচিত্রা সেন মেমোরিয়াল ইউএসএ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান ঐক্য পরিষদ, শেখ রাসেল স্মৃতি পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গমাতা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরাম ইউএসএ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি, যুক্তরাষ্ট্র জাসদ, বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদ, শেখ কামাল স্মৃতি পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ ক্রীড়া চক্র, বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন অব নর্থ আমেরিকা, আবহানী ক্রীড়া চক্র, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ সোসাইটি, ব্রঙ্কস বাংলাদেশ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কস, সিলেট বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এলামনাই এসোসিয়েশন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী স্বেচ্ছা সেবক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ভাষা সৈনিক আবদুস সামাদ পরিবার, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মৃতি পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, জগন্নাথ হল এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাবেক নেতৃবৃন্দ, নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটি, রাজনগর উন্নয়ন সমিতি, প্রবাসী মতলব সমিতি, নতুন বাংলা যুব সংহতি, মীরসরাই সমিতি ইউএসএ। এছাড়াও নিউইয়র্কে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কবি লেখক শিল্পী সাহিত্যিক-সাংবাদিক, ইউনাইটেড নেশন্সের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
হৃদয়ে বাংলাদেশ’র শ্রদ্ধা নিবেদন
নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শনিবার দিবাগত রাতে একুশের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে ব্রঙ্কসের স্টার্লিং-বাংলাবাজারের শহীদ বেদিতে হৃদয়ে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বাংলাদেশ মুরালের সামনে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন হৃদয়ে বাংলাদেশ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সংস্কৃতিকর্মী, সমাজকর্মী, রাজনীতিবিদ বহু প্রবাসী বাংলাদেশী। রাত ১১টার পর থেকেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে জড়ো হতে থাকেন সেখানে। একুশের প্রথম প্রহরে সারিবদ্ধ হয়ে সংগঠনগুলো আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি’ গান গাইতে গাইতে শহীদ বেদিতে পুষ্পাঘ্য অর্পণ করে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি ও বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান লিংকন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ স্টেট কমান্ডের একুশ পালন
বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালবাসায় মহান একুশে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নিউইয়র্ক স্টেট কমান্ড ইউএসএ। ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করে সংগঠনটি। স্টারলিং-বাংলাবাজার এলাকায় এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের দেয়ালে অঙ্কিত বাংলাদেশ ম্যুরাল’র সামনে সংগঠনটি এ আয়োজন করে।
নিউইয়র্ক স্টেট কমান্ডের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুর আহমেদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সংগঠনের পৃষ্টপোষক মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী বশির উদ্দিন, বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম বাদশা, বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান লিংকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা আহমেদ ভূইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ নাসির, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা রঞ্জণ কান্তি রায়, অধ্যাপক মো. ছানা উল্লাহ, বিবিএ সাধারণ সম্পাদক কাজী রবিউজ্জামান, হাফিজ উদ্দিন, চিনু চেয়ারম্যান, মোস্তফা কামাল, মো. শফি উল্লাহ, সুনীল ভৌমিক প্রমুখ। আলোচনা শেষে এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের দেয়ালে অংকিত শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। একুশের গান গেয়ে ফুল হাতে প্রথমে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
Posted ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh