রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন

নিউইয়র্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন

গত ৭ মার্চ সোমবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ইউনেস্কো’র ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ-এর রুহের মাগফিরাত এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় অনুষ্ঠানটিতে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ভিডিও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানটিতে।

আলোচনা পর্বে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ও চ্যার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. মো: মনোয়ার হোসেন। ৭ই মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি জাতিকে বজ্রকঠিন ঐক্যের পতাকাতলে সমবেত করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণে উজ্জ্বীবিত করার মূল মন্ত্র ছিল এই ভাষণ। ইংরেজি বর্ণ ‘সি’ এর চারটি শব্দরূপ অর্থাৎ ‘কনডোলেন্স’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘কমান্ড’ ও ‘কল’ দিয়ে তিনি এই ভাষণটিকে বিশ্লেষণ করে ১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা দিনগুলোতে এর প্রাসঙ্গিকতা ও সার্বজনীন আবেদন তুলে ধরেন। এছাড়া তার বক্তব্যে উঠে আসে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ রেজিস্টারে অন্তভূক্তিকরণ এবং জ্যাকব এফ. ফিল্ড এর ‘উই স্যাল ফাইট অন দ্যা বিছেজ্: দ্যা স্পিসেস দ্যাট ইন্সপায়ার্ড হিস্ট্রোরি’ নামক খ্যতনামা গ্রন্থে এই ভাষণের স্থান লাভসহ এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও মর্যাদার নানা দিক। ৭ই মার্চের ভাষণের মর্মবাণী ধারণ করে কর্মে ও চিন্তায় এর প্রয়োগ এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এটি চির জাগরুক রাখতে উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান ড. মো: মনোয়ার হোসেন। এই ভাষণে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একজন সুযোগ্য রাষ্ট্রনায়কের সুচিন্তিত কৌশলের সবটুকুই প্রতিভাত হয়েছে মর্মে মন্তব্য করেন অন্যান্য আলোচকগণ। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করে।


কনস্যুলেট জেনারেলে ৭ মার্চ’ উদযাপন


নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল আজ যথাযথ মর্যাদায় ’ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২২’ উদযাপন করে। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় এদিনে কনস্যুলেটের আমন্ত্রণে ”ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার” পদকপ্রাপ্ত ড. ডেভিড নেলিন কনস্যুলেট পরিদর্শন করেন এবং পরবর্তীতে এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান জানিয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার প্রাপ্ত বাংলাদেশের বন্ধু ডাঃ ডেভিড নেলিনসহ কনস্যুলেটের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা হতে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র বাণী পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানে ৭ মার্চের বক্তব্যের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং মুজিববর্ষের থীম সঙ্গীতটি পরিবেশিত হয়।

দিবসটির তাৎপর্য ও গুরুত্বের উপর আলোচনা করা হয়। ড. নেলিন বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে বঙ্গবন্ধুর অবদান, স্বল্প সময়ে সংবিধান প্রণয়নে তার ভূমিকা, জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ এবং বাংলায় জাতিসংঘের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রদানসহ স্বাধীন দেশের পূনর্গঠন কার্যক্রমে তার অবদানের কথা বিশদভাবে উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, ড. নেলিন ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ গমনের পর স্বাধীনতা পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ে ৭ বছরের অধিককাল বাংলাদেশে অবস্থান করেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে তার সাক্ষাতের বিষয়টি তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদশের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আতিথেয়তার কথা আনন্দের সাথে স্মৃতিচারণ করেন।


যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলাম এবং ”ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার” পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনকারী বাংলাদেশের বন্ধু লিয়ার লেভিন উক্ত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী যুক্ত হন। রাষ্ট্রদূত মান্যবর জনাব এম শহিদুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে ইউনেস্কো কর্তৃক ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে বিশ্ব-ঐতিহ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন যে ৭ই মার্চের ভাষণ এখন শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্ব সম্পদে পরিণত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালী যুক্ত হন ” লিয়ার লেভিন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে ডকুমেন্টারী তৈরী করে। তিনি তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পটভূমি এবং জনসমাগমে তার প্রভাব এবং স্বাধীনতা অর্জনে ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় শান্তি ও স্থিতিশিলতায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তার কথা তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এ অর্জনের জন্য সকলকে অভিনন্দন জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন যে এ বছরের ৭ই মার্চ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ সমগ্রজাতি একই সময়ে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে। কনসাল জেনারেল কর্তৃক ড. ডেভিড নেলিনকে স্মৃতিসৌধ খচিত স্মারক প্রদানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

Posted ৭:১৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.