বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিশ্ব মানবজাতির জন্য আদর্শ। তিনি সামাজিক ন্যায় বিচার ও শান্তির দূত। তার আগমনে ভিন্ন ধারা সৃষ্টি হয় পৃথিবীতে। তাই প্রতি বছর মুসলিম মিল্লাত তাকে স্মরণ করে তার জন্মদিন উপলক্ষে। আয়োজন করে মিলাদ, সীরাত ও দোয়া মাহফিলের। পুরো রবিউল আউয়াল মাস জুড়েই মুসলমানরা স্মরণ করেন প্রিয় নবীকে। এরই ধারাবাহিকতায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকাস্থ আমেরিকান মুসলিম সেন্টার আয়োজন করে মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিলের। গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় আয়োজিত মিলাদুন্নবী মাহফিলে বক্তাগণ হযরত, মুহাম্মদ (সাঃ)কে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানব বলে অভিহিত করেন। তারা বলেন, মহানবী (সাঃ) জীবনার্দশ মেনে চলার পাশাপাশি বিশ্ব শান্তির প্রতিষ্ঠায় তার বাণী অন্যান্য ধর্মের মানুষের নিকট পৌছে দিতে হবে।
মিলাদুন্নবী ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন ইমাম হাফেজ মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মুফতি আব্দুল মালেক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও মিলাদুন্নবী মাহফিলের অন্যতম আয়োজক গিয়াস আহমেদ, মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা মঞ্জুরুল করিম। মাহফিলের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আতাউর রহমান।
বক্তাগণ পবিত্র কোরআন-হাদীসের আলোকে মহানবীর জীবনাদর্শ ও তার উম্মতের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন। তারা বলেন, মহানবী (সাঃ)কে অনুসরণ করার মধ্য দিয়েই তার এবং মহান আল্লাহতা’য়ালার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব। বক্তাগণ মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বক্তাগণ বলেন, জীবনের সকল ক্ষেত্রেই রাসুল (সা.)-কে অনুসরণ-অনুকরণ করা আমাদের কর্তব্য। নামাজ-দোয়ায় দরুদ শরীফ পরতে হবে। মুখে মুখে রাসুলের উম্মত দাবী করলে হবে না। তাঁর সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে। জীবনকে সুন্দর করতে আর শান্তিময় জীবনের জন্য আল্লাহ-রাসুল (সা.)-কে ভালবাসতে হবে সমানভাবে। তাঁর ভালবাসা পেতে হলে মহব্বতের সাথে আল্লাহ-রাসুল (সা.)-এর আদেশ-নিষেধ মানতে হবে। ইহকাল-পরকালের জীবন সুন্দর করতে হবে আল কোরআন ও রাসুলের আদর্শ অনুসরণ করে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানতে হবে। মসলিম ও নন মুসলিম সবার জন্যই মহানবীর আদর্শ অনুসরণীয়।
বক্তাগণ বলেন, নবী (সা.) আগমনের জন্য খুশি উদযাপন করা প্রতিটি মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহতালা আল-কোরআনে বলেন, হে রসূল আপনি বলুন- আল্লাহর ‘অনুগ্রহ ও রহমত’ প্রাপ্তিতে মোমিনদের খুশি উদযাপন করা উচিত এবং এটা হবে তাদের অর্জিত সকল কর্মফলের চেয়েও শ্রেষ্ঠ (সূরা ইউনুস)। বক্তারা আল্লাহ তায়ালা অন্যান্য নবী রাসূলদের জন্ম এবং মৃত্যু দিবসে ‘রহমত’ বর্ষণ করেছেন বলে সূরা মরিয়মে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর প্রিয় বান্দার জন্মগ্রহণ আমাদের জন্য রহমত। বক্তাগণ আরো বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্মগ্রহণ শুধু আমাদের জন্যই নয় বরং বিশ্ব জগতসমূহের জন্য রহমত। সেই রহমতের জন্য আমাদের আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা এবং আনন্দ প্রকাশ করা উচিত। সেই কারণেই মুমিন-মুসলমানরাই শুধু নবীর জন্মদিনে আনন্দ প্রকাশ এবং ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করবে। বক্তাগণ প্রতিবছর আমরা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), আশুরা, লাইলাতুল বরাত, আলাতুল কদরসহ অন্যান্য ইসলামী বরকতময় দিন/রাত আমরা পালন করে যাব ইনশাল্লাহ।
বক্তাগণ বলেন, তিনি রহমাতাল্লিল আলামীন অর্থাৎ সমগ্র বিশ্বাসীর জন্য রহমত স্বরূপ। আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে রাসুল (সা.)-এর আদর্শ পৌছে দিতে হবে। বক্তারা নবী করিম (সা:)-কে নিজের চেয়ে বেশী ভালোবাসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দুনিয়ার লালসা দুনিয়াকে যেমন ধ্বংস করে, তেমনী আখেরাতকে ধ্বংস করে। একমাত্র নবীকে (সা.) অনুসরণ, অনুকরণ ও মহব্বত করেই আল্লাহকে সন্তষ্ট করা সম্ভব। বক্তাগণ ইসলামের আলোকে রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিজীবনে বিশ্বনবীর জীবনাদর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান। এশার নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধিও জন্য দোয়া মুনাজাত করা হয়।
Posted ১২:৩২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ অক্টোবর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh